মনির হোসেন (শিশির) :
গাজীপুর সিটি করপোরশন নির্বাচনে মেয়র পদে বিজয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুন। আওয়ামী লীগের প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে ১৬ হাজার ১৯৭ ভোটে হারিয়েছেন তিনি। রাজনীতিতে পোড় খাওয়া আজমত উল্লা খানকে হারিয়ে এই শিল্প অঞ্চলের রাজনীতিতে চমক দেখালেন মা জায়েদা খাতুন।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) দিবাগত রাতে ফল ঘোষণার কেন্দ্র জেলা পরিষদ ভবনের বঙ্গতাজ অডিটোরিয়ামে ফলাফল পেয়ে উল্লাসে ভেঙে পড়েন জায়েদা খাতুনের সমর্থকরা। ফল ঘোষণার শুরু থেকেই বঙ্গতাজ অডিটোরিয়ামে উপস্থিত ছিলেন জায়েদা খাতুনের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম। সাথে ছিল কর্মী-সমর্থকরা।
সাধারণ গৃহিনী থেকে মেয়র পদে নির্বাচন করে প্রথমবারেই জয় ছিনিয়ে এনেছেন এই নারী। সাথে নজর কেড়েছেন সারাদেশের মানুষের। নারায়ণগঞ্জের সেলিনা হায়াৎ আইভীর পর তিনিই দ্বিতীয় নারী, যিনি দেশের কোনো সিটি করপোরেশনের নগর মাতা নির্বাচিত হলেন।
২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ ভোট পেয়ে গাজীপুরের নতুন নগর মাতা হয়েছেন সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীরের মা জায়েদা খাতুন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আজমত উল্লা নৌকা প্রতীক নিয়ে ২ লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ভোট পেয়েছেন। হাতপাখা প্রতীকে গাজী আতাউর রহমান ৪৫ হাজার ৩৫২ ভোট পেয়ে তৃতীয় হয়েছেন।
এ ছাড়া জাতীয় পার্টির প্রার্থী লাঙল প্রতীকে এম এম নিয়াজ উদ্দিন ১৬ হাজার ৩৬২ ভোট, গণফ্রন্টের প্রার্থী মাছ প্রতীকে আতিকুল ইসলাম ১৬ হাজার ৯৭৪ ভোট, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী গাজী আতাউর রহমান হাতপাখা প্রতীকে ৪৫ হাজার ৩৫২ ভোট, জাকের পার্টির প্রার্থী গোলাপ ফুল প্রতীকে মো. রাজু আহম্মেদ ৭ হাজার ২০৬ ভোট, ঘোড়া প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. হারুন-অর-রশীদ ২ হাজার ৪২৬ ভোট ও হাতি প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী সরকার শাহনুর ইসলাম পেয়েছেন ২৩ হাজার ২৬৫ ভোট।
এদিন কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা ছাড়াই গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ হয়। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা, মারামারি-হানাহানি বা কেন্দ্র থেকে এজেন্ট বের করে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটেনি। ভোটাররা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট দিতে পেরেছেন। ভোটের সার্বিক পরিবেশ নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন ভোটার এবং প্রার্থীরা।
এছাড়া ৫৭টি সাধারণ ওয়ার্ডে ২৪৫ জন এবং ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৭৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছিলেন। সবমিলিয়ে ৩৩১ জন ছিলেন চূড়ান্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে ফয়সাল আহমেদ সরকার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৪৮০টি এবং ভোটকক্ষ ৩৪৯৭টি। মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। তাদের মধ্যে পুরুষ ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২, নারী ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ এবং তৃতীয় লিঙ্গের ১৮ জন।
নির্বাচনে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা ১০ হাজার ৯৭০ জন। প্রিসাইডিং অফিসার ৪৮০, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার ৩৪৯৭ এবং পোলিং অফিসার ৬৯৯৪ জন।
এই সাইটের কোন লেখা কপি পেস্ট করা আইনত দন্ডনীয়
Leave a Reply