ফিরোজ তালুকদার, কলাপাড়া :
পটুয়াখালীর কলাপাড়ার ডালবুগঞ্জ ইউনিয়নের মনষাতলী গ্রমের একমাত্র সংখ্যালঘু পরিবাটি রয়েছেন উচ্ছেদ আতঙ্কে। ষাটোর্ধ রমনী সিকদার, স্ত্রী অরুন বালা সিকদার, একমাত্র ছেলে কলেজ পড়–য়া সঞ্জয় চন্দ্র সিকদার ও মা হারা নাতি আট বছরের আদুরীকে নিয়ে কাটছে বিনিদ্র রজনী। চাষের একমাত্র প্রায় দেড় একর কৃষি জমিতে এখন পর্যন্ত চাষ দিতে পারেননি। অনাবাদী পড়ে আছে। তিনদিন ধরে পুকুরের মাছগুলো জোর করে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। এমনকি একাধিক মামলায় আসামি করা হয়েছে। একটি কেওড়া গাছের গোড়া কাটার মিথ্যা অভিযোগে ওখানকার ফরেস্টার মামলার হুমকি দিচ্ছেন। পান বিক্রি করে জীবিকার যোগান দেয়ার পথও বন্ধের পথে। একমাত্র ছেলের লেখাপড়াও বন্ধের পথে। ১২ দিন পরে ছেলের জন্য তিন শ’ টাকা যোগার করে পাঠিয়েছেন। ডালবুগঞ্জ ইউনিয়নের মণষাতলী গ্রামে বাস এ পরিবারটির। স্থানীয়রা জানান, মনষাতলী গ্রামের একমাত্র হিন্দু পরিবার এটি। তিন বছর আগে বাকি দুই পরিবার চলে গেছেন অন্যত্র। একই এলাকার প্রভাবশালী মৃত ফকু মাস্টারের ছেলে জাকির হোসেন, মোসলেম আলী সিকদারের ছেলে মেনাজ সিকদার, ইউনুচ সিকদারসহ তাদের সাঙ্গপাঙ্গরা ১৪/১৫ জনে লোহার রডসহ লাঠিছোটা নিয়ে রমনী সিকদারের পুকুরের মাছ ধরে নিয়ে যাচ্ছে। অন্তত দুই লাখ টাকার ক্ষতি করা হয়েছে তার। নিতান্ত দরিদ্র এ মানুষটি অনেকটা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। তাঁর অভিযোগ মহিপুর থানায় গিয়েছেন। সেখান থেকে সালিশ করে দেয়ার জন্য দুইপক্ষকে বলা হয়েছে। কিন্তু সুষ্ঠু সমাধান পাননি। সোমবার সকাল থেকে এসবের প্রতিকার চাইতে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে শেষে বিকেলে এ প্রতিনিধির কাছে লিখিত অভিযোগ করেন রমণী সিকদার। তিনি জানান, আট বছর আগে কেনা মনষাতলী মৌজার ওই জমিতে বাড়িঘর করেছেন। পুকুর করে মাছ চাষ করছেন। বাকি জমিতে চাষাবাদ করে আসছেন। এ বছর ওই চক্রটি তার জমি চাষে বাধা দিচ্ছেন। পুকুরের মাছ লুট করে নিচ্ছেন। হুমকি দিচ্ছে বাড়িঘর ছাড়া করার। বর্তমানে এ মানুষটি চরম অসহায়ের মতো দ্বারে দ্বারে ধর্ণা দিচ্ছেন। ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম সিকদার জানান, এ পরিবারটি এখন চরম অসহায়। প্রভাবশালী ওই চক্রটি জোর করে রমনীর পুকুর দখল করে আছে। সালিশ বৈঠকে একবার ফয়সালা করেছেন। কিন্তু জাকির ডাকুয়া তা মানছে না। মহিপুর থানার ওসি মো. মিজানুর রহমান জানান, জমিজমা সংক্রান্ত মামলা থাকায় স্থানীয়রা সালিশ মেনে নেয়। এরপরে কিছু তাকে জানানো হয়নি। স্থানীয় যুবলীগ নেতা শহীদ খান জানান, রমনী সিকদারকে উচ্ছেদ করতে ওই প্রভাবশালী মহলটি এখন উঠেপড়ে লেগেছে। চরম অসহায় হয়ে গেছে এ পরিবারটি। অভিযুক্ত জাকির হোসেন জানান, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পুর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। তিনি পাল্টা অভিযোগ করেন- রমনীর দাবিকৃত জমির মালিকানা মিথ্যা। পুকুর তার নিজের। মাছ চাষ করেছেন নিজে। শুধুমাত্র হয়রাণি করতে এমন ভুয়া অভিযোগ করা হয়েছে। এমনকি থানার মানিত সালিশের সিদ্ধান্তও রমনি সিকদার মানেন না বলে জাকির হোসেন দাবি করেছেন।
এই সাইটের কোন লেখা কপি পেস্ট করা আইনত দন্ডনীয়
Leave a Reply