শনিবার, ২৫ মার্চ ২০২৩, ০১:৫০ অপরাহ্ন

গাইবান্ধায় অসহায়দের দেয়ার জন্য ত্রাণ ফিরিয়ে দিয়ে মানববিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন দুই প্রতিবন্ধী

Reporter Name
  • Update Time : শনিবার, ১৬ মে, ২০২০
  • ১৭ Time View

 

 

গাইবান্ধা প্রতিনিধি:

করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে কর্মহীন হয়ে অসহায় দিন কাটাচ্ছে খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ। অনাহারে-অর্ধাহারে থাকা খেটে খাওয়া মানুষগুলো খাবারের দাবিতে রাস্তায়ও নামছেন। এমন সংকটময় মুহূর্তে গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলায় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মোফাজ্জল হোসেন ও সিরাজ উদ্দিন নামে দুই প্রতিবন্ধী তাদের চেয়েও অসহায়দের দেয়ার জন্য নিজেদের ত্রাণ ফিরিয়ে দিয়েছেন।

গত বৃহস্পতিবার খাদ্য সহায়তা হিসেবে ১০ কেজি চাল, দুই কেজি ডাল, এক কেজি লবণ হাতে পাওয়ার পর তা না নিয়ে অন্যের হাতে তুলে দিয়ে মানববিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তারা।

দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মোফাজ্জল হোসেনের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকার আমাকে ১০ টাকা কেজি মূল্যের ৩০ কেজি চাল দিয়েছে। তা দিয়েহ আমার মাসখানেক চলবে। আমি চাই করোনা ভাইরাসের কারণে আমার চেয়ে যে বেশি অসহায় সেই এই ত্রাণ গ্রহণ করুক।

অপরদিকে প্রতিবন্ধী সিরাজ উদ্দিন বলেন, কয়েকদিন আগে আমি প্রতিবন্ধী ভাতা তুলেছি। ঐ টাকায় আমার বেশ কিছু দিন সংসার চলবে। তাই করোনা ভাইরাসের কারণে আমার চেয়েও যারা বেশি অসহায়, ঘরে খাবার নেই, তাদের হাতেই ত্রাণ দেয়া দরকার ।

সাঘাটা উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নাছিরুল আলাম স্বপন বলেন, দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক জীবনে এবং বিভিন্ন সময়ের দুর্যোগে মানুষের পাশে দাঁড়াতে গিয়ে অনেকেই একাধিকবার ত্রাণ পাওয়ার পরও ত্রাণের জন্য এসেছেন। অনেক মধ্যবিত্ত যারা চাইলে এক বছর বসে থেকে সংসার চালাতে পারবে তারাও ত্রাণের অপেক্ষায় থাকেন। কিন্তু এই দুই প্রতিবন্ধী চাইলে ত্রাণ গ্রহণ করে প্রয়োজন মতো খেতে পারতো। কিন্তু তারা মানবিকতার সর্বোচ্চ পরিচয় দিয়েছেন। এ থেকে আমাদের শিক্ষা নেয়া উচিত।

এ ঘটনা শোনার পর কবি ও সাংবাদিক প্রতীক ওমর বলেন, আমাদের এই প্রতিবন্ধীদের থেকে শিক্ষা নেয়া উচিত। লোভের ফাঁদে পা দিয়ে আমরা চাল, ডাল, তেল চুরি করতে কখনও ভাবি না যে এটা গরিবদের হক। আসুন সবাই মিলে এই কনোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে নিজেরা সচেতন হই আর খেটে খাওয়া মানুষদের পাশে দাঁড়াই, নিঃস্বার্থে কাজ করি। তাহলে দেশের এই দুর্যোগ মোকাবেলা করা সম্ভব হবে।

উল্লেখ্য, সাঘাটা উপজেলার শিমুল তাইড় গ্রামের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মোফাজ্জল হোসেন প্রতিদিন সকালে বোনারপাড়া থেকে সান্তাহারগামী লোকাল ট্রেনে ভিক্ষা করে যা আয় করেন তা দিয়েই চলে সংসার। কখনও কখনও সময় মতো স্টেশনে গিয়ে ট্রেন না পাওয়ায় অনাহারে থাকতে হয় তাকে।

 

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

এই সাইটের কোন লেখা কপি পেস্ট করা আইনত দন্ডনীয়