শুক্রবার, ০২ জুন ২০২৩, ১১:০৬ পূর্বাহ্ন

জলঢাকায় গোপনে বই বিক্রির অভিযোগ শিক্ষক ও কর্মচারীর বিরুদ্ধে

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ১০ এপ্রিল, ২০২৩
  • ২২ Time View

 

 

 

নবিজুল ইসলাম নবীন, নীলফামারী প্রতিনিধি :

 

কোনরুপ নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের উচ্ছিষ্ট নতুন পুরাতন ১৩/১৪ বস্তা বিদ্যাপিঠ বই কালো বাজারে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে সহকারী শিক্ষক ও পিয়নের বিরুদ্ধে। এছাড়াও অবকাঠামো পুরাতন আসবাবপত্রসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিপুল সংখ্যক বই গোপনে বিক্রি করা হলেও এখন পর্যন্ত প্রধান শিক্ষক তাদের বিরুদ্ধে কার্যকারী কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।

জানা যায়, মেয়াদোত্তীর্ণ এ্যাডহক কমিটি থাকা, প্রধান শিক্ষকের অনুপস্থিতি এবং ২৬শে মার্চ জাতীয় কর্মসূচীতে স্কুল বন্ধের দিনটি কাজে লাগিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বই কালো বাজারে বিক্রি করা হয়েছে। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি ঘটেছে নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার কৈমারী ইউনিয়নের রথের বাজার সংলগ্ন বালাপাড়া দ্বী-মুখী উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। অভিযোগ উঠেছে গতমাসের ২৬শে মার্চ জাতীয় দিবস উপলক্ষে স্কুল বন্ধের দিন বিকালে অত্যান্ত গোপনীয়তার সহিত কৌশলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ১৩/১৪ বস্তা বই এবং কিছু আসবাবপত্র কালো বাজারে বিক্রি করা হয়েছে।

এ কাজে সহায়তা করেছেন অত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সহকারী শিক্ষক বিমল চন্দ্র রায়, শিক্ষক নাজমুল ইসলাম, শিক্ষক প্রতাপ চন্দ্র রায় ও অফিস পিয়ন গুরুদাস চন্দ্র রায়। বিক্রিত বই গুলোর কেজি দরে বিক্রি করা হলেও প্রায় দেড়টন হবে। যার বাজার মুল্য প্রায় ৩৫ হাজার টাকার উপরে ! এছাড়া অবকাঠামো চেয়ার টেবিল রয়েছে। বই বিক্রির বিষয়ে অফিস পিয়ন গুরুদাশ চন্দ্র রায় স্বীকার করে দায়সারা বক্তব্যে বলেন, বই তো কম বেশি বিক্রি করা হয়েছে। প্রধান শিক্ষক ছিল না মাষ্টারেরা বিক্রি করছে। কে নিলো তা সঠিক জানি না।

অন্যদিক অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক নাজমুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, একটা বিদ্যালয়ে ১৩ বস্তা বই কিভাবে হেড মাষ্টার রাখে আগে হেড মাষ্টারকে জিগ্যেস করেন। আর বই বিক্রির সময় স্কুলের কে দেখেছে সেটা আগে প্রমান করেন তারপর আমাকে ফোন দেন আমি সহযোগিতা করবো। বই বিক্রির সঙ্গে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে জড়িত সহকারী শিক্ষক বিমল চন্দ্র রায়ের মন্তব্যের জন্য তার মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেনি।

অন্যদিকে বই বিক্রির বিষয়টি স্বীকার করে বালাপাড়া দ্বী-মুখী উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দ্বীনবন্ধু রায় বলেন, আমার স্কুলের গোডাউনে ১৩ থেকে ১৪ বস্তা পুরনো বই ছিল। পূর্বের হেড মাষ্টার প্লাস্টিকের বস্তায় করে সংরক্ষণে রেখেছিল। আমি ইন্ডিয়া থেকে এসে শুনেছি আমার বিদ্যালয়ের সহকারী ৩ শিক্ষক ও পিয়ন মিলে এরা বই বিক্রি করেছে।আমার অবর্তমানে এমনটি হয়েছে তবে আমি তাদের বলেছি তারা স্বীকার করেছে। পিয়নকে আমি বলি চাবী তো তোমার কাছে থাকে এমনটি হলো কেন। এমন প্রশ্নে পিয়ন জানান, স্যারেরা জোরপূর্বক চাবি নিয়ে বই বিক্রি করেছে। প্রধান শিক্ষক আরো বলেন, এ বিষয়ে জবাবদীহিতার আওতায় আনা হবে বই বিক্রির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের।

অন্যদিকে সাবেক এডহক কমিটির সভাপতি বাবু নিরঞ্জন রায় রঞ্জু গণমাধ্যমকে জানান, বর্তমান কমিটির মেয়াদ না থাকা, বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের অনুপস্থিতি ও জাতীয় দিবসটি কাজে লাগিয়ে কোনরুপ নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে কিছু শিক্ষক মিলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বই বিক্রি করেছে। এটি দুঃখজনক। আমি ম্যানেজিং কমিটিতে আসলে বই বিক্রির ৫ টাকার বদলে ২৫ টাকা আদায় করে প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন কাজে ব্যয় করবো।

এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার চঞ্চল কুমার ভৌমিক এ প্রতিবেদককে বলেন, ওই বিদ্যালয়ে গোপনে বই বিক্রি হয়েছে তা আমার জানা নেই। তবে এমনটি হলে তা নিয়ম বহির্ভূত হয়েছে। এভাবে বই বিক্রির কোন সুযোগ নেই। লিখিত ভাবে পদক্ষেপ নিয়ে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

 

 

 

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

এই সাইটের কোন লেখা কপি পেস্ট করা আইনত দন্ডনীয়