সময়টা ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দের শেষের দিকে। সবেমাত্র স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে কলেজ জীবনে পদার্পণ করেছি। খুব ইচ্ছে হতো দেশ ও দশের পাশে দাঁড়ানোর। কিন্তু সে সার্মথ্যই বা ছিল কই। তবুও চেষ্টা করতাম অর্থনৈতিকভাবে কিছু করতে না পারলেও কথা দ্বারা যেনো দেশ ও দশের কোনো কাজে আসে। আমার দ্বারা কারো কোনো উপকার যদি নাও হয়, তবুও যেনো কারো কোনো ক্ষতি না হয় এটা সবসময় পাথেয় ছিল।
মনে হতো মাতৃভূমি ও ভাষা নিয়ে যদি কিছু করতে পারতাম। ভাবতাম মাতৃভূমি ও ভাষা দুটোই খুব কষ্টে অর্জিত। আমার জন্য যেনো এ ভাষা ও মাতৃভূমির অবমাননা না হয়। সোশাল মিডিয়ায় প্রায় সবাই বাংলিশ লেখতে ব্যস্ত। আমি চেষ্টা করতাম বাংলা লেখতে। এটা বেশ আনন্দের ছিল। কিন্তু মাঝে মধ্যে আমিও ভাষাকে যথাযথ সম্মান দিতে ব্যর্থ হয়েছি। বাংলিশ লিখেছি। তবে, বাংলিশ আমাকে পরিপূর্ণ তৃপ্তি দেয়নি।
একটা সময় আকাশচুম্বী স্বপ্ন দেখতে লাগলাম বাংলা ভাষা ও সাহিত্য চর্চা এবং বিশ্ব দরবারে বাংলা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কিছু একটা করতে হবে। যেকোনো মূল্যে স্বপ্ন পূরণ করতেই হবে। সে সময়টা সুন্দর ও পরিপাটি একটি বাক্য লেখতেও জানতাম না। কিন্তু, শখের বসে প্রায়ই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেইসবুকে পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত বিভিন্ন সংবাদের মন্তব্য লেখতাম। এভাবেই টুকটাক লেখা চলতে থাকে। আর এ থেকে ভাষার প্রতি ভালোবাসা বাড়তে থাকে৷
তারপর, ভাষার স্বপ্নটাকে বাস্তবে রূপ দিতে মরিয়া হয়ে উঠি। আর কলেজ জীবন থেকেই সূচনা করি ‘ভোরের পাখি সাহিত্য পরিষদ’ নামে একটি সাহিত্য সংগঠন। এটি অনলাইন ভিত্তিক চলতে থাকে কিছু দিন। এতে আত্মতৃপ্তি পাই না। যে কারণে অফলাইনে কিছু একটা করতে মনস্থির করি। কিন্তু, এজন্য তেমন সাধ্য ও সুযোগ না থাকায় তেমন কোনো সমর্থনও পাইনি। ফলে, অফলাইনে কাজ করতে পারিনি তবুও অনলাইনে কার্যক্রম চালিয়ে যেতে থাকি।
পরবর্তী, ২১ ফেব্রুয়ারী ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে ‘ভোরের পাখি সাহিত্য পরিষদ’ সংগঠনটিকে বাতিল করে ‘জননী বাংলা সাহিত্য সংসদ’ নামে নতুন একটি সংগঠনের যাত্রা শুরু করি৷ সংগঠনটির লক্ষ্য ও প্রধান কার্যক্রম বাংলা ভাষা ও সাহিত্য নিয়ে কাজ করার পাশাপাশি শিক্ষা ও সেবামূলক কাজে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ। এটির অনলাইন ও অফলাইন উভয় কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
সংগঠনটিকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য সংগঠনটির সূচনালগ্নে বেশ কয়েকটি মিটিং করি গুটিকয়েক বন্ধু ও অনুজদের নিয়ে। বন্ধুদের মধ্যে: আমিনুর ইসলাম ( Md Aminur Islam) জাকারিয়া আহম্মেদ ( Zakaria Ahammed Jihadi) , মোখলেসুর রহমান ( Mukhlesur Rahaman) স্বপন মাহমুদ , মো. মাসুদ রানা ( Masud Rana ) , মো. শামীম ( Md Shamim) , মিল্লাত হোসেন ( Millat Hussen), তাইজুল আহমেদ টারজান ( Taijul Ahmed Tarjan ) ; অনুজদের মধ্যে: কাউসার ইবনে জামান ( Kawsar Ibne Zaman) , আকাশ ইসলাম ( Md Akash Islam) , সাখাওয়াত হোসেন স্বপন ( Sakhawat Hosen Shopon) প্রমুখ উপস্থিত ছিল সেসব মিটিং-এ। এভাবেই বহু হোঁচট খেয়েও সামনের দিকে চলতে থাকি প্রিয় সংগঠন ❝জননী বাংলা সাহিত্য সংসদ❞-কে ভালোবেসে।
সংগঠনের সাথে পরবর্তীতে যুক্ত হয়ে সংগঠনকে অনেকটা ভালোবেসেছেন প্রিয় খায়রুল আলম নয়ন ( Khairul Alam Nayon) , আনিসুর রহমান ( Anis Mahmud) মাহদিয়া তামান্না দিশা ( Mahdia Tamanna Disha) ,
সোহম আহম্মেদ সোহেল ( Shohom Ahammed Shuhel) ও বড়ো ভাই মো. রঞ্জু ( MD Ranzu Mia) সহ প্রমুখ। তাদের ভালোবাসা আমাকে তাদের প্রতি চিরকৃতজ্ঞ করে তোলেছে।
সংগঠনটি পরিচালনা করতে গিয়ে যাঁদের ভালোবাসা আমাকে অনেকটা কর্মঠ করে তোলেছেন তাঁদের প্রতি আমি চিরকৃতজ্ঞ।
বিশেষভাবে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি:
• মো. ফরহাদ হোসেন ( Farhad Hossen) , সহকারী প্রধান শিক্ষক, আদ্রা আব্দুল মান্নান উচ্চ বিদ্যালয়।
• মহসিন আলম ( Mohsin Alam) , প্রভাষক, পয়লা বানিয়াবাড়ী ফাজিল মাদ্রাসা।
• মাসুদুল হাসান (সুমন হাজারী), ( Sumon Hazari) সহকারী অধ্যাপক, হাজরাবাড়ী সিরাজুল হক কলেজ,
• সেলিনা পাতা ( Pathor Kuchi Pata) , প্রভাষক, হাজরাবাড়ী সিরাজুল হক কলেজ।
• শাহ্ জামাল ( Shah Jamal) , সভাপতি, রিপোর্টর্স ইউনিটি, মেলান্দহ।
• সংবাদকর্মী মোমিনুল ইসলাম, ( Mominul Islam) জামালপুর জেলা প্রতিনিধি, দৈনিক আমার প্রাণের বাংলাদেশ।
মহোদয়গণদের প্রতি ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি তাঁদের কাছে, যাঁদের নাম স্মরণ করতে ব্যর্থ হয়েছি৷
পরিশেষে, সকলের নেক হায়াত ও সুস্বাস্থ্য প্রার্থনা করছি। সেই সাথে সকলের দোয়া, ভালোবাসা ও সমর্থন প্রত্যাশা করে শেষ করছি৷ আল্লাহ হাফেজ।
লেখক : শাকিল আহম্মেদ, প্রতিষ্ঠাতা, জননী বাংলা সাহিত্য সংসদ।
এই সাইটের কোন লেখা কপি পেস্ট করা আইনত দন্ডনীয়
Leave a Reply