শুক্রবার, ০২ জুন ২০২৩, ০৭:২৩ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
নীলফামারীতে ট্রেন আটকিয়ে মানববন্ধন ঢাকাসহ তাপপ্রবাহ বইছে ৬০ জেলায় সোনারগাঁয়ে ৭টি রেষ্টুরেন্টসহ দুই হাজার অবৈধ গ্যাস বিচ্ছিন্ন ১ জনকে আটক স্বাস্থ্যে বরাদ্দ বাড়ছে ১১৮৯ কোটি টাকা দাম কমবে ইন্টারনেটের ১৬১ টাকা কমলো ১২ কেজি এলপিজির দাম মেলান্দহের আদ্রা ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে কুচক্রিমহলের ষড়যন্ত্র! উত্তরা আব্দুল্লাহপুর বেড়িবাঁধ রেললাইন বস্তি অপরাধ মাদকের অভয়ারণ্য গুলশান-বনানীর বিস্তৃত এলাকার একচ্ছত্র মাদক সম্রাট হুমায়ুন কবির গাজী ক্ষমতার জোরে অন্যের জমি দখলের চেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত মেজর মোস্তফা কামালের বিরুদ্ধে; থানায় অভিযোগ

কোচিং প্রাইভেটে ক্লান্ত শিক্ষার্থী-অভিভাবক, বৈষম্যের শিকার হচ্ছে কম আয়ের পরিবারের সন্তানরা

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৩
  • ২৭ Time View

 

 

মোঃ আবদুল আউয়াল সরকার, কুমিল্লা :

 

সন্তানদের লেখাপড়া এখন স্কুল-কলেজের চেয়ে কোচিং-প্রাইভেট নির্ভরতা বেশি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এতে অভিভাবকদের বাড়তি খরচের পাশাপাশি অধিক সময় লেখাপড়া করতে গিয়ে চরম মানসিক চাপে পড়ছে শিক্ষার্থীরা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্লাসের প্রতি আস্থাও কমছে সংশ্লিষ্টদের। শিক্ষকদের কোচিং বন্ধে সরকারের একটি নীতিমালা থাকলেও তার বাস্তবায়ন না থাকায় বাড়তি আয়ের জন্য ক্লাসের চেয়ে কোচিং-প্রাইভেটে পড়াতে বেশি মনোযোগী হন অনেক শিক্ষক। এ অবস্থায় স্কুল শিক্ষার্থীদের নিয়ে শিক্ষকদের কোচিং-প্রাইভেট বন্ধে নীতিমালা অনুযায়ী কঠোর মনিটরিং এবং মানসম্মত শিক্ষক ও ক্লাস নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

অভিযোগে জানা গেছে, দেশের অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই শিক্ষকদের ক্লাস কার্যক্রমে সন্তষ্ট নন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। যে কারণে যথাসময়ে পাঠ্যবই ঠিকমতো বুঝতে ও শেষ করতে না পারায় পরীক্ষায় বসা নিয়ে বিপাকে পড়ে শিক্ষার্থীরা। অভিভাবকদেরও অনেকে কর্মব্যস্ত থাকা এবং অনেকে শিক্ষাগত অযোগ্যতার কারণে সন্তানদের বাসায় তেমন পড়ানোর সুযোগ পান না। যে কারণে বাধ্য হয়েই কোচিং বা প্রাইভেট শিক্ষকদের ওপর নির্ভর করেন। গ্রাম বা মফস্বল এলাকার চেয়ে শহর এলাকার নামি-দামি স্কুলের শিক্ষার্থীদেরই কোচিং-প্রাইভেট নির্ভরতা সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। প্রয়োজনের বাস্তবতায় স্কুল-কলেজের মতোই অনেকটা বিকল্প শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে একাডেমিক কোচিং সেন্টার গড়ে উঠেছে।

ভালো ফলাফল করার প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে সবচেয়ে মেধাবী শিক্ষার্থীরাই ক্লাসের বাইরে কোচিং-প্রাইভেটে বেশি সময় দিচ্ছে। এক্ষেত্রে আর্থিক সক্ষমতা অনুযায়ী কোচিং-প্রাইভেট শিক্ষকদেরও মান নির্ভর করে। অপরদিকে স্বল্প আয়ের পরিবারের সন্তানদের এই প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়তে হচ্ছে।

তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রতিযোগিতার দৌড়ে টিকে থাকা বা এগিয়ে থাকতে গিয়ে মূল ক্লাস সময়ের বাইরে সমপরিমাণ বা তার চেয়েও বেশি সময় শিক্ষাকার্যক্রম নিয়ে ব্যস্ত থাকায় শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অভিভাবকরাও দিশাহারা হয়ে যাচ্ছেন। অনেক শিক্ষার্থী পড়ালেখায় অতিষ্ঠ হওয়ার পাশাপাশি অসুস্থ হয়ে পড়ছেন বলেও খবর পাওয়া গেছে।

সম্প্রতি কুমিল্লার বিভিন্ন স্কুল এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ক্লাস শুরুর পর অপেক্ষারত অভিভাবকদের সঙ্গে আলাপ করে কোচিং সেন্টার বা প্রাইভেট ব্যাচ সংশ্লিষ্টরা নানা প্রচারপত্র নিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা চালান। অভিভাবকদের সঙ্গে যোগাযোগ নম্বরও তারা নোট করে নেন। এছাড়া ক্লাস শেষে শিক্ষার্থীদের ভিড়ের মধ্যেই কোচিং-প্রাইভেটের প্রচারপত্র বিলি নিয়ে রীতিমতো প্রতিযোগিতা লেগে যায়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর আশপাশেই অবস্থিত নানা কোচিং সেন্টারের বড় বড় সাইনবোর্ড-ব্যানারও টানানো থাকে।

দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করে বলেন,
শিক্ষক যদি তার সব মেধা ও মনন যথাযথভাবে ক্লাসে প্রয়োগ করেন, তাহলে কোনো শিক্ষার্থীর প্রাইভেট-কোচিংয়ের প্রয়োজন পড়ে না।

তবে ক্লাসের অন্য সবাই কোচিং-প্রাইভেটে জড়িত থাকায় অনেকটা নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির শিকার হচ্ছে তার সন্তান। তাছাড়া ক্লাস টিচাররাও শিক্ষার্থীদের ঠিকমতো না পড়িয়েই বা যথাযথ ধারণা না দিয়েই পরীক্ষায় অপেক্ষাকৃত কঠিন প্রশ্ন করায় বেশ বিপাকে পড়ছে কোমলমতি শিক্ষার্থী। এ অবস্থায় আসলে কোচিং-প্রাইভেটের বাইরে গিয়ে স্কুলের প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা বেশ চ্যালেঞ্জের বিষয় মনে হচ্ছে বলেও ওই অভিভাবক জানান।

কুমিল্লার মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জামাল নাসের বলেন,নিয়মিত ক্লাসে হাজির হলে শিক্ষার্থীরা দুর্বল বিষয়গুলোতে শিক্ষকের সহায়তা নিয়ে সবল হয়ে উঠতে পারে। তাছাড়া ক্লাসে শিক্ষার্থীরা প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে, ব্যাখ্যা চাইতে পারে এবং সরাসরি শিক্ষকের কাছ থেকে শিখতে সক্ষম হয়। আমাদের শিক্ষকগণ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এবং আমাদের কারিকুলাম অনুযায়ী শিক্ষা দানে দক্ষ। সুতরাং শিক্ষার্থীদের উচিত ক্লাসে উপস্থিত হয়ে খুব সহজেই নিজেদের বুদ্ধিমত্তা ও দক্ষতা বাড়ানোর এসব সুযোগ গ্রহণ করা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র-ছাত্রীরা নিয়মিত আসেনা, অথচ কোচিং প্রাইভেটে ব্যস্ত থাকে। এ ব্যপারে অভিভাবক ও শিক্ষার্থী সবাইকে সচেতন হবে। নিয়মিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসতে হবে। নিয়মিত ক্লাসে আসলে প্রাইভেট কোচিংয়ের প্রয়োজন হবেনা।

 

 

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

এই সাইটের কোন লেখা কপি পেস্ট করা আইনত দন্ডনীয়