বুধবার, ২২ মার্চ ২০২৩, ০৫:৪২ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
টঙ্গীতে জমি আত্মসাৎ এর জন্য নিজের মাথায় আঘাত করে মিথ্যা মামলা সাজালেন ছোট ভাইসহ তিনজনের বিরুদ্ধে বাঞ্ছারামপুরকে ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত ঘোষনা করার লক্ষে ইউএনও এর প্রেস ব্রিফিং মিরপুরে ছিনতাইকারী চক্রের ৫ সদস্য গ্রেফতার : দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার চালের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করলে ব্যবস্থা: খাদ্যমন্ত্রী চেম্বার আদালতেও রাষ্ট্রপতি নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে রিট খারিজ ইলিয়াস-বাবুলের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদনের নতুন দিন ধার্য টাঙ্গাইল-৩ আসন আওয়ামীলীগের গৃহবিবাদের সুযোগ নিতে চায় বিএনপি হজ পালনে থাকছে না বয়সসীমা, শর্ত তুলে নিলো সৌদি আরব কুষ্টিয়ায় পরিবারের সবাইকে রুমে আটকে দুর্ধর্ষ ডাকাতি, ১৫ লাখ টাকার মালামাল লুট কোস্ট গার্ড পশ্চিম জোন কর্তৃক শরণখোলায় বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান

এয়ারপোর্ট এলাকার ফুটপাত দখল করে বছরে শত কোটি টাকা চাঁদা আদায়

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২০
  • ২৭ Time View

 

মামুন খান :

 

হাজার রকম স্বপ্ন নিয়ে বাংলাদেশের সব এলাকা থেকে মানুষ বিদেশে গমন করার জন্য প্রতিদিন জড়ো হয় বাংলাদেশের আর্ন্তজাতিক বিমান বন্দর হযরত শাহ- জালাল বিমান বন্দর এলাকায়। আর্ন্তজাতিক বিমান বন্দর হিসেবে সর্ম্পূর্ণ এলাকাটি থাকা উচিৎ নিঃñিদ্র নিরাপত্তার ভিতরে, সু-সৃঙ্খল শ্রেণি বিন্যাসে সৌন্দর্যে মন্ডিত হয়ে অপূর্ব পসড়া সাজিয়ে প্রথম মানের থাকা উচিৎ দোকান, আবাসিক হোটেল, মানসম্মত খাবারের দোকান, পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরার আওতায় থাকবে বিমান বন্দরের চারপাশের তিন চার কিলোমিটার এলাকা নিয়ে একটি ইনসেনটিভ কেয়ার ইউনিট পরিবেশ থাকা আবশ্যক।

দেশরত্ন মাননীয় প্রধান মন্ত্রী এই পথেই বিদেশ সফরে যায়, বিদেশ থেকে আসে, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধান মন্ত্রী সহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যাক্তিবর্গরাও। ডমেসটিক এবং ইন্টারন্যাশনাল প্যাসেনজারের সুবিধার জন্য পার্কিং এ রাখা ড্রাইভার এবং গাড়ির সু-নির্দিষ্ট কোন তালিকা নেই। সরেজমিনে জরিপ করে দেখা যায় দখল আর বখরাবাজি কবলিত বিমান বন্দর এলাকা ঘিঞ্জি হাটবাজারে পরিনত হয়েছে। বিমান বন্দরের প্রবেশ মুখ থেকে হাজ্বী ক্যাম্প, এ পি বি এন হেড কোয়াটার থেকে বিমান বন্দর রেল স্টেশন পর্যন্ত প্রায় এক বর্গ কিলোমিটার এলাকায় তিল পরিমাণ ঠাই নেই ২৪ ঘন্টাই যেন মনে হয় মেলা চলছে বিমানবন্দর রেল স্টেশনের পার্কিং এমনভাবে দখল করেছে মনে হয় এদের বাপ-দাদার সম্পত্তি।

সেখানকার প্রধান রাস্তা ও অলি-গলি বাস ষ্টান্ড, কার পার্কিং সব কিছুই জবর দখল করে বসানো হয়েছে বাজার। রাস্তার ফুটপাতের প্রতি ইঞ্চি জায়গায় স্থায়ী-অস্থায়ী দোকান-পাটে ঠাশা। বিমান বন্দর রেল স্টেশনের বিভিন্ন পয়েট এখন কয়েকশত দোকান-পাটের জমজমাট মার্কেট। রেল লাইনের কোনায় কোনায় ঝুপড়ি বস্তির দোকান-পাট। সবজি আর মাছের বাজার বসানোর ফলে স্টেশনে বহিরা গমন রাস্তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে।

