শুক্রবার, ৩১ মার্চ ২০২৩, ০৬:৪৬ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা করলে তার ক্ষতি হবে না: শাজাহান খান আগের মতোই রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আরেকটি গভীর ষড়যন্ত্র হয়েছে: হানিফ হিন্দি সিনেমায় নৈতিকতা-মূল্যবোধের অভাব রয়েছে: কাজল যার আইনি প্যাঁচে অভিযুক্ত হলেন ট্রাম্প শামসুজ্জামানের মুক্তির দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ দেশে খাদ্যের অভাব নেই: শিক্ষামন্ত্রী রাজধানীর উত্তরখানে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে চার প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা রামনা ইউনিয়ন প্রবাসী সংগঠনের ইফতার সামগ্রী বিতরণ কার্যক্রম সৌদি আরবে সাময়িকভাবে ভারত থেকে চিংড়ি আমদানি নিষিদ্ধ অন্য মামলায় শামসুজ্জামানকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

আমি কি পারবো সেই তীব্র একাকীত্ব সহ্য করতে

Reporter Name
  • Update Time : শনিবার, ২৩ মে, ২০২০
  • ৭২ Time View

 

 

 

কুমিল্লা প্রতিনিধিঃ

 

সবকিছু ছেড়ে চলে যাবো একদিন৷ বিদায়টা কঠিন, অনেক কঠিন৷ ইদানিং একে-একে বিদায় নেয়া অনেকগুলো প্রাণের মৃত্যুর কথা শুনে বিভিন্ন মানুষের নির্বিকার ভাব দেখে মাঝে মাঝে বিষ্ময়ের মাঝে হারিয়ে যাই; শীতল শিহরণ বয়ে চলে আমার শরীর জুড়ে।

মৃত্যুকে আমি ভয় করি৷ ভয়হীন এই মানুষগুলো কি মৃত্যুর পরবর্তী জীবন নিয়ে কি খুবই আত্মবিশ্বাসী? নাকি তাদের কাছে সেগুলো মূল্যহীন? জানি না আমি।

জানি, প্রতিটি মানুষের মতো আমাকেও যেতে হবে৷ চলে গেছেন দাদাজান, চলে গেছেন দাদু৷ তারাও একদিন আমার মতো আধো শীতের সকালে হয়ত লেপ মুড়ি দিয়ে শুয়ে থেকে প্রিয়জনের হাতের উষ্ণতা পেতে পছন্দ করতেন৷ সকালে ঘুম থেকে উঠে জানালার পাশে কুসুম রোদে দাদুর স্নিগ্ধ তিলাওয়াত আমার কাছে মধুর চেয়ে মিষ্টি লাগতো৷ একদিন তিনিও চলে গেলেন তার অবধারিত গন্তব্যে৷

এভাবেই চলে গেছেন আমার শ্রদ্ধেয় ও প্রিয় উস্তাদদের কয়েকজন৷ চলে গেছে এক সহপাঠি যে একদিন আমারই মতো শেষ পরীক্ষা দিয়ে ফিরে এসে চিৎকার করে রুমে ঢুকে বন্ধুদের সাথে হাসতে হাসতে আনন্দ করেছিলো৷
জেনেছি সবাইকে সুন্দর কথা আর ভালোবাসা দিয়ে আপন করে নেবার অনন্য যোগ্যতা তাঁর ছিল। প্রাণোচ্ছল, প্রানবন্ত, সুখময় জীবন চলছিল তাদের। কিন্তু একটি মৃত্যু আকস্মিক দাঁড় করিয়ে দিল দু’য়ের মাঝে অলঙ্ঘনীয় অদৃশ্য প্রাচীর।

এমন করেই আখিরাতের পথে চলে গেছেন পরিচিত আরো অনেকের জীবন ইতোমধ্যেই৷ নানা অভিজ্ঞতার, নানা হিসেবের ভয়াবহ সময়গুলো কেমন করে তাদের পার হচ্ছে তা আল্লাহই ভালো জানেন৷

মৃত্যুর ফেরেশতা তার কর্মে খুবই নিপুণভাবে সময়ানুবর্তী৷ তালিকায় নাম এলে তিনি হাজির হন একদম নির্ধারিত সময়ে, নির্ধারিত মূহুর্তে। নির্দ্বিধায় রূহ নিয়ে মানুষের এ দুনিয়ার জীবনকে বিদায় করেন৷

এই আমি চোখ দিয়ে হয়ত এখন দেখছি এই কম্পিউটার-স্ক্রিনে ভাসতে থাকা আমার লেখা বাক্যগুলো, যার একেকটি অক্ষর আমার বুকের গভীর থেকে বেরিয়ে আসা আমার ভালোবাসা ও অনুভূতিগুলোর প্রতিরূপ৷ এমন অনেক ভালোবাসা আর কৃতকর্মের ছাপ রেখে চলেছি দুনিয়ার এখানে, ওখানে৷

অথচ মৃত্যু আসা মাত্রই আমি এর পরিবর্তে দেখতে শুরু করবো ভিন্ন এক জগত৷ এখানে আর আমার চিহ্নও বাকী থাকবে না৷ সবার স্মরণ থেকে হারিয়ে যেতে লাগবে অল্প ক’টা দিন মাত্র!

আমার মাঝে মাঝে মনে হয়, আচ্ছা, যারা চলে যায় তাদের অনুভূতিটা কেমন হয়? যারা শতবর্ষী, শেষ বয়সে মৃত্যুর অপেক্ষায় প্রহর গোনেন, তারা হঠাতই একদিন মৃত্যুর ফেরেশতার দেখা পান৷ রূহটা বেরিয়ে যায় কষ্ট দিয়ে, তীব্র কষ্ট৷ এরপরের সেই যাত্রা, রূহ উর্ধ্বাকাশে উঠতে থাকে এই আসমানে, ঐ আসমানে, শেষে সেই কবরে ফেরত আসে৷ মুনকার নাকীরের ভয়াবহ দর্শন আর প্রশ্নোত্তর পর্ব… পারবো কি? এরপরে কি চারপাশ থেকে আমাকে চেপে ফেলবে? আমি তো শান্তিতে ঘুমিয়েছি সারাটি জীবন৷ আমি কী পারবো কবরের চেপে ধরা সেই কষ্ট সহ্য করতে? আমি খুব একা থাকি নি কখনো৷ কবরে একা থাকতে হবে বছরের পর বছর৷ আমি কি পারবো সেই তীব্র একাকীত্ব সহ্য করতে?

চিন্তা করতে গিয়ে ফিরে আসি৷ পানাহ চাই আল্লাহর কাছে, আমাকে এই নেয়ামতভরা জীবনে যে কষ্টগুলো তিনি দেন নি, সমস্ত সময় যেভাবে সাহায্য করেছেন; আখিরাতেও তিনি আমাকে ও আমাদের বিশ্বাসী ভাইবোনদের যেন সাহায্য করেন৷

জানি আমরা গুণাহগার, অকৃতজ্ঞ, না-শোকর বান্দা৷ কিন্তু যাঁর কাছে সাহায্য চাই, আশ্রয় চাই, তিনি তো সমস্ত ক্ষমতার অধিকারী। তিনি তো ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু৷ তিনি নিশ্চয়ই আমাদের অশ্রুগুলোকে বিফলে দেবেন না এবং আমাদের ক্ষমা করবেন ।

 

 

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

এই সাইটের কোন লেখা কপি পেস্ট করা আইনত দন্ডনীয়