বৃহস্পতিবার, ৩০ মার্চ ২০২৩, ০৪:০৭ পূর্বাহ্ন

উত্তরা আবাসিক এলাকার যানজটের বিষফোঁড়া ক্লিনিক, মার্কেট ও স্কুল

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ১৯ মার্চ, ২০২৩
  • ১৮ Time View

 

 

(রাজউক সহ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং মেয়র যদি গাড়ী পার্কিং এবং যানজট নিরসন এই বিষয় গুলোর উপর নজরদারী দিয়ে অসাধু প্রতিষ্ঠানের উপর আইন প্রয়োগ করে বাধ্যতামূলক গাড়ী পার্কিংয়ের নির্দিষ্ট ব্যবস্থা করে এবং রাজউক প্রতি সেক্টরে ২-৩টি করে পার্কিং ইয়ার্ড বিল্ডিং তৈরি করে, তাহলে যেমন কিছু লোকের কর্মসংস্থান হবে এবং আসবে রাজস্ব আয়, তেমনি নিপাত যাবে উত্তরার যানজট।)

 

মামুন :

 

রাজধানীর পরিকল্পিত আবাসিক এলাকার মধ্যে উত্তরা অন্যতম। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ তাদের রুলস রেগুলেশনস মাস্টার প্লান সিস্টেম করে একটি মডেল পরিকল্পিত এলাকা তৈরি করে প্লট বরাদ্ধের মাধ্যমে এ্যালটমেন্ট দিয়েছে এবং এখনো দিচ্ছে। কোনটা বাণিজ্যিক হবে, কোনটা আবার আবাসিক, সবকিছুর বিষয়ে নির্দিষ্ট আইন থাকলেও আবাসিক এলাকার মধ্যে অনেক প্লট মালিকরা এবং ভাড়াটিয়া মিলে গড়ে তুলেছে অনুমতি বিহীন হাসপাতাল, ক্লিনিক, মার্কেট, কাঁচা বাজার ও স্কুল-কলেজ।

উত্তরায় অবস্থিত ইবনেসিনা হাসপাতাল, ল্যাব এইড, পপুলার, লুবানা হাসপাতাল এন্ড কার্ডিয়াক সেন্টার, শিন শিন হাসপাতাল, আই কেয়ার হাসপাতাল, ক্রিসেন্ট হাসপাতাল, ফরাজী ডেন্টাল সহ উত্তরা আধুনিক হাসপাতাল। অন্যদিকে স্কলাষ্টিকা স্কুল, ৭ নং সেক্টর উত্তরা হাই স্কুল, মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজ, রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ, হাবিবুল্লাহ মডেল হাই স্কুল এন্ড কলেজ, শান্তা মরিয়াম, জমজম মার্কেট, মাস্কট প্লাজা, নর্থ টাওয়ার, রাজলক্ষী, আলাউদ্দিন টাওয়ার, আমির কমপ্লেক্স, কুশল সেন্টার, রাজউক কমার্শিয়াল মার্কেট, এছাড়াও বেশ কিছু সরকারী বেসরকারী প্রতিষ্ঠান রয়েছে উত্তরা আবাসিক এলাকার মধ্যে।

এসব প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব পরিসরে পার্কিংয়ের ব্যবস্থা থাকলেও সেখানে আগতদের গাড়ী রাখতে হলে গুণতে হয় ২-৫শত টাকা। এই কারণে এবং প্রতিষ্ঠানের মালিক পক্ষের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে গাড়ী গুলো বেশির ভাগ সময় রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকে সড়কের এক তৃতীয়াংশ জায়গা দখল করে। যে কারণে প্রধান সড়কটি অবৈধ গাড়ী পার্কিংয়ের কারণে হয়ে যায় সরু। এর মধ্যে থেমে থাকে রিক্সা, ফলে আসা যাওয়া করতে পারেনা গাড়ী, ফলে সৃষ্ট হয় বিশাল যনজটের।

