ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধিঃ
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে মার্কেট খোলার দিন থেকেই নানা শ্রেণি পেশার মানুষ ঈদের কেনা কাটা করতে মার্কেটগুলোতে ভিড় করছেন। করোনার ভয় উপেক্ষা করে সকাল ১০টার আগেই মার্কেটমুখী সড়কগুলোতে মানুষের ঢল নামতে শুরু করে।
জানা গেছে, সরকারিভাবে কেনা-কাটার পরিসরকে সীমিত রাখার নির্দেশ দেওয়া হলেও কোনো মার্কেটেই ক্রেতা বা বিক্রেতারা তা মানছেন না। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের পৌর শহরের বিভিন্ন সড়ক এবং মোড়ে মোড়ে অবস্থান নিতে দেখা গেলেও জনতার চাপে তারা অসহায় হয়ে পড়েছেন।
শুধু তৈরি পোশাক কিংবা জুতা-স্যান্ডেলের দোকানই নয় শহরের রড-সিমেন্ট, খুচরা যন্ত্রাংশ, হার্ডওয়ার ও হোটেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের সব দোকানই খুলেছে। তবে অন্যান্য দোকানের তুলনায় ঈদের কেনাকাটার জন্য কাপড়ের দোকানগুলোতে মানুষের ভিড় বেশি লক্ষ্য করা গেছে। সেখানে বেচা-কেনার সময় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা তো দূরের কথা শারীরিক দূরত্বও কেউ মানছেন না।
পছন্দের পোশাক, জুতা-স্যান্ডেল ও কসমেটিকসহ অন্যান্য সামগ্রী কেনার জন্য ক্রেতাদেরকে একেবারে গা ঘেঁষাঘেঁষি, এমনকি ঠেলাঠেলিও করতে দেখা গেছে। অনেকে তাদের শিশু সন্তানদের নিয়েও কেনাকাটা করতে আসছে। হাতে গোনা কয়েকটি বড় দোকানে বিক্রেতাদের মুখে মাস্ক ও হ্যান্ড গ্লোভস্ পড়তে দেখা গেলেও ছোট-খাট দোকানগুলোতে বিক্রেতারা ন্যূনতম কোন সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন না।
মার্কেটে সন্তানকে নিয়ে কেনাকাটা করতে আসা টেপিবাড়ী এলাকার নীনা সুলতানা জানান, তিনি তার ১৬ বছর বয়সী ছেলের জন্য জুতা আর নিজের জন্য একটি থ্রিপিস কিনতে এসেছেন। নিজে মাস্ক পড়লেও ছেলের মুখে কোন মাস্ক ছিল না। এভাবে ঝুঁকি নিয়ে কেনাকাটার কারণ জানতে চাইলে ওই গৃহবধু কিছুটা বিরক্তি নিয়ে বলেন, ‘করোনা নিয়ে আর ভয় দেখাবেন না। যা হবার হবে। এখন একটু কেনা-কাটা করতে দিন।’ তার কথায় দোকানিও সায় দিয়ে বলেন, ‘দেড় মাস পর দোকান খুলেছি। একটু বেচা-কেনা করতে দেন। ভাগ্যে করোনায় মৃত্যু লেখা থাকলে কেউ তা ঠেকাতে পারবে না।’
এদিকে, পৌর শহরের প্রবেশ পথ শিয়ালকোল, আজমতের মোড়, গণেশের মোড় ও পূর্ব ভূঞাপুর কালীভিটায় পুলিশ বেরিকেট দিয়ে সকল ধরণের যানবাহন চলাচল বন্ধ রেখেছে। এতে প্রায় ২ কিলোমিটার পথ পায়ে হেটে আসতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।
ভূঞাপুর বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া মুকুল জানান, করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে তারা দুপুর ১২টা পর্যন্ত দোকানগুলো খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু দোকানিরা ক্ষয়-ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার জন্য সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বেচা-কেনা করতে চান। তিনি বলেন, প্রতিটি দোকানে যাতে সুরক্ষা মেনে বেচা-কেনা করা হয় সেই বিষয়টি আমরা কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। এছাড়াও তিনি আরো জানান, সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে ইতিমধ্যে ৪০ জন সেচ্ছাসেবী কাজ করে যাচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. নাসরীন পারভীন জানান, সরকারিভাবেই প্রত্যেককে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে বলা হয়েছে। এটা হলো ব্যক্তি সচেতনতার বিষয়। কেউ যদি না মানে তাহলে তাকে জোর করে মানানো খুব কঠিন। তিনি বলেন, ‘বিকেল ৪ টার পর যাতে কোন দোকান খোলা না থাকে সে বিষয়টি আমরা কঠোরভাবে দেখবো।
এই সাইটের কোন লেখা কপি পেস্ট করা আইনত দন্ডনীয়
Leave a Reply