হাসানাত রাব্বু, কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি :
রাষ্ট্রের ভ্যাট ট্রাক্স ফাঁকি দিয়ে চোরাচালানের অভিযোগে আটককৃত পন্য কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট অফিসে জমা হয়। এই জমাকৃত মাল কাস্টমস কর্তৃপক্ষ প্রকাশ্যে নিলামের মাধ্যমে বিক্রি করে সরকারের কোষাগারে রাজস্ব বৃদ্ধি করে।
কুষ্টিয়া জেলার সকল চোরাচালানের উদ্দেশ্যে পরিবহন করা মালামাল আটক হলে সেগুলো কুষ্টিয়া কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট বা কাস্টমস অফিসে জমা হয়। আটককৃত মালামাল কাস্টমস অফিসের সহকারী কমিশনার অথবা সহকারী কমিশনারের নিযুক্ত কোন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা ,গুদাম কর্মকর্তা সহ কাস্টমস কর্তৃপক্ষের উপস্থিতিতে পণ্যের বর্তমান বাজারমূল্য নির্ধারণ করে প্রকাশ্যে নিলামে বিক্রয় করা হয়।
এর আগে কাস্টমস অফিস থেকে চারিদিকে কয়েক কিলোমিটার মাইকিং করে নিলাম কমিটি কর্তৃক পন্যের বাজার মূল্য নির্ধারণ করে তার ১০% মূল্যের সমপরিমাণ অর্থ ফেরত যোগ্য জামানত হিসেবে জমা নিয়ে নিলাম হবে। নিলামে সর্বচ্চ মূল্যদাতা নিলাম কৃত পণ্য পাবে।
কুষ্টিয়া কাস্টমস অফিসে নিলামের অনিয়মের অভিযোগ পাওয়াগেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেন, কুষ্টিয়া কাস্টমস কর্মকর্তাদের অনেকেই বিশেষ করে গুদাম কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে স্থানীয় একটি চক্র বহুবছর ধরে নিলামের মাল ক্রয় করছে। পণ্যের বাজার মূল্য থেকে কয়েকগুন কমে কর্মকর্তাদের ম্যানেজ প্রক্রিয়ায় মাল কিনছে, আর সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব।
তিনি আরো বলেন, বিএনপির ক্যাডার বলে পরিচিত খোকন মোলা, কাজিম, উজ্জ্বল গ্যাং বহুদিন কাস্টমস কে জিম্মি করে এই নিলাম প্রক্রিয়াকে নিজেদের করে রেখেছে। ২১ মার্চ ২০২৩ তারিখে পাচারকারীদের থেকে আটক কৃত ‘একআনি’ এই গ্যাং কাস্টমস গুদাম কর্মকর্তা ও ড্রাইভার আরিফকে ম্যানেজ করে ৬০ টাকা দরে ক্রয় করে। ক্রয়কৃত মাল কাস্টমস গেটে আবার নিলাম করে ১৮০ টাকা দরে বিক্রি করে খোকন গ্যাং।
এই টাকা খোকন ও তার অনুসারীরা ভাগ করে বাটোয়ারা করে নেয়। কাস্টমস অফিসের একজন কোন অবস্থায় নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, কাস্টমস অফিসে জব্দকৃত মালামাল যদি সত্যিকারের প্রকাশ্যে নিলামে বিক্রি করা হত তাহলে সরকার আরো কয়েকগুন রাজস্ব পেতো। নিলাম প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার আগে আশেপাশে কয়েক কিলোমিটার মাইকিং করার কথা থাকলেও শুধু কাস্টমস মোড়ে এক থেকে দুইবার বলে বিশেষ কারনে আর মাইকিং হয়না বলে জানান কয়েকজন।
এদিকে গতকাল আবারও একআনি নিলাম হয়। ঐ নিলামেও উজ্জল ও খোকন গ্যাং পন্য ক্রয় করে নেয়। সূত্রটি আরো জানায়, বিগত সময়ে নিলামের দর খোকন উজ্জলরা সব সময় নিয়ে এসেছে। এ বিষয়ে কুষ্টিয়া কাস্টমস এক্সাইজের ডিসির সাথে কথা হলে তিনি জানান সব কিছু নিয়ম অনুযায়ী করা হয়।
এই সাইটের কোন লেখা কপি পেস্ট করা আইনত দন্ডনীয়
Leave a Reply