নিজস্ব প্রতিবেদক:
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপের ফলে ফণী প্রবল শক্তি সঞ্চয় করে সাইক্লোনে পরিণত হয়েছে। বুধবার (১ মে) বাংলাদেশ সময় দুপুর ১টায় ফণীর অবস্থান ছিল- মোংলা সমুদ্র বন্দর হতে ১০৯৫ কিলোমিটার, চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর থেকে ১,২৩৫ কিলোমিটার এবং কক্সবাজার থেকে ১,১৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণ-পশ্চিমে। এটি আরও ঘণীভূত হয়ে উত্তর/উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। এ কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৪ (চার) নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রে ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের এক টানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৬০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়োহাওয়ার আকারে ১৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে।
সাগর উত্তাল থাকায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে দুই নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে চার নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদফতর। সাগরে মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোতে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
এদিকে ভারতের আবহাওয়া অধিদফতরের খবর, ঘূর্ণিঝড়টি প্রচণ্ড শক্তিশালী (ভেরি সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্ম) রুপ নিয়ে ওড়িশা উপকূলে আঘাত হানতে পারে। স্থলভূমিতে ঢোকার সময় তার গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১৭০ থেকে ২০০ কিলোমিটার।
তারা বলছে, আগামী ১২ ঘণ্টার মধ্যে শক্তি বাড়িয়ে অতি ভারী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে ফণী। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট প্রবল ঘূর্ণিঝড় ফণী আরও শক্তিশালী হয়ে হারিকেনের তীব্রতাসম্পন্ন অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে বলে গতকাল জানানো হয়।
ঘূর্ণিঝড়টি উড়িষ্যা উপকূলে আঘাত করলেও বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূল অঞ্চল তার ছোবল থেকে রেহাই পাবে না।
কবে আঘাত হানতে পারে ফণী? এই প্রশ্নের উত্তরে আবহাওয়া অধিদফতরের এ কর্মকর্তা বলেন, ‘বৃহস্পতিবার (২ মে) আঘাত হানার ক্ষীণ সম্ভাবনা রয়েছে। ঘূর্ণিঝড়টির চরিত্র বিশ্লেষণ করে আমরা ধারণা করছি, শুক্রবারে উপকূলে আছড়ে পড়বে ফণী। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের উপকূলে যদি ফণী আঘাত হানে তবে বড় বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে হবে। উপকূলে আঘাত হেনে এটি দুর্বল হয়ে পড়বে এবং কয়েকদিন ধরে টানা বৃষ্টি ঝরাবে।
আবহাওয়াবিদ রুহুল আমিন মল্লিক জানান, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছে সাগর উত্তাল থাকায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। বঙ্গোপসাগরের গভীরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া উপকূল অঞ্চলের বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার জন্য বলা হয়েছে।
এই সাইটের কোন লেখা কপি পেস্ট করা আইনত দন্ডনীয়
Leave a Reply