বৃহস্পতিবার, ০১ জুন ২০২৩, ১১:২৭ পূর্বাহ্ন

উত্তরায় এক্সপ্রেস মল হোটেল এন্ড রিসোর্ট ও সিঙ্গাপুর হোটেল চলে অসাধু থানা পুলিশের ছত্রছায়ায়

Reporter Name
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ২৬ জানুয়ারী, ২০২৩
  • ৪৭ Time View

 

 

 

(উত্তরা জোনের উপ পুলিশ কমিশনারের দিক নির্দেশনা উপেক্ষা করে এক শ্রেণির অসাধু পুলিশ-সাংবাদিক-রাজনৈতিক ব্যক্তিরা এসব অবৈধ অসামাজিক হোটেলের পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে কামাচ্ছে অবৈধ অর্থ। কেউ এগুলো নিয়ে লিখলে তার উপরে আসে খুন করে ফেলার হুমকি।)

 

রবিউল আলম রাজু :

 

বেশ কয়েকবার পত্রিকায় অসামাজিক এই অবৈধ ব্যবসার আবাসিক হোটেল নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের টনক নড়ছেনা দেখে সংবাদের প্রতিবেদক আক্ষেপ প্রকাশ করলে তাকে পত্রিকা অফিস থেকে পরামর্শ দেওয়া হয় এবার সংবাদ প্রকাশ করে সংবাদটি কাটিং করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে শুরু করে উচ্চ পদস্থ প্রশাসনের সব দপ্তরে পাঠালে কর্তৃপক্ষের টনক নড়তে পারে। কারণ এই অবৈধ ব্যবসায়ীরা মাসিক একটি বড় অংকের মোটা টাকা তুলে দেয় সংশ্লিষ্ট থানার অসাধু কর্মকর্তাদের হাতে।

অন্যদিকে বিভিন্ন প্রেসক্লাব এবং চাঁদাবাজ সাংবাদিকরা নিয়মিত পাচ্ছে মাসোয়ারা। তাদের ব্যবসা বন্ধ করবে এমন ক্ষমতা উপ পুলিশ কমিশনারেরও নেই। যদি থাকতো তার দিক নির্দেশনায় যেমন মাদক ব্যবসা অনেকটাই জিরো টলারেন্সে নেমে এসেছে, তেমনি এসব অবৈধ আবাসিক হোটেল ব্যবসায়ীরা লেজ গুটিয়ে পালাতো। এমনটাই বলছিল উত্তরায় বসবাসরত স্থানীয় একজন বাসিন্দা। ছেলে মেয়েদের নিয়ে এমনিতেই টেনশনের অন্ত নেই। তারউপর আবাসিক এলাকায় এসব অসামাজিক কার্যকলাপের আবাসিক হোটেল থাকলে সেখানে মানুষজন ছেলে মেয়ে নিয়ে বসবাস করবে কেমনে। উত্তরার প্রতিটি সেক্টরে প্রায় একটি দু’টি করে রয়েছে আবাসিক হোটেল। এসব প্রায় হোটেলের নেই কোন অনুমতিপত্র।

রাজউক আবাসিক এলাকায় বাণিজ্যিক ব্যবসা করতে নিষেধ করলেও এখন টাকার জোরে সব চলে। এসব হোটেলের কারণেই মাদকের ব্যবসা এবং মাদক সেবন করা অনেকটাই সহজলভ্য হয়েগেছে। এসব হোটেলে সাজানো হচ্ছে নারী দেহের পসরা। স্কুল কলেজের ছেলেরা এখানে এসে নারী লিপ্সায় লিপ্ত হয়ে নিজেদের চরিত্র নষ্ট করছে প্রতিনিয়ত। এসব কারণে দ্রুত জড়াচ্ছে অপরাধের সাথে। প্রশাসনের চোখের সামনেই চলছে এমন রমরমা ব্যাবসা। যৌন ব্যবসা বা যৌন কর্মে লিপ্ত হওয়া নতুন কিছু নয়। তবে উত্তরায় সেক্টরসহ আশপাশের এলাকায় ভিন্নসব কৌশল অবলম্বনে যৌন ব্যবসা পরিচালিত হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরেই। “মামা লাগবো। কলেজ না স্কুলের টাও আছে। এক কথায় কচি মাল আছে”। আবার কেউ বা বলছেন, “মামা কচি মাল আছে, ভেতরে আসেন। নতুবা পরে যোগাযোগ করেন এই নেন-ভিজিটিং কার্ড। আমরা কচি মাল লাগলে বাসায় পাঠিয়ে দেব । তবে চার্জ একটু বেশি”। এভাবেই চলছে আবাসিক হোটেলগুলো সামনে থাকা দালালদের বয়ান।

