রবিবার, ২৬ মার্চ ২০২৩, ০৯:৩২ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
অস্ত্রসহ র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার সেই রুবেল সরকার গাজীপুর সিটির মেয়র পদপ্রার্থী উত্তরায় ট্রেনের ধাক্কায় কলেজ ছাত্র নিহত সৌদিতে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল একই পরিবারের ২ বাংলাদেশির ভান্ডারিয়ায় যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালিত ছাত্র সংসদকে টর্চারসেলে রূপান্তর, ব্যক্তিগত ক্ষোভের জেরে ছাত্র সংসদে ‘ছাত্র’ পেটালেন ছাত্রলীগ নেতা নীলফামারীতে রোজিনা হত্যার ৩ মাস পেরিয়ে গেলেও বিচার পায়নি তার পরিবার বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন শেরপুর জেলা শাখার পরিচিতি সভা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত গণহত্যার স্বীকৃতি পেতে কাজ করছে সরকার: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নামাজ পড়তে গিয়ে রিকশা হারানো সেই রশিদের পাশে তাশরিফ নতুন অস্ত্র ছাড়া মরতে সেনা পাঠাব না: জেলেনস্কি

কুমিল্লায় রেলের তিন কাউন্টারের মধ্যে দুই কাউন্টার বন্ধ, যাত্রীদের দুর্ভোগ

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ৩০ জানুয়ারী, ২০২৩
  • ৩৭ Time View

 

 

 

কুমিল্লা প্রতিনিধিঃ

 

কুমিল্লা রেলওয়ে স্টেশনে টিকিট সংগ্রহ করতে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে যাত্রীদের। স্টেশনে থাকা টিকিট বিক্রির তিনটি কাউন্টারের মধ্যে দুটি বন্ধ থাকায় দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়েও টিকিট না পেয়ে যাত্রী দুর্ভোগ চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। এছাড়া টিকিট না পেয়ে অনেক যাত্রী ট্রেনে ভ্রমণ করায় রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সকাল ৭টা থেকে ৮টা পর্যন্ত ঢাকাগামী উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিটের জন্য কাউন্টিারের সামনে যাত্রীদের দীর্ঘ লাইনে দাঁড়াতে হয়। ট্রেন প্লাটফর্মে ঢুকে পড়ার পর অধিকাংশ যাত্রী টিকিট না কেটে কোনো রকম দৌঁড়ে ট্রেনে উঠে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা হন।

এছাড়া, চট্টগ্রাম অভিমুখী মহানগর প্রভাতী, ঢাকা অভিমুখী চট্টলা, মহানগর এক্সপ্রেস, সিলেট অভিমুখী পাহাড়িকা এক্সপ্রেস, চট্টগ্রাম অভিমুখী পাহাড়িকা, মহানগর গোধূলী, ময়মনসিংহগামী বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনসহ গুরুত্বপূর্ণ ট্রেনের যাত্রার সময় টিকিটের জন্য যাত্রীদের প্রচণ্ড ভিড় দেখা দেয়। দীর্ঘ লাইনের কারণে আসনসহ অথবা আসন বিহীন কোনো টিকিট না পেয়ে বিনা টিকিটে বাধ্য হয়ে ট্রেনে ভ্রমণ করেন যাত্রীরা। যাত্রীদের অনেককেই ট্রেনের ভেতর হয়রানি ও টিটিইকে নির্ধারিত ভাড়াসহ জরিমানা দিতে হয়। আবার অনেকে ট্রেনের অ্যাটেন্ড্যান্ট, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য, ক্যাটারিং সার্ভিসের লোকদের টাকা দিয়ে ট্রেন ভ্রমণ করেন। ফলে একটি সুবিধাভোগী চক্রের পকেটে যাত্রীদের টাকা চলে যাচ্ছে। এতে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।

গত রোববার সকাল পৌনে ৮টার দিকে কুমিল্লা স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, টিকিট কাউন্টারের সামনে যাত্রীদের প্রচণ্ড ভিড়। আন্ত:নগর ট্রেনের দুটি কাউন্টার ও একটি সাধারণ কাউন্টিার থাকলেও মাত্র একটি কাউন্টার খোলা রেখে বাকি দুটি কাউন্টারের সামনে কাগজের কার্টুন দিয়ে বন্ধ করে রাখা হয়েছে। এ সময় ট্রেনের ব্যবস্থাপনা নিয়ে যাত্রীদের নানা বিরূপ মন্তব্য করতে শোনা যায়।

