রবিউল আলম রাজু :
মদ নারী তাশ এই তিনেই সর্বনাশ। আর এই সর্বনাশা খেলার রমরমা মেলা এখন উত্তরার বেশ কিছু আবাসিক হোটেলে। সেখানে সাজানো হচ্ছে নারী দেহের পসরা। প্রশাসনের চোখের সামনেই চলছে এমন রমরমা ব্যাবসা। যৌন ব্যবসা বা যৌন কর্মে লিপ্ত হওয়া নতুন কিছু নয়। সমাজের নাকের ডগায় প্রশাসনের চোখে ধুলো দিয়ে যৌন ব্যবসা চলমান দেশের আনাচে কানাচে এখন ছড়িয়ে পড়েছে। তবে উত্তরায় সেক্টরসহ আশপাশের এলাকায় ভিন্নসব কৌশল অবলম্বনে যৌন ব্যবসা পরিচালিত হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরেই। “মামা লাগবো। কলেজ না স্কুলের টাও আছে। এক কথায় কচি মাল আছে”। আবার কেউ বা বলছেন, “মামা কচি মাল আছে, ভেতরে আসেন। নতুবা পরে যোগাযোগ করেন এই নেন-ভিজিটিং কার্ড। আমরা কচি মাল লাগলে বাসায় পাঠিয়ে দেব ।
তবে চার্জ একটু বেশি”। এভাবেই চলছে আবাসিক হোটেলগুলো সামনে থাকা দালালদের বয়ান। বিশেষ করে আব্দুল্লাহপুরের ৫/৬টি আবাসিক হোটেল ,৭,,১৪ সেক্টরের আবাসিক হোটেল ও ফ্লাট মিলিয়ে প্রায় শতাধিক স্পট সহ হোটেল এক্সপ্রেস মল হোটেল এন্ড রিসোর্ট, হোটেল সিঙ্গাপুর ও হাউজ বিল্ডিং হোসেন টাওয়ারের ৪র্থ তালায় হোটেল রয়েল ব্লু তে চলছে যৌন রমরমা দেহ ব্যবসা। বিভিন্ন হোটেলের ম্যানেজারের তথ্য মতে, অনেক সময় কলেজের ছেলে মেয়েরা আনন্দ উল্লাসের জন্য হোটেলে আসে এবং সেই সুত্রপাত থেকে মেয়ে যৌন কর্মীর সন্ধান পাওয়া যায় কখনও বা যৌন কর্মিরাই যোগাযোগ করে থাকে।
এ বিষয়ে যৌন কর্মীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তাদের মধ্যে সিংহ ভাগ শিক্ষার্থী। বাহিরের জেলা থেকে পড়তে আসা মেয়েরা নিজেদের প্রয়োজনিয় চাহিদা ও যুগের সাথে সমতা বজায় রাখা এমনকি দৈহিক ক্ষুধার তাড়নাতেও অনেকেই এই যৌন ব্যবসায় লিপ্ত হয়। সমাজ ও দেশের প্রচলিত আইনের চোখে অপরাধী হলেও সময়ের গ্রোতে যেন ভেসে যাচ্ছে সব অন্যায়। সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তিরা জানাচ্ছেন, ‘বর্তমান প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের কারনে হোটেলের ব্যবসা তেমন ভাল না। তবে কিছু মহলকে উৎকোচ দিয়ে এই যৌন ব্যবসা চলছে বলেও স্বীকারোক্তি তাদের। অনৈতিক এসব কার্যকলাপের প্রতিবাদে ডিসিসি ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আফছার উদ্দিন খান বলেছেন, মানুষের নৈতিক মূল্যবোধের অবক্ষয় রোধে এ ধরনের অসামাজিক কর্মকান্ড বন্ধ হওয়া একান্ত প্রয়োজন।
এ বিষয়ে আমি প্রশাসনকে কঠোর অবস্থান নিতে বলব। পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আবাসিক হোটেল মালিকরা মোটা অঙ্কের অর্থ ব্যয় করে থাকেন। টাকা দিয়েই প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন বিভিন্ন আবাসিক হোটেল মালিকরা। স্থানীয়দের অভিযোগ প্রশাসনের নাকের ডগায় এইসব চললেও প্রশাসন নির্বিকার। মাঝে মধ্যে লোক দেখানো দু’একটি অভিযান চালানো হলেও তা আই ওয়াশ ছাড়া আর কিছুই নয়। যৌনকর্মীরা জানায়, আবাসিক হোটেলের ম্যানেজার ও বয়-বেয়ারা নির্দিষ্ট কমিশনের ভিত্তিতে খদ্দের যোগাড় করে দেয় তাদের। অনেক পেশাদার যৌনকর্মী অবশ্য নিজেরাই কার্ড বিলি করে।
এসব কার্ডে সাধারণত মধ্যস্থতাকারীর মোবাইল নম্বর থাকে। পার্ক, ওভারব্রিজ এলাকায় তাদের তৎপরতা বেশি। আরেক কৌশল-হারবাল চিকিৎসার নামে ভিজিটিং কার্ড বিতরণ। দেখা যায়, আবাসিক হোটেলের সামনে প্রতিদিন অবস্থান করে দালাল চক্র। টার্গেট করা পথচারীকে তারা ডাকে মামা বলে। কাছে এলেই ধরিয়ে দেয় ভিজিটিং কার্ড। বলাবাহুল্য, এমতাবস্থায় পতিতাবৃত্তি বন্ধকল্পে তাদের পুনর্বাসনের বিকল্প নেই। এই বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া না হলে বড় ধরনের সামাজিক অবক্ষয়ের মুখে পড়তে হতে পারে।
এই সাইটের কোন লেখা কপি পেস্ট করা আইনত দন্ডনীয়
Leave a Reply