(অবৈধ ব্যবসায়ীদের রক্তে রয়েছে ভেজালের নিমিত্তে মানুষকে বিষ খাইয়ে অর্থবিত্তের মালিক হওয়ার দুঃস্বপ্ন। ভেজাল পেলেই শুধু জরিমানা নয়, এদেরকে আইনের আওতায় এনে এদের প্রতিষ্ঠান চিরদিনের জন্য বন্ধ করতে হবে, এমনটাই হওয়া উচিৎ আইন।)
এ,আর, মজিদ শরীফ :
র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন সবসময় ভেজাল বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে আসছে। তাদের স্বচ্ছ অভিযানের কারণে ভেজালকারীরা সবসময় ভয়ের মধ্যে থেকে অবৈধ খাদ্য উৎপাদনকারী কারখানা গুলো চালায় গোপনে। র্যাবের নেতৃত্বে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট নাদির শাহ এবং নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ ইকবাল হাসানের তত্ত্বাবধানে যৌথ ভাবে র্যাব, বিএসটিআই অভিযান পরিচালনা করে।
রাজধানীর উত্তরখান এলাকায় চারটি প্রতিষ্ঠানে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)’র ভ্রাম্যমাণ আদালত। তার মধ্যে দুটি খাবার তৈরী প্রতিষ্ঠান এবং অপর দুটি আয়রন রড/শীট বিক্রয় প্রতিষ্ঠান বলে জানিয়েছে র্যাব। রাতে র্যাব-১, উত্তরার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া অফিসার) নোমান আহমদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। নোমান আহমদ জানান, গত বৃহস্পতিবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-১, উত্তরা একটি দল বেলা ১১ টা থেকে শুরু করে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত উত্তরখান থানার উজামপুর এবং মৈনারটেক এলাকায় পৃথক দুটি স্থানে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় র্যাব ফোর্সেস সদর দপ্তরের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং বিএসটিআই অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হয়।
র্যাবের এ কর্মকর্তা জানান, এসময় অনুমোদন ব্যতীত স্বাস্থ্যবিধি না মেনে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার তৈরী, লাইসেন্স বিহীন মোড়ক জাত, ফিটনেস লাইসেন্স বিহীন ওজন স্কেল পরিমাপ, বিএসটিআই অনুমতি ব্যতীত এবং ওজনে কম দেওয়ার অপরাধে ভ্রাম্যমান আদালত ওজন ও পরিমাপ মানদন্ড আইনে “মেসার্স গ্রীন ৯ কোম্পানী লিমিটেড” এর স্বত্বাধিকারী মোঃ শাহাদত হোসেন (৪৬), থানা- উত্তরখান, ঢাকা’কে ৫০ হাজার টাকা, “আসাদ এগ্রো ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ” এর স্বত্বাধিকারী মোঃ শহর উদ্দিন (৩৮), থানা- উত্তরখান, ঢাকা’কে ৫০ হাজার টাকা, “তামান্না এন্টার প্রাইজ” এর স্বত্বাধিকারী সরকার মোঃ শামীম আহমেদ (৫৩), থানা- উত্তরখান, ঢাকা’কে ৫০ হাজার টাকা, “মা এন্টার প্রাইজ” এর স্বত্বাধিকারী মোঃ দেলোয়ার (৫২), থানা- উত্তরখান, ঢাকা’কে ১০ হাজার টাকাসহ সর্বমোট ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
আরোও বেশ কিছু অবৈধ কারখানায় অভিযান পরিচালনা করার কথা থাকলেও র্যাবের উপস্থিতি জেনে ঐসব অবৈধ কারখানার মালিক পক্ষ ও কর্মচারীরা কারখানা তালা দিয়ে সটকে পড়ে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায়, এসব এলাকায় অভিযান চলাকালে কিছু নাম স্বর্বস্ব কথিত সাংবাদিক পরিচয়ে এবং অবৈধ কারখানার দালালরা দ্রুত অভিযানের সংবাদ ছড়িয়ে দিয়ে অন্যান্য অবৈধ কারখানার মালিকদেরকে সতর্ক করে দেয়। জানা যায়, এসব দালালরা অবৈধ কারখানা থেকে মাসিক মাসোয়ারা পায়। এই ধরনের ফটকা সাংবাদিক ও দালালদের কারণে ভেজালকারীরা র্যাবের অভিযানের হাত থেকে থেকে যায় অধরা। অন্যদিকে পেশাদার সাংবাদিকরা যারা র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে অবৈধ কারখানার গোপন সংবাদ সরবরাহ করে তাদের উপর নেমে আসে হত্যার হুমকি সহ মিথ্যা মামলার ভয়ভীতি।
এ বিষয় নিয়ে হিউম্যান রাইটস অর্গানাইজেশনের পরিচালক জিয়াউল হকের সাথে কথা হলে তিনি জানান, শুধুমাত্র জরিমানা করলে সমাধান হবেনা। এসব অবৈধ ব্যবসায়ীদের রক্তে রয়েছে ভেজালের নিমিত্তে মানুষকে বিষ খাইয়ে অর্থবিত্তের মালিক হওয়ার দুঃস্বপ্ন। ভেজাল পেলেই এদেরকে আইনের আওতায় এনে এদের প্রতিষ্ঠান চিরদিনের জন্য বন্ধ করতে হবে এবং এসব অবৈধ মালিকরা পরবর্তীতে জেল থেকে বের হয়ে পুনরায় যেন অবৈধ ব্যবসা করতে না পারে তাদের উপরে প্রয়োজনে আইন সংশোধন করে নতুন আইন প্রণয়ন করে আজীবনের জন্য নিষেধাজ্ঞা দিয়ে আগামী প্রজন্মকে ভেজাল মুক্ত খাবার পরিবেশনের দিককে উন্মোক্ত করতে হবে। তাহলেই ভেজাল প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।
এই সাইটের কোন লেখা কপি পেস্ট করা আইনত দন্ডনীয়
Leave a Reply