স্টাফ রিপোর্টারঃ
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলাধীন নিজড়া মাদ্রাসার সাথে লাগোয়া নিজড়া কবরস্থানের সীমানা প্রাচীরের মধ্যে দক্ষিন পাশে অবস্থিত রেনুকা কিন্ডারগার্টেন নামে একটি স্কুল ঘরের অপসারণ সংক্রান্ত বিষয়টিকে কেন্দ্র করে এলাকার মুসল্লীদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে। সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সর্বসম্মত সিদ্ধান্তক্রমে নিজড়া কবরস্থানের জায়গা নির্দিষ্টকরণ পূর্বক উত্তর, পশ্চিম ও দক্ষিন পাশে সীমানা প্রাচীর দেয়া হয়। কবরস্থানের সীমানা প্রাচীরের মধ্যে বর্তমানে স্কুলটি বিদ্যমান। স্কুলটিতে ২টি টিনের ঘর রয়েছে। এই ঘর দুটি অপসারণের বিষয়টিকে কেন্দ্র করে স্থানীয় মুসল্লীদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে। নিজড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আজিজুর রহমান সরদার এ প্রসঙ্গে বলেন, নিজড়া কবরস্থানের মধ্যে থাকা স্কুলটির অপসারণ করা হবে, সকলেই একমত। এটা শুধু সময় ও সুযোগের বিষয়। কবরস্থান কমিটি, স্থানীয় মুরব্বীগণ এবং স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক শফিকুল ইসলাম বদরের সাথে আলোচনা করে যতদ্রত সম্ভব স্কুলটিকে অন্য কোথাও স্থাপন করা হবে।
কবরস্থান কমিটির সম্পাদক ফায়েকুজ্জামান মিনা কবরস্থানের মধ্যে থাকা স্কুলের দুটি ঘর অপসারণ প্রসঙ্গে বলেন, বাংলাদেশ পুলিশে কর্মরত সাব ইন্সপেক্টর শফিকুল ইসলাম বদর যখন বেকার ছিলেন, তখন এই স্কুলটি করা হয়। এখন কবরস্থানের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়ায় কবরস্থান কমিটি স্কুলের দুটি ঘর অপসারণের বিষয়ে শফিকুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করার পর তিনিও ঘর দুটি অপসারণের বিষয়ে সম্মত হন, কিন্তু তিনি বার বার সময় নিচ্ছেন, ঘর দুটি অপসারণের কাজটি বাস্তবায়ন করছেন না। কবরস্থান কমিটির সদস্য আবুল মিনা বলেন, রেনুকা কিন্ডারগার্টেন স্কুলের ঘর দুটি কবরস্থানের জায়গায়, এটি স্থাপনের আগেই ভাবা উচিৎ ছিলো, কোথায় এবং কার জায়গায় স্কুলের ঘর দুটি তোলা হচ্ছে? তিনি আরো বলেন, আমরা এ কবরস্থানের জন্য এর পশ্চিম পাশে ১০ ফুট জায়গা ছেড়ে দিয়েছি।
তিনি কবরস্থান সীমানার মধ্যে থাকা স্কুলের ঘর দুটিকে যতদ্রত সম্ভব অপসারণের দাবি জানান। রেনুকা কিন্ডারগার্টেন স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক শফিকুল ইসলাম বদর কবরস্থানের সীমানার মধ্যে থাকা স্কুলের অপসারণ প্রসঙ্গে বলেন, প্রায় ২০/২২ বছর পূর্বে স্থানীয় মুরব্বীগণের সহযোগিতায় ছেলেমেয়েদের পড়ালেখার স্বার্থে রেনুকা কিন্ডারগার্টেন স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। সে সময় এখানে পুকুর ছিলো, অনেকদূর থেকে মাটি কিনে এনে জায়গাটি ভরাট করে স্কুলের জন্য দুটি টিনের ঘর স্থাপন করা হয়। তাছাড়া কবরস্থানের জায়গা তখন নির্দিষ্ট করা ছিলোনা, এখন কবরস্থানের জায়গা নির্দিষ্ট হওয়ার পর আমার স্কুলটি কবরস্থানের মধ্যে পড়ে গেছে। তিনি আরো বলেন, আমিও একজন মুসলমান, আমিও চাই কবরস্থান সীমানার মধ্যে থেকে স্কুলটি অন্য কোথাও সরিয়ে নিতে। এটাকে ইস্য-বানিয়ে অযথা পানি ঘোলা করার মতো কিছু নেই।
আমার দাবি শুধু একটাই, স্কুলটি করার সময় স্থানীয় মুরব্বীগণ যেভাবে আমাকে সহযোগিতা করেছিলেন, এখনো স্কুলটি অন্যত্র স্থাপন করার একটা জায়গা মুরব্বীগণ ঠিক করে দিক, যদি আমার ব্যক্তিগত জায়গায়তেও দেন, তাতে আমার কোনো আপত্তি নেই, আমি তাদের সহযোগিতা চাই, স্কুলটিকে বাঁচিয়ে রাখতে চাই আর কবরস্থানও নির্ধারিত জায়গায় সমুন্নত থাকুক। এলাকাবাসীরও দাবি, যতদ্রত সম্ভব এই স্কুল ঘরটিকে কবরস্থান থেকে সরিয়ে অন্য কোথাও স্থাপন করা হোক।
এই সাইটের কোন লেখা কপি পেস্ট করা আইনত দন্ডনীয়
Leave a Reply