এনামুল হাসান,কালীগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধি ঃ হত্যা,সন্ত্রাসী কর্মকা-, মারধর ও চুরিসহ একাধিক মামলার আসামি রুবেলকে গ্রেফতার করেছে কালীগঞ্জ থানা পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে কালীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আলালউদ্দিন সন্ত্রাসী রুবেলকে তার নিজ এলাকা বাহাদুরসাদী ইউনিয়নের খলাপাড়া গ্রাম থেকে গ্রেফতার করে। পুলিশ গতকাল শুক্রবার দুপুরে তাকে গাজীপুর জেল হাজতে প্রেরণ করে। সে খলাপাড়া গ্রামের মো. নাজিম উদ্দিনের ছেলে। রুবেল বাহাদুরসাদী ইউনিয়ন সেচ্ছাসেবক লীগের আহবায়ক ছিলেন। তার উগ্র সন্ত্রাসী কর্মকা-ের জন্য তাকে দল থেকে বহিষ্কার করে। তার পর থেকে সে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে।
কালীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এস আই) মো. আলালউদ্দিন জানান, গত বছরের ২০ আগষ্ট বাহাদুরসাদী ইউনিয়ন চেয়ারম্যানকে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর ও রক্তাক্ত জখম করে রুবেল তার দলবল। চেয়ারম্যান শাহাবুদ্দীন আহমেদসহ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ সমন্বয়ে সন্ত্রান ও মাদক বিরোধী কমিটি গঠন করে বিভিন্ন অভিযান পরিচালনা করায় রুবেলসহ তার দলবল তাদের উপর ক্ষিপ্ত হয়। পূর্ব পরিকল্পিতভাবে গত ২০/৮/১৬ ইং তারিখে দুপুরে চেয়ারম্যান তার পরিষদে এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে বসা ছিল। ইউনিয়ন পরিষদের পিছনে পাকা রাস্তার উপর পিস্তল, ছেন, চাপাতি, ছুরিসহ দেশীয় অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে, ককটেল ফাঁটিয়ে রুবেল তার দলবল চৌকিদার আব্দুল্লাহকে মারধর করতে থাকে। তার ডাকচিৎকারে চেয়ারম্যান ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বের হলে রুবেল সহ তার সন্ত্রাসী দলবল চেয়ারম্যান শাহাবুদ্দীন আহমেদের ওপর হামলা চালায়। পরে স্থানীয় লোকজন চেয়ারম্যানকে জখমপ্রাপ্ত অবস্থায় উদ্ধার করে কালীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্রো নিলে তার শরীরিক অবস্থা অবনতি হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে রেফার্ড করেন।
এছাড়া উপজেলার বাহাদুরসাদী ইউনিয়নের খলাপাড়া গ্রামের কলেজ শিক্ষার্থী মো. সাখাওয়াত হোসেন বাবলু নির্মম হত্যাকা-ের সাথে রুবেল জড়িত রয়েছে বলে এসআই মো. আলাল উদ্দিন জানান। গত বছরের ১৭ অক্টোবর তার মৃতদেহ নিহতের বাড়ির দক্ষিন পাশে ড্রেনের কাদা পানিতে পড়ে থাকে। নিহত শাখাওয়াত হোসেন বাবলু নরসিংদী পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটের মেধাবী ছাত্র। সে বাহাদুরসাদী ইউনিয়নের খলাপাড়া গ্রামের মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের ছোট ছেলে। সম্প্রতি বিলবোর্ড ছেঁড়ার অপবাদ দিয়ে খলাপাড়া ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আমজাদ হোসেনকে পিটিয়ে মেরুদ- ভেঙ্গে দেওয়া এবং হাত-পায়ে রক্তাক্ত জখম করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে । দীর্ঘদিন চিকিৎসায় থাকার পর আমজাদ হোসেন রুবেলের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেন। খলাপাড়া এলাকায় চায়না তত্ত্বাবধানে প্রতিষ্ঠিত এবিএল গার্মেন্টস কোম্পানীর মূল্যবান জিনিসপত্র চুরির হওয়ার ঘটনায় রুবেলের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেন সংশ্লিষ্ট কোম্পানীর কর্তৃপক্ষ।
এলাকাবাসী জানায়, রুবেল এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকা- চালিয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। সাধারন মানুষ থেকে শুরু করে ইউপি চেয়ারম্যান, সরকার দলীয় নেতাকর্মী ও বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের সে বিনা কারনে মারধর করতো। তার হাতে অনেকে রক্তাক্ত জখম হয়েছে। সাধারন মানুষকে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে অর্থ কড়ি হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগও রয়েছে। সে খুবই উগ্র মেজাজি, সবার সাথে সে র্দুব্যবহার করতো। কারো কথা সে পাত্তা দিতো না।
এই সাইটের কোন লেখা কপি পেস্ট করা আইনত দন্ডনীয়
Leave a Reply