হাসনাত রাব্বু, কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি :
কুষ্টিয়ার খাজানগরে শিশু কন্যা ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে এক যুবককে ধরে আটকে রাখার ঘটনায় মাইকে ঘোষণা দিয়ে দুই গ্রামবাসী দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে নিয়ে চড়াও হয়ে মহড়া দেয়া ও সংঘর্ষের প্রস্তুতিকালে পুলিশের উপস্থিতিতে তা পন্ড হয়ে গেছে এবং ঘটনার পর পরই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে পুলিশ । এখনো দু-গ্রাম বাসীর মধ্যে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। অনাকাংখিত ঘটনা এড়াতে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বটতৈল ইউনিয়নের খাজানগর ও পাশ্ববর্তী গ্রাম আইলচারা ইউনিয়নের কবিরাজ পাড়া ( ঘোষ পাড়া) এ দুই গ্রামবাসীর মধ্যে সোমবার (২৭ফেব্রুয়ারী) বিকেলে এ ঘটনা ঘটে।
এলাকাবাসী জানান, ঘটনার সময় খাজানগরের জনৈক দোকানীর শিশু কন্যা বাড়ির পাশের মাঠের মধ্যে ডিপ স্যালো মেশিনের পানিতে গোসল করতে যায়। এ সময় পাশ্ববর্তী গ্রামের কবিরাজপাড়ার সিদ্দিক কবিরাজ এর ওই ডিপ স্যালো মেশিনের দায়িত্বে থাকা কবিরাজ পাড়ার মৃত মাহের আলীর ছেলে যুবক ইমাদুল (৩৮) ওই শিশুকে কোলে নিয়ে স্যালো মেশিনের ঘরে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা কালে তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন টের পেয়ে ওই যুবককে ধরে আটকে রাখে।
কিছুক্ষণ পরে সেখানে স্যালো মেশিনের মালিক ছিদ্দিক কবিরাজ উপস্থিত হয়ে ইমাদুলকে জোরপূর্বক নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।
এ সময় ওই যুবককে আটককারী স্থানীয় জনতা ও ছিদ্দিক কবিরাজ এর মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। ইমাদুলকে ছাড়িয়ে নিতে ব্যর্থ হয়ে এক পর্যায়ে ছিদ্দিক কবিরাজ এলাকায় ফিরে গিয়ে তার গ্রামের প্রায় অর্ধশত লোক নিয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হামলার প্রস্তুতি নেয় এবং আটকের খবর মসজিদের মাইকে ঘোষণা দেয়। এ ঘোষণায় তার নিজ গ্রামের আরো শত শত মানুষ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে খাজানগরের দিকে আসার প্রস্তুতি নিতে থাকে।
এ সংবাদ পেয়ে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে খাজানগরের কয়েক’শ মানুষ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে প্রস্তুতি নিয়ে মুখোমুখি অবস্থান নিতে থাকে । শুরু হয় ব্যাপক উত্তেজনা। এরই মাঝে খবর পেয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানা সহ স্থানীয় জগতি পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ সদস্যরা দ্রুত ঘটনা স্থলে পৌঁছায়। পুলিশের উপস্থি টের পেয়ে দু-পক্ষের লোকজন পিছু হটতে থাকে এবং দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে নিয়ে আসে। পরে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে ইমাদুল নামে ওই যুবককে আটক করে নিয়ে আসে পুলিশ।
বটতৈল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিন্টু ফকির জানান, এলাকার পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে। তিনি বলেন ঘটনার সময় আমি ইউপি কার্যালয়ে ছিলাম। সংবাদ পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে আসি। এরই মাঝে সেখানে স্থানীয় জগতি পুলিশ ফাড়ি ও সদর থানা থেকে পুলিশ সদস্যরা দ্রুত এসে ঘটনাস্থলে পৌছালে পরিস্থিতি নিয়েন্ত্রণে আসে এবং পুলিশের উপস্থিতেই আইলচারা ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান লিটন মেম্বার সহ মাতব্বর বর্গ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তারা আর কোন প্রকার বিশৃঙ্খলা করবে না। খাজানগরের পক্ষ থেকেও একই প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে।
স্থানীয় জগতি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এস আই আলমগীর হোসেন জানান, দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতিতে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসায় অনাকাঙ্ক্ষিত কোন ঘটনা ঘটেনি। এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে এবং তিনি সঙ্গে ফোর্স সহ এখনো ঘটনাস্থলে রয়েছেন।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: দেলোয়ার হোসেন খান জানান, দুই গ্রামবাসীর মধ্যে উত্তেজনার সংবাদ পেয়েই তিনি ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠান এবং দ্রুত পুলিশ পৌঁছে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এ ঘটনায় ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে ইমাদুল নামে এক যুবককে আটক করা হয়েছে।
এই সাইটের কোন লেখা কপি পেস্ট করা আইনত দন্ডনীয়
Leave a Reply