হাসনাত রাব্বু, কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি :
এসএসসি পরীক্ষায় কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার একটি পরীক্ষাকেন্দ্রে অবাধে নকল সরবরাহ করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (১১ মে) ১১টার দিকে ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা বিষয়ে (সৃজনশীল) খাস মথুরাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পরীক্ষা কেন্দ্রে অবাধে নকল সরবরাহ করতে দেখা গেছে। বিষয়টি তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছেন কুষ্টিয়া জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার রমজান আলী আকন্দ।
জানা গেছে, পরীক্ষার শুরুর দিন থেকেই খাস মথুরাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পরীক্ষা কেন্দ্রে অবাধে নকল সরবরাহ করা হয়। পরীক্ষা কেন্দ্রের আশেপাশে অবাধে বহিরাগত ব্যক্তিরা ঘোরাফেরা করে। পরীক্ষা শুরু হওয়ার পরপরই পরিক্ষার্থীরা প্রশ্ন জানালা দিয়ে বাইরে সরবরাহ করে। প্রশ্নপত্র দেখে বইয়ের পাতা ছিড়ে বাইরের লোকজন শিক্ষার্থীদের সরবরাহ করে। পরীক্ষার কক্ষগুলোর জানালা দিয়ে বহিরাগত লোকজনের অবাধে নকল সরবরাহ করে। পরীক্ষার্থীদের হাতে প্রশ্নের উত্তর লেখা কাগজ (নকল) পৌঁছে দিচ্ছে। এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ।
সরেজমিনে পরীক্ষা কেন্দ্রের আশপাশে গেলে দেখা যায়, উঠতি বয়সের ছেলেরা কেন্দ্রের পাশে বসে বই থেকে লিখে নকল দেয়াল টপকে কেন্দ্রে ভেতর সরাসরি দিয়ে আসছেন। শুরুর দিন থেকে এমন অবস্থা। তারা কেন্দ্রগুলো কাছাকাছি অবস্থান করছেন এবং বিভিন্ন জায়গায় জটলা করেও থাকতে দেখা গেছে। প্রশাসনের পর্যাপ্ত লোকজন না থাকায় এমনটা হচ্ছে বলে ধারণা অনেকের। প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয়রা জানান, খাস মথুরাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পরীক্ষা কেন্দ্রে অবাধে নকল সরবরাহ চলছে। যেভাবে পরীক্ষা হচ্ছে সেটা খুবই হতাশাজনক বিষয়। কেন্দ্রের আশেপাশে বহিরাগত অভিভাবকরা নকল কক্ষে পৌঁছে দেয়।
প্রশাসনের দায়সারা ভূমিকায় চলছে পরীক্ষা। নকল মুক্ত করতে, পুলিশের সংখ্যা বাড়ানো দরকার। স্থানীয় কবিরুল ইসলাম বলেন, এই বছরে অবাধে নকল সরবরাহ চলছে। এটা সত্যিই দুঃখজনক। আগের বছরে অবাধে নকল ছিলো না। হলের বাইরে থেকে জানালা দিয়ে পরীক্ষার্থীদের অভিভাবক ও বহিরাগতরা নকল সরবরাহ করছে। দৌলতপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সর্দার মোহম্মদ আবু সালেক বলেন, বিষয়টি শুনে খুব খারাপ লাগছে। দায়িত্বে থাকা শিক্ষকদের সাথে কথা বলেছি। তারা অস্বীকার করছে।
তবুও বিষয়টি তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিষয়টি নিশ্চিত করে কুষ্টিয়া জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার রমজান আলী আকন্দ বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। জড়িতদের সবার বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. ওবায়দুল্লাহ্ ও কেন্দ্রে দায়িত্বরত পরিদর্শকদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তারা মোবাইল ফোন রিসিভ করেন নি। কেন্দ্রে থাকা নকল সরবরাহকারী বহিরাগত ও পরিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা এবিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হন নি।
এই সাইটের কোন লেখা কপি পেস্ট করা আইনত দন্ডনীয়
Leave a Reply