হেমায়েত উদ্দিন,উজিরপুর প্রতিনিধিঃ বরিশালের উজিরপুরে স্বামীর পরিবার কর্তৃক গৃহবধুর উপর মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন এবং গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়ে হত্যার ঘটনায় অবশেষে আদালতে মামলা। বাদীকে ৩ মে বৃহষ্পতিবার আসামী পক্ষরা মোবাইল ফোনে মামলা তুলে নেয়ার হুমকী দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। হত্যাকারীদের হুমকীর মুখে আতঙ্কে বাদীর পরিবার। হত্যার ঘটনায় নিহতের বোন প্রবাসী লিপি আক্তার বাদী হয়ে ৬ জনকে আসামী করে ১৭ এপ্রিল বরিশাল বিজ্ঞ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ৯৯/২০১৮নং মামলা দায়ের করেন। মামলা ও পরিবার সুত্রে জানা যায় উপজেলার বামরাইল ইউনিয়নের খোলনা গ্রামের মোশারেফ হাওলাদারের ছেলে নজরুল ইসলাম হাওলাদারের সাথে ১১ বছর পূর্বে উপজেলার সীমান্তবর্তী আগৈরঝাড়া উপজেলার ফুলশ্রী গ্রামের আজগর আলী মৃধার মেয়ে বন্যা(২৬) এর সামাজিক ভাবে বিবাহ হয়। তাদের দাম্পত্য জীবনে ২ টি সন্তান রয়েছে। সাংসারিক জীবনে যৌতুকলোভী পাষন্ড স্বামী ও তার পরিবারের সাথে প্রায়ই বিবাদ লেগে থাকত। বন্যা বেগমের সুখের জন্য প্রবাসী বোন লিপি আক্তার ৫ লক্ষ টাকা ধার দিয়েছিল। পাওনা টাকা নিয়ে নজরুলের সাথে প্রায়ই মোবাইল ফোনে কলহের সৃষ্টি হয়। এতে বন্যা বেগম প্রবাসী বোনের পক্ষ অবলম্বন করলে ক্ষিপ্ত হয় স্বামী নজরুল। স্বামী ও শাশুড়ী ফজিলা বেগমের হুকুমে ভাই রফিক হাওলাদার, রবিউল হাওলাদার ও তাদের নিকট আত্মীয় জসিম হাওলাদার, মোশারফ হাওলাদার,লিটন হাওলাদার,তাছলিমা বেগম মিলে পরিকল্পিত ভাবে ২১মার্চ বিকেল ৫টায় গৃহবধুকে স্বামীর বসত ঘরের মধ্যে দরজা বন্ধ করে দিয়ে বন্যা বেগমের উপর অমানুষিক ভাবে নির্যাতন চালায় এবং সিলিন্ডার গ্যাসের চুলা থেকে আগুন এনে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে গৃহবধুর শরীরের ৮০ ভাগ ঝলসে যায়। পরে অভিযুক্তরা দায়সারা মাত্র গৃহবধুকে বরিশাল শেরে-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক অবস্থা বেগতিক দেখে ২২ মার্চ তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বার্ণ ইউনিটে প্রেরণ করেন। তার অবস্থা সম্পূর্নভাব্ েবেগতিক হওয়ায় এবং চিকিৎসা করার মত অবস্থা না থাকায় তাকে রিলিজ দেয়। পরে বাড়ীতে ফেরৎ নিয়ে আসার পথিমধ্যে ২৫ মার্চ সকাল ১০ টায় মারা যায়। এ হত্যার ঘটনা খুঁনিরা আত্মহত্যার অপপ্রচার চালিয়ে ধাপাচাঁপা দেয়ার চেষ্টা করলেও কোন ফলপ্রসু হয়নি। অবশেষে হত্যার ঘটনার ২২ দিন অতিবাহিত হওয়ার পরে নিহতের বোন প্রবাসী লিপি আক্তার উল্লেখ্য অভিযুক্ত ৬ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছে। বাদী লিপি আক্তার আরো জানান, আমার বোনকে হত্যা করে হত্যাকারীরা বোনের জমানো নগদ ৩ লক্ষ টাকা, ৫ভরি স্বর্ণালংকার হাতিয়ে নিয়ে যায়। এমনকি হত্যা ঘটনার পরে মা মুকুল বেগমকে ভয়ভীতি দেখিয়ে মামলা করতে দেয়নি। আমরা খুনীদের বিচারের দাবী জানিয়ে প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
এই সাইটের কোন লেখা কপি পেস্ট করা আইনত দন্ডনীয়
Leave a Reply