শনিবার, ১০ জুন ২০২৩, ০৮:১৮ অপরাহ্ন

অবৈধ গ্যাস-সংযোগ পেলেই মামলা করার নির্দেশ

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ, ২০২৩
  • ২৯ Time View

 

(মোবাইল কোর্ট পরিচালনার পাশাপাশি অবৈধ সংযোগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার বিরুদ্ধে কোর্টে বা থানায় মামলা করতে হবে। মামলা হলে ওয়ায়েন্ট হবে। পুলিশ অবৈধ গ্রাহককে ধরার জন্য সন্ধান করলে সবাই সচেতন হবে। অন্যরাও অবৈধ সংযোগ নিতে আগ্রহী হবে না।)

 

সোহাগ জোয়াদ্দার :

 

দেশে অবৈধ গ্যাস-সংযোগের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে সরকার। এতদিন অবৈধ সংযোগ পেলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে শুধু সংযোগ বিচ্ছিন্ন করত বিতরণ কোম্পানিগুলো। এখন থেকে সংযোগ বিচ্ছিন্নের পাশাপাশি অবৈধভাবে গ্যাস ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে আদালতে বা থানায় মামলা দায়ের করা হবে। একই সঙ্গে অবৈধ সংযোগ প্রদানের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধেও ফৌজদারি মামলা ও বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হবে। অবৈধ গ্যাস-সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ ও অবৈধ পাইপলাইন অপসারণ কার্যক্রম পরিচালনা-সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। গত কয়েক বছর আগে পর্যন্ত ৪ লাখ ৯৩ হাজার ৩৮৯টি গ্যাস-সংযোগ চিহ্নিত করা হয়েছিল।

এগুলোর সিংহভাগই ছিল আবাসিক। অন্যদিকে প্রায় ৮৯৮ কিলোমিটার অবৈধ পাইপলাইন চিহ্নিত করা হয়েছে। এগুলো থেকে শিল্প, বাণিজ্যিক ও আবাসিক খাতের বিভিন্ন স্থাপনায় বেআইনিভাবে গ্যাস ব্যবহৃত হতো। দেড় বছরে নিয়মিত উচ্ছেদ অভিযান শেষে এখনো ৪৫ কিলোমিটারের বেশি অবৈধ পাইপলাইন এবং ৪১ হাজার ৬৪১টি চিহ্নিত অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়নি।

কমিটির এক সদস্য জানান, চিহ্নিত অবৈধ সংযোগের চেয়ে অচিহ্নিত সংযোগ অন্তত তিন গুণ বেশি। এমনকি একটি লাইনে বা স্থানে যে পরিমাণ অবৈধ গ্যাস-সংযোগ রয়েছে বলে বিতরণ কোম্পানিগুলোর প্রকৌশলী-কর্মকর্তারা ধারণা করেন পরে উচ্ছেদ করতে গেলে তার দ্বিগুণও পাওয়া যায়। গ্যাস কোম্পানিগুলোর স্থানীয় অফিসের একশ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ঠিকাদারদের যোগসাজশে এবং স্থানীয় রাজনীতিক ও প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় অবৈধ গ্যাস ব্যবহারের নেটওয়ার্ক অনেক বেড়ে গেছে। এটি এখনো বড় হচ্ছে। দেশে ছয়টি কোম্পানি গ্যাস বিতরণ করে।

এগুলো হলো- তিতাস, বাখরাবাদ, কর্ণফুলী, জালালাবাদ, সুন্দরবন এবং পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানি। সম্প্রতি কোম্পানিগুলোর শীর্ষ কর্তাদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত অবৈধ গ্যাস-সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ কমিটির সভায় জ্বালানি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব বলেন, অবৈধ গ্যাস-সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণে বিশেষ করে তিতাস ও বাখরাবাদকে এখনো অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে। দীর্ঘদিন থেকেই ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, ময়মনসিংহ ও গাজীপুরে অবৈধ সংযোগ বেড়েই চলছে। এগুলোর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির লোকজন, প্রভাবশালী ব্যক্তি, ঠিকাদার ও দালালরা জড়িত। দোষীদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা, গ্যাস আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ ও বিভাগীয় মামলা করতে হবে।

অবৈধ গ্যাস-সংযোগের সঙ্গে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনতে হবে। আগের চেয়ে জরিমানার পরিমাণও বাড়াতে হবে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্ম-সচিব জানান, অবৈধ গ্যাস-সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণের ক্ষেত্রে যেসব আইন আছে তা বাস্তবায়নের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোকে উদাসীন মনে হচ্ছে। গ্যাস আইনে সুস্পষ্টভাবে অপরাধের ধরন, করণীয় এবং দণ্ডের বিষয়ে বিস্তারিত বর্ণনা রয়েছে।

সে অনুযায়ী কোনো কোম্পানি ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না। মোবাইল কোর্ট পরিচালনার পাশাপাশি অবৈধ সংযোগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার বিরুদ্ধে কোর্টে বা থানায় মামলা করতে হবে। মামলা হলে ওয়ায়েন্ট হবে। পুলিশ অবৈধ গ্রাহককে ধরার জন্য সন্ধান করলে সবাই সচেতন হবে। অন্যরাও অবৈধ সংযোগ নিতে আগ্রহী হবে না।

তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মোঃ হারুনুর রশীদ মোল্লাহ’র নেতৃত্বে এবং নির্দেশে নতুন আঙ্গিকে তিতাসকে সাজিয়ে বিভিন্ন টিম আকারে তৈরি করে প্রতিদিন অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছে। এ যাবৎকালের অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণে তিতাস বিগত দিনের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করতে সক্ষম হয়েছে এবং রাজস্ব আদায়ে তিতাস বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সততা ও নিষ্ঠার কারণে এবং তার যুগপযোগী নির্দেশনার বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে সবচেয়ে বেশি আদায় করতে সক্ষম হয়েছে।

 

 

 

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

এই সাইটের কোন লেখা কপি পেস্ট করা আইনত দন্ডনীয়