দুপুর গড়ালে বিমান বন্দর মোড় ক্রেতা-বিক্রেতার ও পথচারীর ভিড়-ভাড়াক্কায় স্বাশরুদ্ধকর হয়ে উঠে। তখন আশকোনা হজ্ব ক্যাম্প রোড ও বিমান বন্দর রেল ষ্টেশন মুখে যান-বাহন চলাচলতো দূরের কথা হেটে চলাচল করাই কঠিন। দেশের প্রধান আর্ন্তজাতিক বিমান বন্দরের মতো স্পর্শকাতর এলাকায় এই জঘন্যতম অবস্থার প্রতিকারও কারার মত কেউ নেই।

সরেজমিনে অনুসন্ধানকালে জানা গেছে দৈনিক তিন থেকে চার লক্ষাধিক টাকার লেনদেন এই সহস্রাধিক দোকান পাটের অবৈধ বাজার জমিয়ে রেখেছে। সেখানে বিমান বন্দরের পুলিশ বক্সে রেলওয়ে পুলিশ এবং আর.এন.বি সহ কতিপয় রাজনৈতিক নেতা এ টাকা ভাগ বাটোয়ারা করে নেন বলে অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। প্রতিদিন গড়ে এয়ারপোর্ট রেল স্টেশন এবং তার আশেপাশে আট-দশটি ছিন্তাইয়ের ঘটনা ঘটছে, অবস্থা দেখে মনে হয় সম্পূর্ণ এলাকাটি সন্ত্রাসীদের অবয়অরন্যে পরিনত হয়েছে।

একদিকে হযরত শাহ-জালাল আর্ন্তজাতিক বিমান বন্দর আবার অন্য দিকে রয়েছে দেশের একমাত্র হজ্ব ক্যাম্প। বিমান বন্দরের প্রবেশ মুখ থেকে হজ্ব ক্যাম্প পর্যন্ত রাস্তার দু-পাশ ঘিরে বাজার বসিয়ে রেলওয়ে বক্স ও পুলিশ বক্সের নামে চলছে চাঁদাবাজির মহাউৎসব। চলছে দখল-বদেখলের প্রতিযোগীতা। জানা যায় রেলওয়ে এলাকায় অবৈধ দোকান পাট থেকে চাঁদার টাকা হাতিয়ে নেন জি. আর. পি. বক্স ও আর.এন.বি’র কিছু অসাধু কর্মকর্তা লাইনম্যানসহ কয়েকজন। তার সহযোগী হিসেবে কাজ করে কয়েকজন কনস্টেবল তারা বিমান বন্দর রেল ষ্টেশন পার্কিং পয়েন্ট ও রেল লাইন ঘেষে গজিয়ে ওঠা কয়েক’শ দোকান পাট থেকে দিন ভিত্তিক চাঁদা তুলে থাকেন।

দোকান পিছু আলাদা আলাদা রেট বসানো হয়েছে। সাধারণ হাকার্স দোকান দৈনিক পাঁচশত টাকা, বেড়া ও ছাউনি যুক্ত দোকান প্রতি সাতশত টাকা, হোটেল রে¯ঁÍরা এক হাজার থেকে বারোশত টাকা, মাছ বিক্রেতা এক একটি দোকান প্রতিদিন এক হাজার থেকে বারোশত টাকা হারে চাঁদা নেয়া হয়। এ ব্যাপারে জাতীয় শ্রমিক লীগ এর একজন নেতার কাছে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে জানান “আপনারা লিখে কি করবেন, এই টাকা অনেক বড় বড় নেতারাও ভাগ পায়”।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করলে রেলওয়ে পুলিশের অফিসার দৈনিক আমার প্রাণের বাংলাদেশের প্রতিবেদককে জানায় “রেল লাইন সীমানায় কোন অবৈধ দোকান পাট নাই বল্লেই চলে” তিনি আরো বলেন আমাদের পেছনে কারা আছে আপনারা জানেন না, তার কথায় এটা স্পষ্ট হয় যে দুর্নীতির ব্যপকতা, জবাব দিহিতার অভাব, উপরোস্থ বড় কর্মকর্তা ম্যানেজে এই দুঃসাহসি কথার উদ্ভব হয়েছে। ফুটপাত দখল রাস্তার বাজার বসানো সব কিছুই ঘটে বিমান বন্দর পুলিশ বক্সের দ্বায়ীত্বভুক্ত এলাকায়।

