প্রাণের বাংলাদেশ ডেস্ক :
সাংবাদিক জাতির বিবেক, যাদেরকে তুলনা করা হয় আয়নার সাথে। কিন্তু বর্তমান সময়ে এক শ্রেণির অশিক্ষিত জনবল অন্যকোন পেশায় নিজেকে চালাতে না পেরে সাংবাদিকতায় কোনভাবে প্রবেশ করে এই পেশাকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে।
জামালপুর জেলায় এখন কথিত অশিক্ষিত সাংবাদিক ব্যাঙের ছাতার মতো ছড়িয়ে আছে। সকাল হলেই তারা মোবাইল ও ক্যামেরা এবং ক্যামেরার স্ট্যান্ড নিয়ে দিনমজুরের মতো বেরিয়ে পড়ে সাধারণ জনগণকে ব্ল্যাক মেইল করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার প্রত্যাশায়। জামালপুর সহ মেলান্দহে এরকম সাংবাদিক প্রায় একশত ছুই ছুই।
এ বিষয় নিয়ে জামালপুরের পেশাদার সাংবাদিকদের সাথে কথা হলে তারা জানায়, জামালপুরের প্রকৃত সাংবাদিকরা এখন অপসাংবাদিকদের দৌঁরাত্ম্যের জন্য মুখ লুকিয়ে চলে। এসব ভুইফোঁড় নামধারী সাংবাদিকের কারণে মেলান্দহ সহ জামালপুরবাসী অতিষ্ঠ। তাদের যন্ত্রণায় জামালপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলাবাসী তাদের উপর উত্তেজিত ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। কোন এলাকায় যদি পারিবারিকভাবে নিজেদের মধ্যে সালিশ বিচার হয়, যেখানে সাংবাদিক আসার কোন প্রয়োজনই নেই, সেখানেও কিছু নামধারী কথিত সাংবাদিক এসে হাজির হয়। তাদের কর্মকান্ডে এলাকার জনগণ এসব সাংবাদিককে ভিক্ষুক সাংবাদিক নামে ডাকে।
তাদের এলাকা বা সমাজে নেই কোন মর্যাদা, নেই কোন শিক্ষাগত যোগ্যতা, নেই সংবাদ লিখে প্রকাশ করার মতো কোন যোগ্যতা, কখনো কোন সময় তাদের জনস্বার্থে একটি সংবাদও প্রকাশ করতে দেখা যায়না, সারাদিন টুই টুই করে বাইক দিয়ে একসাথে কয়েকজন করে ঘুরে অনেক সময় এদের সাথে দু’একজন মহিলা সাংবাদিকও দেখা যায়। তাদের একটাই কাজ কোথায় ধান্দা আছে, কোথায় ফিটিং দেওয়া যায় এবং কাকে হয়রানি করে পকেট ভারী করা যায়। শুধু সারাদিন ধান্দা আর ধান্দা, কোথায় কিভাবে ধান্দা করা যায় সেই লক্ষ্যেই থাকে তারা।
তেমনি একটি ধান্দার খোজে যায়, জামালপুর মেলান্দহ উপজেলার ১০ নং ঝাউগড়া ইউনিয়নের সাইনতলা গ্রামে। সেখানে সোহরাব হোসেনের বাড়ীতে পারিবারিক একটি কলহের সৃষ্টি হয়। সেখানে কিছু কথিত নামধারী সাংবাদিক এসে হাজির হয়। তাদের মধ্যে অন্যতম- সামিউল ইসলাম, বাড়ী পশ্চিম ঝাউগড়া (পলাশী), তার সহযোগী হিসেবে থাকে- সোহেল ও বেলাল গাজী। সামিউল সোহরাব হোসেনকে তার একটি ভিজিটিং কার্ড দেয়, কার্ডে দেখা যায় সে একসাথে তিনটি পত্রিকায় কাজ করে ১) দেশ যুগান্তর, ২) সংবাদ বাংলাদেশের মুখপত্র, ৩) জামালপুর দিনকাল। কথিত সাংবাদিক পারিবারিক বিষয়ে জানতে চাইলে সোহরাব হোসেন বলেন, ভাই এটি আমাদের পারিবারিক বিষয়, আমরা নিজেরাই সমাধান করে ফেলেছি। এখানে আপনাদেরকে বলার কিছু নেই। কথিত সামিউল বলে সাংবাদিকরা আসছে তাদের ঠেকান, সোহরাব হোসেন বলে কিভাবে ঠেকাবো? সামিউল বলে আপনাদের জানা নেই, সাংবাদিকদের কিভাবে ঠেকাতে হয়। সোহরাব হোসেন বলেন, না ভাই আমার জানা নেই। সোহরাব হোসেনের উত্তর শুনে তারা চলে যাওয়ার পথে একটু দূরে গিয়ে সামিউল বলে আমরাও তোকে দেখে নিবো, তুই কত বড় সাংবাদিক! এই বলে হুমকি প্রদান করে তারা চলে যায়।
তাছাড়া তাদের সম্পর্কে আরো জানা যায়, তারা এলাকার বিভিন্ন দোকানে ফিটিং দিয়ে দোকানদার এবং বিভিন্ন সাধারণ লোককে পুলিশি হয়রানির ভয় দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে ধান্দাবাজি করে টাকা পয়সা হাতিয়ে নেয়। এই কথিত সাংবাদিক সামিউলের বিরুদ্ধে আরোও অনেক ভুক্তভোগীর স্বাক্ষাৎকার ও অভিযোগ রয়েছে।
অবৈধ কারখানা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বাল্য বিবাহ সহ যেকোন অবৈধ বিষয় জাতির সামনে প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে তুলে না ধরে এসব সাংবাদিকরা সব জায়গায় হাজির হলেও নিজেকে উপস্থাপন করে আমাকে ম্যানেজ করলেই সব ঠিক। এরকম অপসাংবাদিকে ভরে গেছে দেশ।
রাজধানীর ঢাকা সহ আশেপাশের জেলায় দেখা যায়, একই চিত্র। সারাদেশে মূলধারার সাংবাদিকরা ভুগছে মানসিক বিষন্নতায়। বর্তমান সরকার প্রকৃত সাংবাদিকদের একত্রিত করে একটি সুন্দর আইন প্রণয়ন করার চেষ্টা করছে। আগামী বছর গুলোতে প্রকৃত সাংবাদিকরা পাবে তাদের হারানো ঐতিহ্য ফিরে। সকল অপসাংবাদিকতা হবে বন্ধ। এমনটাই দাবী সুশীল সমাজের।
এই সাইটের কোন লেখা কপি পেস্ট করা আইনত দন্ডনীয়
Leave a Reply