বৃহস্পতিবার, ৩০ মার্চ ২০২৩, ০৪:৪০ পূর্বাহ্ন

কাপাসিয়ার বাঘিয়া খালেরঘাট থেকে দরদরিয়া রাস্তার বেহালদশা

Reporter Name
  • Update Time : শনিবার, ১৯ জুন, ২০২১
  • ২৮ Time View

 

 

গোলাম সারোয়ার :

গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার তরগাঁও ইউনিয়নের বাঘিয়া খালেরঘাট হতে দরদরিয়া গ্রামে যাওয়ার পানি উন্নয়ন বোর্ডের একমাত্র রাস্তার বেহালদশা। কাঁচা মাটি দিয়ে তৈরী এ রাস্তাটি স্বাধীনতার পর আর উন্নয়নের ছোয়া লাগেনি।

প্রতিবছর পানি উন্নয়ন বোর্ড বর্ষা মৌসুমের এ রাস্তাটির সংস্কারের বরাদ্ধ থাকলেও বরাদ্ধের টাকা কোথায় যায় তা কেউ জানে না। ফলে রাস্তাটির অবস্থা দিনের পর দিন চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। ১৫ ফুট প্রস্থ তিন কিলোমিটার এ রাস্তাটি বেহাল দশা চোখে না দেখলে বিশ্বাসকে ও হাড় মানায়। শীতলক্ষ্যা পূর্ব তীর ঘেষে বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের বাড়ি যাবার একমাত্র প্রধান রাস্তা ছিল এটি।

এই রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ। কোন লোক পায়ে হেটে চলাচলের মত অবস্থা নেই। রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন কয়েকটি গ্রামের ১ /২ হাজার মানুষ যাতায়াত করে থাকে। কাঁচা এই রাস্তাটি বৃষ্টিপাতের কারণে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে কাঁদা মাটিতে একাকার হয়ে গেছে। ঘন বর্ষার সময় জল কাদায় শিশু ও বয়স্কদের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পরে। ফলে স্বাভাবিক ভাবে চলাচলের আর উপায় থাকে না। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা নিয়মিত বিদ্যালয়ে যেতে পারছে না। এলাকাবাসিরা জানান, গত ৩০ বছরে এই ৩ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তায় এক ডালি মাটিও পড়েনি ।

বর্ষাকালে এ রাস্তায় কর্দমাক্ততার কারণে হাঁটাও দায় হয়ে পড়েছে। তবুও কর্দমাক্ত পিচ্ছিল এ রাস্তা দিয়েই প্রতিদিন এই এলাকার মানুষ ঝুঁকি নিয়েই যাতায়াত করছে। কর্দমাক্ত রাস্তা পাড়ি দিয়েই হাট-বাজারে যেতে হয় এলাকাবাসীকে। নির্বাচন এলেই জনপ্রতিনিধিরা এ রাস্তাটি পাকাকরণের প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু নির্বাচনের পরে আর কেউ এর খোঁজ রাখেন না। এলাকাবাসী মো. মনির হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, নেতা আসে নেতা যায় কিন্তু এ রাস্তা পাকা হয় না। বর্ষা আসলে প্রতিবছরই এ রাস্তা দিয়ে চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে পড়ে। হাঁটুসমান কাদামাটি পেরিয়েই এ রাস্তা দিয়ে যেতে হয় তাদের।

এলাকার স্থায়ী বাসিন্দারা জানায়, জনপ্রতিনিধি বদলায় কিন্তু বদলায় না আমাদের এলাকার দুর্ভোগের চিত্র। ফলে অত্র এলাকার চাষীরা উৎপাদিত ফসল বাজারজাত করণ নিয়েও পড়েন বিপাকে এছাড়া কেউ হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে দ্রুতউপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে চিকিৎসা সেবা দেয়া সম্ভব হয় না তাদের। কাপাসিয়া উপজেলা প্রশাসনের নিকট এলাকা বাসির প্রাণের দাবী, শত বছরের পুরোনো এই রাস্তা টি চলাচলের উপযোগী করে দেওয়া হোক। এদিকে এলাকাবাসীর সহযোগীতায় সামান্য মাটি কাজ করলেও বৃষ্টি হলে পূনরায় আবার আগের অবস্থা হয়ে যায়। এখন বৃষ্টি না হওয়ায় কোনো ভাবে পায়ে হেটে চলা যায়। কিন্তু বর্ষাকাল এলে যানবাহন চলাচল দূরের কথা পায়ে হেটে চলা অসম্ভব হয়ে যাবে। তাই ভূক্তভোগী এলাকাবাসী রাস্তাটি সংস্কারের জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট জোড় দাবি জানায়।এলাকাবাসী জানান, দীর্ঘদিন কোনো সংস্কার না করায় এই কাঁচা রাস্তাটি বর্ষা মৌসুমে তা হাবড়ে (গভীর কাদা) পরিণত হওয়ায় একেবারেই চলাচলের অযোগ্য হয়ে যায়। রাস্তার মাটি এঁটেল হওয়ায় এবং ট্রাক্টর ও পাওয়ার টিলার চলাচল করায় হেঁটে চলাচল প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠেছে এই রাস্তা দিয়ে। বর্তমানে এই রাস্তায় স্থানভেদে ২ থেকে ৩ ফুট পর্যন্ত কাদার গভীরতা রয়েছে।

গ্রাসবাসী সিরাজ উদ্দিন সিকদার (হিরন) জানান, বর্ষা মৌসুমে মাত্রাতিরিক্ত কাদার কারণে কোনো যানবাহন এই রাস্তায় চলাচল করে না। তাই কোনো আত্মীয়স্বজনও এই গ্রামে আসতে চায় না। তাদের মতে, গভীর রাতে প্রসববেদনা উঠলে রাস্তায় কাদার কারণে যানবাহন না থাকায় কাঁধে করে নিয়ে যেতে হয় অন্তঃসত্ত্বাকে। এতে গর্ভের শিশুর মৃত্যুও হতে পারে।
রাস্তাটি সংস্কার ও পাকাকরণের ব্যাপারে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ্যাড. মোঃ আমানত হুসেন খান বলেন, যেকোনো কারণেই হোক রাস্তাটি করা সম্ভব হয়নি। তবে তিনি আশা প্রকাশ করেন, চলতি অর্থবছরের মধ্যে সংসদ সদস্যের সহযোগিতায় রাস্তাটি পাকা করা সম্ভব হবে।

 

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

এই সাইটের কোন লেখা কপি পেস্ট করা আইনত দন্ডনীয়