নাগেশ্বরী-কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি :
কুড়িগ্রামে ছোট বড় মিলে রয়েছে ১৬টি নদ-নদী, এর মধ্যে ধরলা অন্যতম। প্রতিবছর উজানের ঢল ও টানা বৃষ্টির পানির কারণে ধরলার তীব্র স্রোতে এ অঞ্চলের রাস্তাঘাট ও বাঁধগুলো ভেঙে চরাঞ্চল, নিম্নাঞ্চল ও দূর্গম এলাকার মানুষের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
এই ভাঙন থেকে বাদ যায়নি নওয়াবস, ঝাকুয়াপাড়া, কদমতলা ও টাপু ভেলাকোপা গ্রামের শত শত মানুষের চলাচলের কাঁচা সড়কটিও।
প্রায় ১৫ বছর আগে তৎকালীন পৌর মেয়র কাজিউল ইসলাম স্থানীয় লোকজনের চলাচলের জন্য টাপু ভেলাকোপা এলাকায় ধরলার নদীর শাখা বিলের ওপর মাটি ভরাট করে কাঁচা রাস্তাটি তৈরি করে দিলেও সে বছরই বন্যায় ভেঙে যায় রাস্তাটি।
পরবর্তীতে বিলটিতে পানি চলাচল অব্যাহত থাকায় রাস্তা তৈরি আর সম্ভব হয়নি। পরে স্থানীয়রা নিজ উদ্যোগে ওই স্থানটিতে প্রতি বছর বাঁশের সাঁকো তৈরি করে আসছেন।
কিন্তু প্রতিবছর বন্যার পানির তীব্র স্রোতে সেই সাঁকোটি আর স্থায়ী হয় না। ফলে নড়বড়ে বাঁশের সাঁকোতে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে চার গ্রামের মানুষ।
সাঁকোটি কুড়িগ্রাম পৌরসভা এলাকার ৬নং ওয়ার্ডের টাপু ভেলাকোপা গ্রামের কাঁচা রাস্তার পার্শ্ববর্তী শফিকুলের মুদি দোকান সংলগ্ন এলাকায়।
জানা যায়, ২৫ বছর ধরে স্থানীয়রা বিভিন্ন সময় পৌর চেয়ারম্যান, জনপ্রতিনিধি ও এমপিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও সেতু পাননি। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জন স্থানীয়দের চলাচলের দুর্ভোগ দেখে আশ্বাস দিলেও মেলেনি কোনো সেতু।
১৫ বছর আগে তৎকালীন পৌর মেয়র কাজিউল ইসলাম স্থানীয়দের চলাচলের জন্য বিলের ওপর মাটি ভরাট করে কাঁচারাস্তা তৈরি করে দিলেও সেই বছরের বন্যায় রাস্তাটি ভেঙে গিয়ে বিচ্ছিন্ন হয় যোগাযোগ ব্যবস্থা। পরবর্তীতে জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে কোনো প্রকার সমাধান না পেয়ে স্থানীয়রা চাঁদা তুলে প্রতিবছর তৈরি করে আসছেন বাঁশের সাঁকো। কিন্তু প্রতিবছরই বন্যায় ভেঙে যায় সেই সাঁকোটি।
স্থায়ী কোনো সমাধান না মেলায় ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকোতে ভোগান্তি নিয়ে চলাচল করছে চার গ্রামের মানুষ। সাঁকোটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় আতঙ্ক নিয়ে চলাচল করে শিশু ও বৃদ্ধসহ স্থানীয়রা।
সাঁকোটির চাটলা ভেঙে যাওয়ায় মাঝেমধ্যেই মানুষ পড়ে গিয়ে আহত হন। অনেক সময় গবাদি পশুও পারাপারের সময় পড়ে গিয়ে ডুবে যায়। অসুস্থদের চিকিৎসার জন্য কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় অনেক ভোগান্তিতে পড়েন স্বজনরা।
টাপু ভেলাকোপা এলাকার আইয়ুব আলী জানান, এখানে একটি বাঁশের সাঁকো তৈরির জন্য আমরা পৌরসভার মেয়র আব্দুল জলিলের কাছে গিয়েছিলাম। জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জাফর আলীর কাছেও গিয়েছিলাম। কিন্তু কোনো অর্থনৈতিক সহযোগিতা পাইনি। তাই আমরা এলাকাবাসী বাধ্য হয়েই স্থানীয়দের কাছ থেকে চাঁদা তুলে এই বাঁশের সাঁকোটি তৈরি করেছি। তবে স্থানীয় পৌরসভা কাউন্সিলর সামান্য সহযোগিতা করেছেন।
কুড়িগ্রাম পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর আবুল হোসেন ওরফে পাকরী আবুল বলেন, এই সাঁকোটি দিয়ে চলাচল করা অনেক কষ্টকর। এলাকার শত শত মানুষ খুবই ভোগান্তি নিয়ে সাঁকোর ওপর দিয়ে চলাচল করে। বন্যার সময় পানির তীব্র স্রোতে সাঁকো ভেঙে যায়। তখন নিরুপায় হয়ে আমরা কলাগাছের ভেলা দিয়ে পারাপার হই। আবার অনেকেই সাঁতরিয়ে জীবিকার সন্ধানে যান।
তিনি বলেন, এই সাঁকো পার হয়ে অনেক শিশু টাপু ভেলাকোপা নিউ মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যায়। আমরা এসব শিশুদের নিয়ে খুবই দুঃশ্চিন্তায় থাকি।
এই সাইটের কোন লেখা কপি পেস্ট করা আইনত দন্ডনীয়
Leave a Reply