শুক্রবার, ৩১ মার্চ ২০২৩, ০৭:১৫ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা করলে তার ক্ষতি হবে না: শাজাহান খান আগের মতোই রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আরেকটি গভীর ষড়যন্ত্র হয়েছে: হানিফ হিন্দি সিনেমায় নৈতিকতা-মূল্যবোধের অভাব রয়েছে: কাজল যার আইনি প্যাঁচে অভিযুক্ত হলেন ট্রাম্প শামসুজ্জামানের মুক্তির দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ দেশে খাদ্যের অভাব নেই: শিক্ষামন্ত্রী রাজধানীর উত্তরখানে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে চার প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা রামনা ইউনিয়ন প্রবাসী সংগঠনের ইফতার সামগ্রী বিতরণ কার্যক্রম সৌদি আরবে সাময়িকভাবে ভারত থেকে চিংড়ি আমদানি নিষিদ্ধ অন্য মামলায় শামসুজ্জামানকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

ঈদ মৌসুমে টাঙ্গাইলের তাঁত শিল্পে বড় ধস

Reporter Name
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ৭ মে, ২০২০
  • ২৩ Time View

 

 

আ: রশিদ তালুকদার, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি:

করোনা ভাইরাসের প্রভাবে ঐতিহ্যবাহী টাঙ্গাইলের তাঁত শিল্পে বড় রকম ধস নেমেছে। কোটি কোটি টাকার শাড়ী কাপড় বিক্রি বন্ধ হয়ে গেছে। করোনার প্রভাবে বন্ধ হয়ে গেছে হাজার হাজার তাঁতকল। সাধারণ শ্রমিকরা করোনা থেকে সুরক্ষা পেতে কর্মস্থল ছেরে তাদের নিজ নিজ এলাকায় অবস্থান করছেন। ইতিমধ্যে দেশের অন্যতম বৃহৎ ও টাঙ্গাইল শাড়ী বিক্রির অন্যতম “করটিয়া হাট” বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়াও বন্ধ হয়ে গেছে কালিহাতী উপজেলার “জোকার চর হাট”, সদর উপজেলার “বাজিতপুর হাট”। দেলদুয়ার উপজেলার পাথরাইলে শাড়ীর শোরুম গুলোও বন্ধ রয়েছে। সব মিলিয়ে ঈদ মৌসুমে বড় রকম এক ধস নেমেছে তাঁত শিল্পে। এসব স্থান থেকেই সপ্তাহে বিক্রি হতো কোটি কোটি টাকার শাড়ী।

তাঁত বোর্ড নিয়ন্ত্রিত জেলার দুটি বেসিক সেন্টারের সূত্র মতে, জেলায় ১ লাখ ২০৬ জন তাঁত শ্রমিক রয়েছেন। ৪ হাজার ১৫১ জন রয়েছেন ক্ষুদ্র তাঁত মালিক অন্যদিকে শবে বরাতের পর থেকেই টাঙ্গাইলের তাঁত শিল্পে শ্রমিকরা দিন-রাত শাড়ী উৎপাদন কাজে ব্যস্ত থাকত। সারাদেশের শাড়ী ক্রেতারা করটিয়া, বাজিতপুর, ও পাথরাইলের শাড়ীর শোরুমগুলো থেকে শাড়ী ক্রয়ের জন্য ভীর জমাত।

সারা বছর ঋণের বোঝা বয়ে বেড়ানো তাঁত মালিকরা মূলত রমজান মাসেই তাদের উৎপাদিত শাড়ী বিক্রি করে ব্যাংক এনজিওর দেনা পরিশোধ করত। কিন্তু এবার করোনায় যে সংকট তৈরি হয়েছে তাতে করে তাঁত মালিকরা আর ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ছে। বেকার হয়েছে পারে হাজার হাজার শ্রমিক। তাঁত মালিকদের ঘরে অবিক্রীত পড়ে আছে কোটি কোটি টাকার শাড়ী।

এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার তাঁত মালিক মমিনুর রহমান বলেন, আমার মোট ৬৩ টি তাঁত রয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা শ্রমিকরা সেখানে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। করোনার কারণে এখন সব তাঁত বন্ধ হয়ে গেছে। প্রায় ৭০ লাখ টাকার শাড়ী কাপড় আটকা পরে গেছে। চড়া মৌসুমে তাঁত বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমাদের যে ক্ষতি হল সে ক্ষতির জের টানতে হবে আগামী বছর গুলোতে। এছাড়াও দেনা শোধাবার কোন ব্যবস্থাও নেই আমাদের। নেই কোন সরকারের পক্ষ থেকে প্রণোদনা। তাঁত মালিক ও সাধারণ শ্রমিকদের বাঁচাতে সরকারের এগিয়ে আসা ছারা আর কোন উপায় দেখছিনা।

শাড়ী ব্যবসায়ী মোসলেম উদ্দিন জানান, সারাদেশের শপিং মল ও লোকাল মার্কেট গুলো বন্ধ রয়েছে। শাড়ী ক্রয় ও বিক্রির কোন ব্যবস্থা নেই। আর তাই শাড়ী ক্রয় করছিনা। সরকারের উচিৎ সীমিত সময়ের জন্য হলেও শপিংমল গুলো খুলে দেয়া, যাতে ঈদের কেনা-বেচাঁ স্বাভাবিক থাকে। এতে করে তাঁত মালিকরা বাঁচবে। বিশেষত বেকার হয়ে পরা শ্রমিকগুলো কাজের একটি সুযোগ পাবে। তাঁত শিল্প কিছুটা হলেও আবার প্রাণ ফিরে পাবে।

এ ব্যাপারে তাঁত বোর্ড টাঙ্গাইল বেসিক সেন্টারের লিয়াজোঁ অফিসার রবিউল ইসলাম জানান, করোনার প্রভাবে টাঙ্গাইলের তাঁত শিল্পে প্রায় লক্ষাধিক শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছে। ইতিমধ্যে তাঁত বোর্ডের মাধ্যমে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রায় তিন হাজার দুস্থ তাঁতিদের মাঝে ত্রাণ সহায়তা দেয়া হয়েছে।

এমন সময়ে তাঁত মালিকদের জন্য আলাদা কোন সরকারি প্রণোদনা না থাকলেও তাঁত মালিকদের সুবিধার্থে ৫% সার্ভিস চার্জে ঋণ দেয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। নুন্যতম ৩০ হাজার টাকা থেকে ২ লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ কার্যক্রম চালু আছে তাঁতিদের জন্য।

এদিকে সর্বস্তরের তাঁত মালিক ও তাঁতিরা তাঁত শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে তৃণমূল পর্যায়ের তাঁতিদের সাথে কথা বলে সব সমস্যার সমাধান করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

 

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

এই সাইটের কোন লেখা কপি পেস্ট করা আইনত দন্ডনীয়