হাবিব সরকার স্বাধীন/ময়না :
বাংলাদেশ যতই ডিজিটাল হচ্ছে অপরাধীরা তাদের কৌশল ডিজিটাল পদ্ধতিতে তাদের অপরাধ কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে।
করোনাকে পুঁজি করে হঠাৎ রাজধানী খিলক্ষেত বটতলা, আমতলা, নামাপাড়া, দক্ষিণপাড়া, তেতুলতলা, ঝিলপাড়া, খা পাড়া, আনাচে-কানাচে গজে উঠেছে অবৈধ ফার্মেসি। হাত বাড়ালেই মিলছে মূল্যের চেয়ে দ্বিগুণ দামে ঔষধ। কথা বললে উত্তেজিত হচ্ছে ফার্মেসি ব্যবসায়ীরা হচ্ছে কথা কাটাকাটি মারামারি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা নেই বললেই চলে। এমনভাবে অনেক ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীদের কাছে নানাভাবে হয়রানির শিকার হয়েছে বলে দাবি করেন স্থানীয় কয়েকজন যুবক।
অনুসন্ধানে প্রতিবেদককে স্থানীয় এক ব্যবসায়ী বলেন হঠাৎ এমন ভাবে ফার্মেসি বেড়ে গেছে কল্পনা করা যায় না। নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে দ্বিগুণ দামে দিয়ে ওষুধ নিতে হয়। নিয়ম-শৃঙ্খলা নাই, তাই বেপারোয়া হয়ে গেছেন ফার্মেসি ব্যবসা।
বেশী ভাগ ফার্মেসি ট্রেড লাইসেন্স নাই এমনটা দাবি করেন স্থানীয় এলাকাবাসী। ফার্মেসি ব্যবসায়ীদের অনেক অনিয়ম ও দুর্নীতির তথ্য উঠে এসেছে। এই এলাকায় অলিগলি থেকে আরম্ভ করে সড়কে গড়ে ওঠা জমজমাট ওষুধ বিক্রির ব্যবসায় মূল কর্তৃপক্ষের কোন ধরনের ছাড়পত্র না নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। বাংলাদেশ এই মুহূর্তে ভেজাল খাদ্য থেকে শুরু করে বায়ুদূষণ সঙ্গে ভাইরাসজনিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বেড়ে চলার দুর্ভাবনা রয়েছে।
গত বছরের মাঝামাঝিতে ডেঙ্গু রোগের প্রচন্ড প্রকোপে যেমন বেড়েছিল রোগীর সংখ্যা, সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছিল প্রাণ সংহারের মতো দুর্যোগ। মশা নিধন সুষ্ঠু প্রক্রিয়া ছাড়াও চারপাশের পরিচ্ছন্ন পরিবেশ, এমনকি যথার্থ চিকিৎসা ও রোগটিকে নির্মূল করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এরই মধ্যে চীন থেকে উদ্ভূত করোনা ভাইরাস নিয়ে উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠায় সারা বিশ্ব আজ শঙ্কিত।
বাংলাদেশও অত্যন্ত দুশ্চিন্তা আর সংশয়ের মধ্য দিয়ে করোনা ভাইরাসকে অতিক্রমের পথ খুঁজছে। আবার নতুন করে গণমাধ্যমে খবর এসে যায় লাইসেন্স ছাড়াই ফার্মেসি ব্যবসার রমরমা অবস্থা। কোন নিয়ম-কানুন বা অনুমোদনের তোয়াক্কা না করে কিছু কোম্পানি খিলক্ষেত এলাকায় প্রচুর ওষুধের দোকানে নিষিদ্ধ, নকল এবং মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ সরবরাহ করে যাচ্ছে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। বিপাকে পড়ছে অসহায়, সাধারণ রোগীরা।