এদিকে রেল ষ্টেশনে বহিঃগামি রাস্তা দখল করে মাছ বাজার বসিয়েছে প্রভাবশালি একটি চক্র। তারা এক একটি মাছের বাজারের দোকান পজিশন বাবদ এককালীন পঞ্চাশ থেকে সত্তর হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এদিকে ষ্টেশন পার্কিং সহ ফুট ওভার ব্রিজ ঘেষে গড়ে তোলা হয়েছে প্রায় কয়েক শতাধিক দোকান।

এ সকল দোকান পাট দেখবাল করে থাকেন মলম পার্টির সর্দার আক্তার হোসেন। ইদানিং শ্রমিক লীগ এর নেতা পরিচয়ে ব্যানার ফেস্টুন টানিয়ে দিয়ে চাঁদার হার দ্বিগুন করে দিয়েছে, আর তার সহযোগীরা বিমান বন্দর পাবলিক টয়লেটের পশ্চিম পাশ থেকে এ পি বি এন হেড কোয়াটার পর্যন্ত গড়ে তোলা মার্কেট গুলোও চাঁদাবাজি নিজের কবজায় নিয়েছে মলম পার্টির সর্দার আক্তার ও তার সহযোগীরা। সেখানে স্থায়ীভাবে গড়ে তোলা হয়েছে দেড় শতাধিক দোকান, গ্যারেজ সহ বেশ কয়েকটি হোটেল রেস্তোরা।

এই সব দোকান থেকে আক্তার ও তার সহযোগীরা প্রতিদিন প্রতিটি দোকান থেকে আটশত থেকে এক হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করে বলে সু-নির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে। চাঁদা তোলার জন্য লাইন ম্যানদেরকে নির্দিষ্ট ভাবে দোকান ভাগ বাটয়ারা করে দেয়া হয়েছে। রেলস্টেশনের ফলের দোকান থেকে চাঁদা নেয় সেলিম, বিমান বন্দর পুলিশ বক্সের টাকা নেয় মনির। বিমান বন্দর জি আর পি পুলিশ বক্স ও আর.এন.বি ফুটপাত ও মাছ বাজারের বেপরোয়া চাঁদাবাজী করিয়ে থাকে বাবু সহ কয়েকজন যুবক ।

বিমান বন্দর মোড় থেকে হজ্ব ক্যাম্প হয়ে আশকোনা পর্যন্ত পুরোপুরি বাজার। এলাকার বসবাসরত স্কুল ও কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী ও চাকুরী জীবিদের জাতায়াতের ক্ষেত্রে বিড়ম্বনার শেষ নেই। দক্ষিণখানে যেতে চলাচলে শত-শত ব্যাটারী চালিত অটো রিক্সার বড় স্ট্যান্ড এখন হজ্ব ক্যাম্পের সম্মুখে। প্রতিদিন লেগে থাকে ভয়াভহ যানজট। পুলিশ সার্জেন্ট ও কনস্টেবলরা ভুলেও যানজট ছাড়াতে আসেনা। কারন হিসেবে জানা যায় এ সমস্ত অবৈধ গাড়ি থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার টাকা চাঁদা উঠে।

এ সমস্ত ভিড়ে অনায়াসে মিসে যেতে পারে জঙ্গী সহ যে কোন প্রকারের ভয়ংকার আততায়ী। বাংলাদেশের মান উন্নয়নে আর্ন্তজাতিক হযরত শাহ-জালাল বিমান বন্দরের আশপাশ চতুর দিকে চার-পাঁচ কিলোমিটার এলাকায় নিñিদ্র নিরাপত্তা সহ আর্ন্তজাতিক মানের শ্রেণী বিন্যাস করে প্রতি স্তর হওয়া উচিৎ গুনগত মান সম্মত। আরো বেশি সি সি ক্যামেরা সহ সম্পূর্ন এলাকাটি হবে ইনসেনটিভ কেয়ার ইউনিট। এটি এখন সময়ের দাবি। ডিজিটাল বাংলাদেশের আর্ন্তজাতিক সিটি গেইট।

দৈনিক আমার প্রাণের বাংলাদেশে চোখ রাখুন আমাদের অনুসন্ধানী চোখ অনুসন্ধান করছে আগামী সংখ্যায় থাকবে এয়ারপোর্ট পুলিশ বক্স সহ এয়ারপোর্ট থানার চাঁদাবাজির দৌরাত্ম্য।

 

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

এই সাইটের কোন লেখা কপি পেস্ট করা আইনত দন্ডনীয়