খুলনা প্রতিনিধিঃ
মামলার এজাহার সুত্রে জানা যায়, প্রায় দেড় বছর আগে গিলাতলা গাজী পাড়ার মৃত নুর ইসলাম শেখের মেয়ে নুরজাহান বেগমের সাথে একই এলাকার আবজাল শেখের পুত্র সাগর শেখের (২৫) ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক বিবাহ হয়। বিবাহরে পর থেকে স্বামী সাগর প্রতিনিয়ত তার স্ত্রী কে মারধোর করতো এবং যৌতুকের দাবি করতো । সর্বশেষ গত ১৪ মে বিকাল ৫ টার দিকে মামলার বাদি নুরজাহান বেগম রান্নাাঘরে রান্না করছিলেন, এ সময় তার স্বামী মোঃ সাগর শেখ রান্না ঘরে আসে এবং তাকে ইজিবাইক কিনে দেওয়ার জন্য তাকে চাপ দেয়।
খুলনা মহানগরীর খানজাহান আলী থানাধীন আটরা গিলাতলা ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের মোল্লাপাড়ায় স্বামী কর্তৃক স্ত্রী কে জলন্ত চুলার মধ্যে মুখ চেপে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগি নুরজাহান বেগম বাদী হয়ে ৩ জনকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। গত ২৪ তারিখে নগরীর খান জাহান আলী থানায় এ মামলাটি দায়ের হয়। তবে শুক্রবার (২৯ মে) পর্যন্ত এ মামলার কোন আসামী গ্রেফতার হয়নি।
এসময় নুরজাহান বলে, আমার মা, বাবা বেঁচে নেই, বোন দুলাভাই ছোট থেকে মানুষ করে বিয়ে দিয়েছে, এটা জানার পর ও তাকে কেন বার বার চাপ দেয়া হয়। এসময় সাগর তাকে তার বোন দুলাভাই এর কাছ থেকে টাকা এনে একটি ইজিবাইক কিনে দিতে বলে। তবে, নুরজাহান বলে তারাও খুব গরিব মানুষ এত টাকা কোথা থেকে পাবে? একথা বলার পর তার স্বামী সাগর শেখ এলোপাতাড়ি ভাবে তার স্ত্রী কে মারপিট করে।
এ সময় তার শাশুড়ি খুরশিদা বেগম ছেলেকে উস্কানি দিয়ে পুত্রবধুকে মেরে ফেলতে বলে। একপর্যায়ে তার স্বামী রান্না ঘরে জলন্ত চুলার মধ্যে ঘাড় চেপে ধরে এতে নুরজাহানের মুখের ডান পাশ পুড়ে জলসে যায়। তাকে কোন চিকিৎসা না দিয়ে ঘরের মধ্যে আটকে রাখে। পরেরদিন গত ১৫ মে সকাল সাড়ে ৭ টার দিকে নুরজাহান বেগম পালিয়ে শশুর বাড়ীর পার্শ্বে এক প্রতিবেশির বাড়িতে আশ্রয় নেয়। পরবর্তিতে তাদের মাধ্যমে খবর পেয়ে কিছুক্ষণ পর নুরজাহানের বড় বোন নাসরিন বেগম তাকে ফুলতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করে। এরপর গত ২৪ মে খানজাহান আলী থানায় ভুক্তভোগি নুরজাহান বেগম বাদি হয়ে তার স্বামী সাগর শেখ (২৫), শশুর আবজাল শেখ (৫৫) ও শাশুড়ি খুরশিদা বেগম (৫০) কে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করে।
যার নং ০২ – তাং ২৪-০৫- ২০ ইং । তবে মামলা দায়েরের ৬ দিন অতিবাহিত হলেও এখনও পর্যন্ত কোন আসামি আটক করতে পারেনি পুলিশ। খানজাহান আলী থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ শফিকুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, মামলা দায়েরের পর থেকে আসামিদের আটকের ব্যাপারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এই সাইটের কোন লেখা কপি পেস্ট করা আইনত দন্ডনীয়
Leave a Reply