নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
গত দুই দিনে দুই দফায় কালবৈশাখী ঝড়ে রংপুরের পীরগাছা ও কাউনিয়া উপজেলার শত শত বাড়িঘর লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হাজার হাজার গাছপালা। খুঁটি উপড়ে যাওয়ায় বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। ঝড়ে আম, ভুট্টা, গম, ধান, কলাসহ উঠতি ফসলেরও ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৬ মে) রাতে দ্বিতীয় দফায় আঘাত হানে কালবৈশাখী ঝড়, সঙ্গে ছিল শিলাবৃষ্টি। এর আগের দিন সোমবার দিবাগত রাতে প্রথম দফায় শুরু হয়েছিল এই ঝড়ের তাণ্ডব। এতেই ক্ষতির মুখে পড়ে দুই উপজেলার শত শত পরিবার। উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগ প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণে কাজ করছে।
পীরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজমুল হক সুমন জানান, কালবৈশাখীতে উপজেলার পারুল, তাম্বুলপুর এবং ইটাকুমারী ইউনিয়নে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেশি। এছাড়া, তাম্বুলপুর, ছাওলা ও সদর ইউনিয়নের বাড়িঘর লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। এই ছয় উপজেলায় দেড় হাজারেও বেশি বাড়িঘর দুমুড়ে মুচড়ে গেছে। মানুষজনকে খোলা আকাশের নীচে বসবাস করতে হচ্ছে।
ইউএনও নাজমুল হক আরও জানান, বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছি। মানুষজন ভীষণ কষ্টে আছে। তাদের রাতে থাকতে হবে খোলা আকাশের নীচে। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিটি বাড়িঘরের তালিকা করছি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং ক্ষতিগ্রস্তদের স্বজন ও এলাকাবাসী সহযোগিতায় এই দুর্যোগে সবাই মিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার কাজ করছেন।ঝড়ের সময়ে বজ্রপাতে বেশকিছু এলাকায় গরু-ছাগলের মৃত্যু হয়েছে।
পীরগাছার তাম্বুলপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বজলুর রশীদ বলেন, ঝড়ের কারণে শুধু যে বাড়িঘর লণ্ডভণ্ড হয়েছে তা নয়, বোরো, আম, কলা ও ভুট্টার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এসব ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা আমরা পরিদর্শন করেছি। ক্ষতিগ্রস্ত তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে।
এদিকে, কাউনিয়া উপজেলায় কলবৈশাখীতে শহীদবাগ, কুর্শা, টেপামধুপুর, বালাপাড়া, সারাই ও হারাগাছ ইউনিয়ন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে চর এলাকায় ক্ষতির পরিমাণ বেশি।
এ বিষয়ে উপজেলা ওই উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিনা তারিন বলেন, আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের ছবিসহ বাড়িঘরের তালিকা নিচ্ছি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা সঙ্গে থেকে সহযোগিতা করছেন, তাদের নিয়ে তালিকা করা হয়েছে। বুধবার তালিকা যাচাই-বাছাই করে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তের হিসাব দেওয়া যাবে।
রংপুরের জেলা প্রশাসক ড. চিত্রলেখা নাজনীন বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা হওয়া মাত্রই তাদের জন্য সরকারি সকল সযোগিতা দেওয়া হবে। তিনি ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলোর আশেপাশে যারা আছেন তাদের আশ্রয় দিয়ে পাশে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে, রংপুর আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা মোস্তাফিজার রহমান বলেন, দুই রাতে ৬০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এর মধ্যে মঙ্গলবার রাতে ৫৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এ সময় বাতাসের গতিবেগ ছিলো ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৭৩ কিলোমিটার।
এই সাইটের কোন লেখা কপি পেস্ট করা আইনত দন্ডনীয়
Leave a Reply