উত্তরা আবাসিক এলাকার যানজটের বিষফোঁড়া এসব প্রতিষ্ঠান গুলোর বিরুদ্ধে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ পার্কিংয়ের বিষয়ে কঠোর না হলে এবং আইনগত ব্যবস্থা না নিলে এই সমস্যা আরো তীব্র থেকে তীব্রতর হবে। যা ট্রাফিক পুলিশ বিভাগ কন্ট্রোল করতে পারবেনা বলে দৈনিক আমার প্রাণের বাংলাদেশকে জানায় হিউম্যান রাইটস অর্গানাইজেশনের পরিচালক জিয়াউল হক। সিস্টেম লসের এই প্রক্রিয়ায় রাজউকের নিয়ম ভেঙ্গে এসব প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠার কারণে এবং এসব প্রতিষ্ঠানে গাড়ী পার্কিংয়ের জায়গাটিকেও প্রতিষ্ঠানের কাজে লাগিয়ে অধিক মুনাফা লুফে নেওয়ার কারণে সব গাড়ী পার্কিং হয় এসব প্রতিষ্ঠানের সামনে থাকা সিটি কর্পোরেশনের রাস্তায়। যানজটের প্যারেশানিতে উত্তরায় বসবাসরত মানুষ হাপিয়ে উঠেছে।

এভাবে প্রধান উত্তরার আবাসিক এলাকার সেক্টর পেরিয়ে যানজটের বিস্তৃতি ঘটেছে আব্দুল্লাহ্পুর থেকে মৈনারটেক, অন্যদিকে উত্তরখান মোড়, দক্ষিণখান মোড় হয়ে এয়ারপোর্ট, হাজী ক্যাম্প, কসাই বাজার সহ সবই এখন যানজটের ডিপোতে পরিণত হয়েছে। আসছে ট্রেন, যাচ্ছে ট্রেন, প্রতি ১৫ মিনিট পর পর একটি করে ট্রেন আসা যাওয়া করে। মাঝে মাঝে ট্রেনে কাটা পড়ে মারা যায় এমন সংবাদও হচ্ছে প্রতিনিয়ত। চলছে অনুমোদনহীন অটোরিক্সা সহ বিভিন্ন গাড়ী।

উত্তরার আবাসিক এলাকা সহ এর আশেপাশে সকল সেক্টর এবং সেক্টরের বাহিরের এলাকার সকল প্রধান সড়ক গুলো এখন যানজটে পরিপূর্ণ থাকে। এসব যানজটের সময় সীমা কয়েক ঘন্টা থেকে শুরু করে ৩-৪ ঘন্টা পর্যন্ত দীর্ঘ হয়। অন্যদিকে আব্দুল্লাহপুর থেকে এয়ারপোর্ট মোড় পর্যন্ত বড় ঢাকা ময়মনসিংহ সড়কটি সবসময় জ্যাম লেগে থাকে। এয়ারপোর্টের সিএনজি ও আব্দুল্লাহপুরের পাম্পে গ্যাস ও তেল নিতে আসা গাড়ীর লাইন থাকে প্রধান সড়ক পর্যন্ত। সবকিছু মিলে উত্তরা এখন যানজটের মডেল শহরে পরিণত হয়েছে।

অফিস থেকে শুরু করে ছাত্র ছাত্রীদের স্কুলে আসা যাওয়া যানজটের কারণে অভিভাবকদের উপরে বাড়তি চাপ, জীবনের ঝুঁকি সবকিছু মিলে এখানে বসবাস করা একটি দুর্বিষহ বিষয় হয়ে উঠেছে। অতিরিক্ত জ্যামের কারণে ধূলার প্রচন্ড বলয় তৈরি হয়ে আকাশে বাতাসে সবসময় উড়ে বেড়ায়। যে কারণে এখানে বসবাস করা প্রায় মানুষ এলার্জি সহ বিভিন্ন ধূলাবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়ে শ্বাসকষ্টে ভুগছে। এর মধ্যে আবার রয়েছে সিটি কর্পোরেশনের মশা নিধনের স্প্রে। রাস্তার ধূলা এবং বিষাক্ত স্প্রে মিলে যে ককটেল তৈরি হয় এর মধ্যে চলাফেরা করা মানুষ দ্রুত অসুস্থ হয়ে পড়ছে।

এ বিষয় নিয়ে উত্তরার বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের দাবী রাজউক সহ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং মেয়র যদি গাড়ী পার্কিং এবং যানজট নিরসন এই বিষয় গুলোর উপর নজরদারী দিয়ে অসাধু প্রতিষ্ঠানের উপর আইন প্রয়োগ করে বাধ্যতামূলক গাড়ী পার্কিংয়ের নির্দিষ্ট ব্যবস্থা করে এবং রাজউক প্রতি সেক্টরে ২-৩টি করে পার্কিং ইয়ার্ড বিল্ডিং তৈরি করে, তাহলে যেমন কিছু লোকের কর্মসংস্থান হবে এবং আসবে রাজস্ব আয়, তেমনি নিপাত যাবে উত্তরার যানজট।

 

 

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

এই সাইটের কোন লেখা কপি পেস্ট করা আইনত দন্ডনীয়