(গাজীপুর শ্রীপুরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি। গত কয়েক মাসে হত্যা সহ একাধিক মামলা, জমি সংক্রান্ত বিরোধ, থানার গোলঘরে বৈঠক, পুলিশের খামখেয়ালীভাব আর অহংকারসুলভ আচরণে ভুক্তভোগীরা হয়রানি হচ্ছে প্রতিনিয়ত এমনটাই অভিযোগ সবার।)
মাহবুব আলম :
সারাদেশে ধর্ষণের সয়লাবের পাশাপাশি কঠোর ধর্ষণ নিয়ন্ত্রণ আইন আশার কারণে প্রমাণ বিলুপ্ত করার নিমিত্তে দূর্বৃত্তরা শ্লীলতা হানি ও ধর্ষণ করার পর ভুক্তভোগীকে আগুনে পুড়িয়ে মেরে ফেলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গাজীপুর শ্রীপুরের চাওবন গ্রামে ১১ বছরের ফুটফুটে রিয়া মনির সাথে অশ্লীলতা করে শরীরে পেট্রোল ঢেলে দিয়েশালাই দিয়ে সিনেমার ভিলেনের মতো আগুন ধরিয়ে দিয়ে প্রকাশ্যে পালিয়ে যায় খুনীরা।
এই বিষয়ে রিয়া মনির বাবা মোঃ নজরুল ইসলাম শ্রীপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করলেও এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোন মামলা হয়নি। দৈনিক আমার প্রাণের বাংলাদেশের সাথে অফিসার ইনচার্জের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি এখন পর্যন্ত সত্যতা পাওয়া যায়নি, চুলার আগুন থেকে তার গায়ে আগুন লাগতে পারে বলে জানান তিনি। কিন্তু রিয়ার বাবার দাবী পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এর আগেও আমার মেয়েকে দূর্বৃত্তরা জানে মেরে ফেলার চেষ্টা করে। যার কারণে রিয়ার বাবা নজরুল ইসলাম শ্রীপুর থানায় ১০/০৬/২০২০ ইং একটি মামলা দায়ের করেন। যাহার নং- ২৮।
মামলার আসামীরা যথাক্রমে ১. মোঃ আব্দুল বাতেন (৪২), পিতা- মৃত জহির উদ্দিন, ২. মোঃ রকমত আলী (৪৫), পিতা- আঃ রশিদ, ৩. আশরফ আলী (৩৮), পিতা- আঃ সাহিদ, ৪. আলামীন (২২), পিতা- আঃ রশিদ, ৫. সালাম (৫৫), পিতা- মৃত জহির উদ্দিন, সর্বসাং- চাওবন, শ্রীপুর, গাজীপুরগণ সহ ৪-৫ জন বিবাদীদের বিরুদ্ধে এই মর্মে অভিযোগ দায়ের করিতেছি যে, বিবাদীগণ দীর্ঘদিন পূর্ব হইতে রিয়া মনিদের পরিবারের লোকজনের সাথে পারিবারিক ও জমি জমার বিষয় নিয়ে শত্রুতা পোষণ করিয়া প্রায়ই অযথা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ খুন জখমের হুমকি দিয়ে আসছিল বলে জানায় রিয়ার বাবা নজরুল ইসলাম।
তিনি আরো জানান, পরবর্তীতে বিজ্ঞ আদালত হইতে ১ ও ২ নং বিবাদীদ্বয় জামিনে বাড়ীতে এসে উক্ত মামলা প্রত্যাহার করিয়া আনার জন্য বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিয়া আসিতেছে। এরই ধারাবাহিকতায় বিগত ১১/১১/২০২০ ইং তারিখ দুপুর আনুমানিক ১২.৩০ মিনিটের সময় উল্লেখিত বিবাদীগণ পূর্ব পরিকল্পিতভাবে একে অপরের প্ররোচনায় যোগসাজশে দা, লাঠি, লোহার রড, পেট্রোল ইত্যাদি দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্রে সজ্জিত হইয়া বসত বাড়ীতে অনধিকার ভাবে প্রবেশ করিয়া আমার রিয়া মনিকে বাড়ীর উঠানে পাইয়া খুন জখমের উদ্দেশ্যে এলোপাতাড়ি কিল, ঘুষি, লাথি ও লাঠি দিয়া শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে।
তখন আমার মেয়ের ডাক চিৎকারে আমার বৃদ্ধা মা মোছাঃ মনোয়ারা খাতুন সহ আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে বিবাদীগণ তাহাদের খুন জখমের হুমকি দেয়। ঐ সময় উপস্থিত স্বাক্ষী আমার বৃদ্ধ মাতা- মনোয়ারা (৫৫), স্বামী- আঃ খালেক, প্রতিবেশী চাচী, আকলিমা (৪০), স্বামী- আঃ খালেক, আমেনা খাতুন (৩৫), স্বামী- হোসেন আলীদের সামনে তাদের হাতে থাকা প্লাষ্টিকের বোতলে থাকা পেট্রোল আমার মেয়ে রিয়া মনি (১১) এর শরীরে ঢেলে দেয় এবং দিয়েশালাই দিয়ে মেয়ের শরীরে আগুন লাগিয়ে দিয়ে দূর্বৃত্তরা দৌঁড়ে পালিয়ে যায়।
তখন আমার মেয়ে ডাক চিৎকার দিয়ে দৌঁড়ে বসত বাড়ীর উত্তর দিকে কলাক্ষেতে গিয়ে পড়ে যায়। ঐ সময় আমার মাতা ও প্রতিবেশী চাচীদের ডাক চিৎকারে আশপাশ হইতে লোকজন এগিয়ে এসে আমার মেয়ের শরীরের আগুন নিভানো হয়। সংবাদের ভিত্তিতে আমি বাড়ীতে আসিয়া মেয়ের অবস্থা মূমুর্ষ দেখিয়া স্থানীয় লোকজনদের সহযোগীতায় সিএনজি যোগে গাজীপুর সহিদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে যাই।
কর্তব্যরত ডাক্তার মেয়ের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা বার্ড ইউনিটে রেফার করিলে আমার মেয়েকে দ্রুত উক্ত হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার মেয়ের জখমের চিকিৎসা প্রদান করে এবং হাসপাতালে ভর্তি করেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১২/১১/২০২০ ইং তারিখ সকাল আনুমানিক ৬ ঘটিকার সময় মেয়ের মৃত্যু হলে আমি নজরুল ইসলাম শাহবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করি। ডায়েরী নং- ৭৫৯, তাং ১২/১১/২০২০ ইং।
বর্তমানে আমার মেয়ের হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দিলে বিষয়টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টায় বিবাদীরা তাদের প্রভাব খাটিয়ে থানা পুলিশকে ম্যানেজ করার ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র করছে। আমি নজরুল ইসলাম, রিয়া মনির বাবা আপনাদের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আকুল আবেদন জানাই আমার মেয়ের হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়ে যথাযথ বিচার করলে আমি তার নিকট এবং দেশবাসীর নিকট চিরকৃতজ্ঞ থাকবো।
এই সাইটের কোন লেখা কপি পেস্ট করা আইনত দন্ডনীয়
Leave a Reply