ইনামুল হক সুমন/রুহুল আমিন. অভয়নগর (যশোর) প্রতিনিধি:
অভয়নগরে শ্যমলের ইটের ভাটা-ডুমুরতলা ৩ কিলোমিটার রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরে বেহাল অবস্থায় পরিনত হয়ে একের পর এক ছোট-বড় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ী ফিরতে হচ্ছে দিন মজুর খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষের। রাস্তাটি নওয়াপাড়া নূরবাগ-মনিরামপুরের কালিবাড়ী যাওয়ার প্রধান সড়কের চলিশিয়া শ্যমলের ইটের ভাটা নামক স্থান থেকে ডুমুরতলা মশিহাটি যাতায়াতের একমাত্র রাস্তা। এই রাস্তাটি নওয়াপাড়া পৌরসভা ও চলিশিয়া ইউনিয়নের মধ্যেবর্তী স্থানে অবস্থিত। রাস্তাটি (এলজিইডি¬) এর আওতায় পিচের রাস্তা হলেও পিচ উঠে বড় বড় খানা-খন্দের সৃষ্টি হয়েছে বিভিন্ন জায়গায়। বর্ষা মৌসুমের বৃষ্টির পানি রাস্তার উপর উঠায় এবং রাস্তাটির পাশ্বে দুইটি ইটের ভাটা শ্যমলের ইটের ভাটা ও রুপা ইটের ভাটা’র ইট তৈরী করার প্রধান উপাদান মাটি ক্রয় করে এই রাস্তা দিয়ে ট্রাকে করে নেওয়ার জন্যে রাস্তাটি দ্রুত খারাপ হওয়ার মূল কারন বলে অভিযোগ করেন এলাকাবাসি। পাশাপাশি অভার লোড নিয়ে বিভিন্ন ধরনের ভারী যানবাহন এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করায় পিচের অংশটুকু উঠে বড় বড় খোয়া গুলো তাকিয়ে আছে দুঘর্টনায় কবলিত মানুষের প্রাণ কেড়ে নিতে। চলিশিয়া নতুন বাজার সংলগ্ন ইঞ্জিনচালিত ভ্যান চালক মো. নূরুল মোল্যা বলেন, রাস্তাটি খারাপ হওয়ার জন্যে উপার্জন আগের তুলনায় অনেক কমে গেছে, অন্যদিকে প্রায় ছোট-বড় দুঘর্টনা ঘটার ফলে যা আয় করি তার বেশি গাড়ি সারতে খরচ হয়ে যায়। কোনোদিন খালি হাতে বাড়ি ফিরতে হয়। এই রাস্তাটির পাশ্বে চলিশিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়, আন্ধা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মসজিদ-মন্দির ও খ্রিস্টানদের একটি উপসনালয় রয়েছে। বুইকারা, সরখোলা, চলিশিয়া, বাগদাহ, আন্ধা, বেদভীটা, ডুমুরতলা, মশিহাটি সহ কয়েক গ্রামের মানুষের চলাচলের একটি মাত্র রাস্তা সেটিও আবার অনেক দিন ধরে লক্কড়-ঝক্কড় হয়ে যাওয়ায়। সাধারন মানুষের জন-জীবন বিপজস্থ হয়ে পড়ছে। স্থানীয় সূত্রে যানা গেছে, প্রসূতি কোনো নারীকে অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্য্রে নেওয়ার সময় অনেকে রাস্তায় সন্তান প্রসাব করে দেয়। চলিশিয়া পালপাড়ার পা ভ্যান চালক আনন্দপাল বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে ভ্যান চালায়, যা টাকা উর্পাজন করি তাই দিয়ে আমার সংসার চলে। রাস্তাটি খারাপ হওয়ার জন্যে এখন আর উর্পাজন তেমন হয় না, যা হয় তাই দিয়ে সংসার ঠিক ভাবে ছলে না। নওয়াপাড়া পৌর রিক্য্রা-ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারন সম্পাদক মো. লিটন সরদার বলেন, ডুমুরতলা-নওয়াপাড়া নূরবাগ ৫ কিলোমিটার রাস্তা তার ভাড়া ৫ টাকা তার মধ্যে ৩ কিলোমিটার রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগী। তারপরও আমার দিন মজুর ভাইয়েরা পেটের টানে পরিবার বাঁচাতে জীবনের ঝুকি নিয়ে এই রাস্তা দিয়ে মানুষ ও বিভিন্ন ধরনের মালামাল বহন করে। আমি ভ্যান চালকের ছেলে, ভাই হয়ে সরকারের কাছে বলবো আমাদের প্রানের দাবী এই রাস্তাটি দ্রুত টিক করার জন্যে। ইউনিয়নের দপ্তর সম্পাদক মো. ছবেদালী খাঁ বলেন, আমার বাড়ি চলিশিয়া গ্রামে আমি জানি এই রাস্তাটি কয়েক গ্রামের মানুষের চলাচলের একমাত্র রাস্তা। প্রায় দেখি আমাদের ভ্যান চালক দিনমজুর কোনো ভাই রাস্তার পাশ্বে দুঘর্টনায় আহত হয়ে পড়ে আছে। আমরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করায় এবং বাড়ী নিয়ে যাওয়ার সময় সে কাঁদতে কাঁদতে বলে পরিবার খরচ চলবে কিভাবে ? সান্তনা দেওয়ার ভাষা হারিয়ে ফেলি। আমরা সর্ব স্তরের সাধারন মানুষের পক্ষ থেকে এই রাস্তাটির সংস্কার পূর্বক সমাধন চাই। নাম প্রকাশে অনৈচ্ছুক এক ব্যাক্তি বলেন, রাস্তা খারাপ হওয়ার পর প্রায় একের এক ছোট-বড় দুঘর্টনা ঘটে চলেছে, দুঘর্টনা এ অঞ্চলের মানুষের নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে মাথায় চড়ে বসে আছে। কিছুদিন আগে উপজেলা থেকে বেশ কিছু অফিসাররা এসে রাস্তাটি মেপে নিয়ে গেল, ভাবলাম এবার কাজ হবে কিন্তু এখন দেখি সব কিছু শুভংকরের ফাখি। অভয়নগর উপজেলা প্রকৌশলী মো. কামরুল ইসলাম’র সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি প্রতিবেদকে বলেন, এই রাস্তাটি সর্ম্পাকে আমার কোনো ধারনা নেই। আমি এই রাস্তাটি চিনি না-জানি না এ সর্ম্পাকে কিছু বলতে পারবো না। স্থানীয় এলাকাবাসী সহ সর্ব-স্তরের সাধারন মানুষের একমাত্র প্রানের দাবী সংশ্লিষ্ট রাস্তাটির সংস্কার পূর্বক উক্ত সমস্যাটির সমাধান করার জন্যে।
এই সাইটের কোন লেখা কপি পেস্ট করা আইনত দন্ডনীয়
Leave a Reply