ষষ্ঠ শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তি নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছেন পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার সরকারি ভাঙ্গুড়া ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয় এবং কলেজের অধ্যক্ষ ও উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা।
এই দ্বন্দ্ব আরও বেগবান হয়েছে ভর্তিতে অনিয়ম তুলে ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ দেওয়ায়। ইমরান সরকার নামে ওই অভিযোগকারী এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চলমান শিক্ষাবর্ষে বিধিমোতাবেক ওই প্রতিষ্ঠানে ষষ্ঠ শ্রেণিতে সরাসরি ভর্তি হবে ১২০ জন। পরে সিট খালি থাকা সাপেক্ষে ১ম ও ২য় দুটি অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে ভর্তি করা হবে। সেখানে প্রতি তালিকায় ১২০ জন করে রয়েছে। সরাসরি ভর্তির সুযোগপ্রাপ্তদের ভেতরে ২০ জন ভর্তি না হওয়ায় অধ্যক্ষ অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে খোঁজ নিয়ে ১০ মেধাবীকে ভর্তি করেন। এর পর বাকি ১০ জনের জন্য তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের সুপারিশ সমন্বয়ে ভর্তির চেষ্টা করেন।
অনিয়মের অভিযোগকারী ইমরান সরকার যুগান্তরকে বলেন, আমার কন্যাকে ভর্তির ক্ষেত্রে অধ্যক্ষ (রফিকুল ইসলাম রবি) অনিয়ম করেছেন। ১ম অপেক্ষমাণ তালিকায় ৩৫তম অবস্থানে ছিল লিজা। তাকে ভর্তি না করে সে আত্মীয়তা ও রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত হয়ে তার পরের সিরিয়ালের শিক্ষার্থী ভর্তি করে আমার কন্যার প্রতি অবিচার করেছেন। বিষয়টি সুরাহার জন্য আমি ইউএনও বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
অভিযোগের বিষয়ে সরকারি ভাঙ্গুড়া ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম রবি জানান, যথাযথ নিয়মে নোটিশের মাধ্যমে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। ভর্তিতে কোনো অনিয়ম হয়নি। তবে তিনি না জানার কারণে ভর্তির ক্ষেত্রে অপেক্ষমাণ তালিকার ক্রম অনুসরণ করা হয়নি বলে অভিযোগ করেন।
তিনি আরও বলেন, ইউএনও আমাকে ভর্তির (ষষ্ঠ শ্রেণিতে) জন্য ২২ জনের তালিকা দিয়েছিলেন। কিন্তু তালিকা অনুযায়ী তাদের আমি ভর্তি করতে পারিনি। যদি এ তালিকাটা ইউএনও উপজেলার বড় বড় রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে সমন্বয় করে দিতেন তা হলে বিষয়টি এমন হতো না। ফলে ইউএনও আমার প্রতি ক্ষুব্ধ হয়েছেন।
অভিযোগের ভিত্তিতে ইউএনওর করা তদন্ত কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, রোববার অভিযোগের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে তিন কর্মদিবস সময় দিয়ে নোটিশ করা হবে। এর পর তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
লিখিত অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করে ভাঙ্গুড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদ হাসান খান বলেন, ঘটনার সত্যতা থাকলে সেটি ভর্তি নীতিমালা পরিপন্থী কাজ। বিষয়টি নিয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে তদন্ত সাপেক্ষে তিন কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
তিনি আরও যোগ করেন, অধ্যক্ষ ভর্তির ক্ষেত্রে ভর্তি কমিটিকে অবহিত করেননি এবং এ সংক্রান্ত উপজেলা কমিটির মিটিংয়ে তালিকা নীতিমালা অনুযায়ী অনুমোদিত হয়নি। ফলে এই ভর্তি বাতিল করা হয়েছে এবং এ বিষয়ে তার কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হবে। এর পর যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে ও নীতিমালা অনুযায়ী ভর্তি সম্পন্ন করা হবে।
Leave a Reply