এদিকে, প্রতিনিয়তই বাড়ছে ট্রেনের নারী যাত্রীর সংখ্যা। নারীদের জন্য আলাদা কোনো কাউন্টার না থাকায় তারাও পড়েছেন বিপাকে। পুরুষদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে টিকিট কাটতে হয় তাদের। নারীদের জন্য আলাদা কাউন্টার খোলার দাবি যাত্রীদের।

মাহফুজুর রহমান মিল্টন নামের একজন যাত্রী কুমিল্লা থেকে কসবা রেলওয়ে স্টেশনে যাবেন। স্টেশনে টিকিট কাউন্টারে দাঁড়িয়েছেন আসন বিহীন টিকিট সংগ্রহ করার জন্য। কিন্ত দীর্ঘ লাইনের কারণে তিনি হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, ‘কেউ দেখার নেই। যার যেভাবে ইচ্ছে সেভাবেই মনে হয় চলছে। এতগুলো মানুষ টিকিটের জন্য দাঁড়ানো অথচ একটি মাত্র কাউন্টিার।’ কথা বলার এক পর্যায়ে ট্রেন প্লাটফর্মে চলে আসায় টিকিট না নিয়েই ট্রেন ধরতে দৌঁড় দেন তিনি।

কসবা উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আমির হোসেন বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরেই একটি কাউন্টার খোলা রাখায় যাত্রীদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। অন্তত পক্ষে দুটি কাউন্টার খোলা রাখলেও যাত্রীদের সমস্যা কম হতো। অনেক সময় ইচ্ছা থাকলেও টিকিট না পেয়ে বিনা টিকিটে চলতে হচ্ছে যাত্রীদের। দ্রুত এ সমস্যার সমাধান হওয়া উচিত।’

ব্রাহ্মণবাড়িয়া অভিমুখী যাত্রী চক্ষু চিকিৎসক বশির আহম্মেদ বলেন, ‘কর্তৃপক্ষের উচিত সমস্যার সমাধান করে যাত্রীসেবার মান আরো বৃদ্ধি করা। বর্তমানে যে অবস্থা চলছে তাতে রেলেরই ক্ষতি হচ্ছে। রেলওয়ের সুনাম নষ্ট হচ্ছে।’

মমিনুল ইসলাম নামের ঢাকাগামী যাত্রী বলেন, ‘একটা কাউন্টার অথচ প্রচুর মানুষ। ট্রেন চলে আসার সময় হয়েছে। এটা কোনো কথা? কর্তৃপক্ষ কি বিষয়টি দেখেন না। এই স্টেশনের মাস্টারসহ অন্য যারা ঊর্ধ্বতন কর্মকতারা আছেন তারা কোথায়? তাদের কাজটা কি? যাত্রী সেবার মান বৃদ্ধি করতে না পারলে রেলের জন্য সরকারের এতো করারই দরকার কি?’

তিনি আরও বলেন, ‘আসন বিহীন টিকিট কাটলেও সরকারের ঘরে টাকাটা জমা পড়ে। কিন্তু টিকিট না কাটলেতো যাত্রীদের অন্যভাবে ম্যানেজ করে গন্তব্যে যেতে হয়। কয়জনের টাকা সরকার পায়? সবকিছুই ট্রেনের ভেতরের কিছু দুর্নীতিবাজ রেলের লোকজনই খেয়ে শেষ করে ফেলে।’

কুমিল্লা রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার মো. মাহাবুবুর রহমান বলেন, ‘জনবল সংকটের কারণে সব কাউন্টারে টিকিট দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। সবসময় টিকিটের জন্য যাত্রীদের ভিড় থাকে না। কেবল মাত্র কয়েকটি ট্রেনের যাত্রার সময় টিকিট কাউন্টারের সামনে ভিড় হয়। ট্রেন চলে গেলে ভিড়ও চলে যায়।‘

রেলওয়ের চট্টগ্রাম বিভাগের ব্যবস্থাপক মো. আবিদুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে মুঠোফোনে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি বিষয়টি জানার চেষ্টা করবো এবং ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

 

 

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

এই সাইটের কোন লেখা কপি পেস্ট করা আইনত দন্ডনীয়