শুক্রবার, ০২ জুন ২০২৩, ১২:১৫ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :

খুলনা শহরজুড়ে ফুটপাত দখল করে চলছে চাঁদাবাজির বাণিজ্য

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ১১ এপ্রিল, ২০২৩
  • ২৭ Time View

 

 

 

এস এম নূর :

 

খুলনা শহরের ফুটপাতগুলোর বেশির ভাগই নানাভাবে দখলে চলে গেছে। নিরাপদে হাঁটার এই জায়গাটুকু আর পথচারীদের অধিকারে নেই। ঝুঁকি নিয়ে তাই রাস্তা দিয়ে চলতে-ফিরতে হচ্ছে তাঁদের। কিন্তু সেখানেও বিপত্তি। রাস্তার বড় একটা অংশও যে হকারদের দখলে। সব মিলিয়ে শহরে দিন দিন সংকুচিত হচ্ছে হাঁটার জায়গা। বেশির ভাগ এলাকায় ফুটপাত থেকে নামতেই রাস্তার পাশজুড়ে সারি সারি ইজিবাইক, বাইসাইকেল ও মোটরসাইকেল। কোথাও কোথাও গাড়ি পার্ক করা। আর শীত মৌসুম ও ঈদ আসলেই ফুটপাত ও সড়ক দখল করে বেড়েছে হকারদের ব্যবসার তৎপরতা।

খুলনা সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, নগরের আয়তন ৪৬ বর্গকিলোমিটার। পাকা সড়ক আছে ৬৪১ কিলোমিটার। ফুটপাতের সঠিক হিসাব না থাকলেও প্রায় ২৫ কিলোমিটার ফুটপাত দখল হয়ে আছে। মাঝেমধ্যে অভিযান চালানো হয়। কিন্তু পরে ফুটপাত আবার দখল হয়ে যায়। সরেজমিনে দেখা গেছে, পাওয়ার হাউস মোড় থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের মোড় পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার ফুটপাতের পুরোটাই হকারদের দখলে। সেখানে পা ফেলার জায়গা নেই। ফুটপাতজুড়ে দোকানের সারি। কোথাও কোথাও ফুটপাত ছাড়িয়ে রাস্তার অর্ধেক পর্যন্ত চলে এসেছে দোকানপাট।

খুলনা ওয়াসার সামনে ও পিকচার প্যালেস মোড় ক্লে রোডের পুরোটাই ফুটপাতে দোকানের পাশাপাশি রয়েছে মাছ ও ফলের দোকান। শামসুর রহমান রোড ও পিটিআই মোড়ের অদূরেও সবজি বিক্রির ভ্রাম্যমাণ গাড়ির সারি। সরেজমিনে আরও দেখা গেছে, শহরের অন্যতম ব্যস্ত এলাকা পুরোনো যশোর রোডের খুলনা শপিং কমপ্লেক্সের বিপরীতে রাস্তার অর্ধেকজুড়ে সাইকেল সাজানো। ডাকবাংলো মোড়ে কথা হয় পথচারী ইয়াসিন হাওলাদারের সঙ্গে। তিনি বলেন, খুলনার ফুটপাত সারা বছরই দখল হয়ে থাকে। আগে বাধ্য হয়ে রাস্তা দিয়ে চলাচল করা গেলেও এখন শীত ও ঈদ মৌসুমে ব্যবসায়ীরা রাস্তার মাঝামাঝি পর্যন্ত চলে আসেন।

এতে ভোগান্তির চূড়ান্ত হয়। পশ্চিম রূপসা ঘাট থেকে খুলনা কলেজিয়েট গার্লস স্কুল পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার ফুটপাতের পুরোটাই দখল করে রেখেছেন কাঠের আসবাবের দোকানিরা। কলেজিয়েট স্কুলের পর থেকে টুটপাড়া কবরখানা মোড় পর্যন্ত ফুটপাতজুড়ে গাড়ি মেরামতের দোকান। রয়েল মোড় থেকে ডাকবাংলো ফেরিঘাট পর্যন্ত ফুটপাত দখল করে আছে স্যানিটারি সামগ্রীর দোকান।

রূপসা এলাকার ব্যাংক কর্মকর্তা মঈন খান বলেন, এখানকার ফুটপাত ধরে হাঁটা সম্ভব না। দিন দিন হাঁটার জায়গা কমছে। বিষয়টি চোখসওয়া হয়ে গেছে। মেনে নেওয়া ছাড়া উপায় কী! ময়লাপোতা মোড় থেকে গল্লামারী পর্যন্ত ফুটপাত লেপতোশক, খাবার ও ভাঙারির দোকানের দখলে। ময়লাপোতায় সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত সান্ধ্য বাজারের বাইরের অংশে অস্থায়ী দোকান বসায় সন্ধ্যার পর থেকে ওই এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

সেখানকার এক পথচারী তিথি বিশ্বাস বলেন, ‘সন্ধ্যায় গাড়ির চাপে আমাদের রাস্তার এপার থেকে ওপার যেতে ১৫-২০ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। আর রাস্তার পাশ দিয়ে হাঁটতে তো বুক কাঁপে।’ সোনাডাঙা বাসস্ট্যান্ড থেকে বয়রা বাজার পর্যন্ত সড়ক ও ফুটপাতও নির্মাণসামগ্রীর দখলে। সেখানে এখন ইট, খোয়া, পাথর, বালু ও রডের সমাহার।

এ বিষয়ে নদীর উপারের পথচারীদের সাথে কথা হলে তারা বলেন, আমাদের পশ্চিম রূপসা ঘাট পারাপার হতে খুব সমস্যায় পড়তে হয়। উপরে উঠার পর সারি সারি দোকান থাকায় রোডে চলাফেরা করা যায়না। তাই আমরা এই ফুটপাত উচ্ছেদের জন্য খুলনা সিটি মেয়রের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

 

 

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

এই সাইটের কোন লেখা কপি পেস্ট করা আইনত দন্ডনীয়