তথ্য সূত্রে উঠে আসে শিক্ষা এবং প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ছাড়া তৈরি হওয়া কিছু ভুয়া ফার্মাসিস্টও এই ব্যবসায় সহযোগী শক্তির ভূমিকায় নেমেছে। তারই বিরূপ প্রতিক্রিয়া ও অশুভ কর্মযোগে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে নিরীহ রোগী ও তাদের পরিবার-পরিজন।
বেশিভাগ অসহায় দরিদ্র মানুষ গুলির ঢাকায় এসে বসবাস করে। পেট ভরে দুমুঠো ভাত খাবার খাবে সে আশায় জন্মস্থান ছেড়ে ঢাকায় এসে তাদের বসবাস। দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করেন। তারা উন্নত চিকিৎসার জন্য দক্ষ চিকিৎসকের কাছে যেতেও পারেন না অতিরিক্ত ফি’র কারণে।
ফলে অপেক্ষাকৃত নিম্নমানের ওষুধ এবং অদক্ষ চিকিৎসক কিংবা ফার্মাসিস্টের শরণাপন্ন হতে বাধ্য হন। এই সুযোগে অনুমোদনহীন ফার্মেসি ব্যবসাও তারা জমজমাট করে তুলছে। আরও ভয়াবহ ব্যাপার হলো চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই রোগীরা দোকান থেকেই ওষুধ কিনে নিজেদের সর্বনাশ ডেকে আনছেন। মেয়াদোত্তীর্ণ, নকল এবং নিষিদ্ধ ওষুধ বিক্রি করে সংশ্লিষ্ট দোকানগুলোও সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে।
সেই ব্রিটিশ আমল থেকে ওষুধ নিয়ন্ত্রণ আইন ১৯৪০ বলবৎ রয়েছে। ওষুধের দোকান কিংবা ফার্মেসি দেয়ার ক্ষেত্রে প্রথমেই উদ্যোক্তাকে নিদেনপক্ষে ছয় মাসের ফার্মাসে কোর্স করে সনদপত্র সংগ্রহ করতে হবে। পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ে এই সনদপত্র জমা দিয়ে ড্রাগ লাইসেন্সের জন্য আবেদন করা আইনগত বিধি।
পরবর্তীতে স্বাধীন বাংলাদেশ সময়ের যৌক্তিক চাহিদায় ব্রিটিশ প্রবর্তিত আইনে কিছু নতুন মাত্রাও যোগ করে, যা ১৯৮২-এর ৪ নবেম্বরের ড্রাগ অধ্যাদেশ বিধির ১৩ নং ধারায় ‘ফার্মাসিস্টদের নিয়োগ’ উল্লেখ আছে। কোন খুচরা বিক্রেতা একজন রেজিস্ট্রিভুক্ত ফার্মাসিস্টের তত্ত্বাবধান ছাড়া কোন ড্রাগ বিক্রি করার অধিকারই পায় না। বিধি-নিষেধকে পরোয়া না করে অসদুপায়ে ওষুধ বিক্রির এই অবাধ ও অশুভ বাণিজ্য শুধু আইনী বিধান লঙ্ঘন হয় তাই নয়, রোগীর প্রাণ ঘাতকের ভূমিকায়ও তারা নামছে।
বলাবাহুল্য, সাধারণ মানুষের অজ্ঞতা, অশিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবায় সাধারণ জ্ঞানের অভাব, সর্বোপরি অসচেতন দৃষ্টিভঙ্গিই এমন সব অপকর্মকে জিইয়ে রাখার পরোক্ষ ভূমিকা রাখছে।
তবে গত বছর এসব অনুমোদনহীন দোকানে অভিযান চালিয়ে দোকান বন্ধ করে দেয়া এবং পাঁচ লাখের ওপর অর্থদ-ও জরিমানা হিসেবে আদায় করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। তাই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর নজরদারি করা দরকার, যাতে কেউ নতুন করে আর কোন অনুমোদনহীন ওষুধের দোকান ব্যবসা ফাঁদে না পরে। সে জন্য জরুলি ব্যবস্থা দেওয়ার প্রয়োজন মনে করেন ভুক্তভোগীরা।
এই সাইটের কোন লেখা কপি পেস্ট করা আইনত দন্ডনীয়
Leave a Reply