বিশেষ করে আব্দুল্লাহপুরের ৫/৬টি আবাসিক হোটেল ,৭,,১৪ সেক্টরের আবাসিক হোটেল ও ফ্লাট মিলিয়ে প্রায় শতাধিক স্পট সহ হোটেল এক্সপ্রেস মল হোটেল এন্ড রিসোর্ট, হোটেল সিঙ্গাপুর সবার চেয়ে এগিয়ে আছে। তাদের কাছে কোন সাংবাদিক সংবাদ সংগ্রহের জন্য গেলে তারা স্পষ্ট জানিয়ে দেয় পুলিশ আসে টাকা দেই। সাংবাদিক আসে টাকা দেই, তোদের যা ইচ্ছা লেখ। কেউ আমাদের কিছু করতে পারবেনা। সব শালারা টাকার পাগল। টাকা দিলেই আমাদের চতুরপাশে ঘুরে আর ম্যাও ম্যাও করে। মাঝে মাঝে আবার ফ্রি কাজ করে। হাউজ বিল্ডিং হোসেন টাওয়ারের ৪র্থ তালায় হোটেল রয়েল ব্লুতেও চলছে যৌন রমরমা দেহ ব্যবসা। বিভিন্ন হোটেলের ম্যানেজারের তথ্য মতে, অনেক সময় কলেজের ছেলে মেয়েরা আনন্দ উল্লাসের জন্য হোটেলে আসে এবং সেই সুত্রপাত থেকে মেয়ে যৌন কর্মীর সন্ধান পাওয়া যায় কখনও বা যৌন কর্মিরাই যোগাযোগ করে থাকে। এ বিষয়ে যৌন কর্মীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তাদের মধ্যে সিংহ ভাগ শিক্ষার্থী। বাহিরের জেলা থেকে পড়তে আসা মেয়েরা নিজেদের প্রয়োজনিয় চাহিদা ও যুগের সাথে সমতা বজায় রাখা এমনকি দৈহিক ক্ষুধার তাড়নাতেও অনেকেই এই যৌন ব্যবসায় লিপ্ত হয়। সমাজ ও দেশের প্রচলিত আইনের চোখে অপরাধী হলেও সময়ের স্রোতে যেন ভেসে যাচ্ছে সব অন্যায়।

সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তিরা জানাচ্ছেন, ‘বর্তমান প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের কারনে হোটেলের ব্যবসা তেমন ভাল না। তবে কিছু মহলকে উৎকোচ দিয়ে এই যৌন ব্যবসা চলছে বলেও স্বীকারোক্তি তাদের। অনৈতিক এসব কার্যকলাপের প্রতিবাদে ডিসিসি ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আফছার উদ্দিন খান বলেছেন, মানুষের নৈতিক মূল্যবোধের অবক্ষয় রোধে এ ধরনের অসামাজিক কর্মকান্ড বন্ধ হওয়া একান্ত প্রয়োজন। এ বিষয়ে আমি প্রশাসনকে কঠোর অবস্থান নিতে বলব। পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আবাসিক হোটেল মালিকরা মোটা অঙ্কের অর্থ ব্যয় করে থাকেন। টাকা দিয়েই প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন বিভিন্ন আবাসিক হোটেল মালিকরা।

স্থানীয়দের অভিযোগ প্রশাসনের নাকের ডগায় এইসব চললেও প্রশাসন নির্বিকার। মাঝে মধ্যে লোক দেখানো দু’একটি অভিযান চালানো হলেও তা আই ওয়াশ ছাড়া আর কিছুই নয়। যৌনকর্মীরা জানায়, আবাসিক হোটেলের ম্যানেজার ও বয়-বেয়ারা নির্দিষ্ট কমিশনের ভিত্তিতে খদ্দের যোগাড় করে দেয় তাদের। অনেক পেশাদার যৌনকর্মী অবশ্য নিজেরাই কার্ড বিলি করে। এসব কার্ডে সাধারণত মধ্যস্থতাকারীর মোবাইল নম্বর থাকে। পার্ক, ওভারব্রিজ এলাকায় তাদের তৎপরতা বেশি। আরেক কৌশল-হারবাল চিকিৎসার নামে ভিজিটিং কার্ড বিতরণ।

দেখা যায়, আবাসিক হোটেলের সামনে প্রতিদিন অবস্থান করে দালাল চক্র। টার্গেট করা পথচারীকে তারা ডাকে মামা বলে। কাছে এলেই ধরিয়ে দেয় ভিজিটিং কার্ড। বলাবাহুল্য, এমতাবস্থায় পতিতাবৃত্তি বন্ধকল্পে তাদের পুনর্বাসনের বিকল্প নেই। এই বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া না হলে বড় ধরনের সামাজিক অবক্ষয়ের মুখে পড়তে হতে পারে।

 

 

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

এই সাইটের কোন লেখা কপি পেস্ট করা আইনত দন্ডনীয়