আব্দুল্লাহ আল মামুন, ঝিনাইদহ:
ঝিনাইদহে হাটে বাজারে বিক্রয় হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের অতিথি পাখি। আইন থাকলেও যথারিতী প্রয়োগ হচ্ছে না । জেলার বিভিন্ন বিল, হাওড়, বাউড় ও নদী নালায় এখন অতিথি পাখিরা আসতে শুরু করেছে। অর্থলুভী সুযোগ সন্ধানী এক শ্রেণীর শৌখিন ও পেশাদার পাখিশিকারিরা বন্দুক, বিষটোপ, জাল ও বিভিন্ন ধরনের ফাঁদ পেতে এসব পাখি শিকার করে বাজারে বিক্রয় করছে। ১৯৭৪ সালে বন্য প্রানী রক্ষা আইন ও ২০১২ সালে বন্য প্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইনে পাখি শিকারে দন্ডের বিধান রয়েছে। এই আইনে উল্লেখ আছে পাখি শিকার বা নিধনের সর্বোচ্ছ শাস্তি ১বছর কারাদন্ড ও ১ লক্ষ নগত টাকা জরিমানা। কিন্ত বাস্তবে এই আইনের কোন প্রয়োগ নেই।
ঝিনাইদহের হরিনাকুন্ডু, শৈলকুপা, মহেশপুর , কোটচাদপুর, কালীগঞ্জ ও সদর উপজেলার বিভিন্ন বিলে এখন ঝাকে, ঝাকে অতিথি পাখি আসতে শুরু করেছে । সেখানে প্রকাশ্যে অতিথি পাখি শিকার করা হচ্ছে। শুক্রবার সদর উপজেলার ডাকবাংলা বাজারে পাখি বিক্রয় হচ্ছে এমন সংবাদের পেয়ে সেখানে গিয়ে দেখা গেছে পাখি বিক্রয় হচ্ছে। পাখি বিক্রয় কারিদের একজনকে পাওয়া গেলেও বাকিরা ততক্ষণে ৮০/৯০ টি বিভিন্ন জাতের পাখি বিক্রয় করে চলে গেছে। এই পাখি শিকার করতে মানুষ রাতে জাল পেতে রাখে। পরের দিন সকালে জেলার বিভিন্ন বাজারে বিক্রয় করে।
দৌলতপুর ইউনিয়নের পাখি শিকারী জহিরুল ইসলাম জানায়, এই পাখি রাতে বিল থেতে জাল দিয়ে ধরা হয়। আজ বাজারে কাইয়ুম পাখি ৯টি কাদা খোচা ১২ টি আনা হয়েছে। কাইয়ুম পাখির দাম ৩০০/ ৩৫০ টাকা বিক্রয় করা হয়েছে। তিনি জানান এই পাখি ধরে তাদের সংসার চলে।
ঝিনাইদহ পরিবেশ ও জীববৈচিত্র রক্ষা কমিটির সভাপতি মাসুদ আহাম্মেদ সঞ্জু জানান, জেলার বিভিন্ন বিল বাওড়ে হাজার হাজার অতিথি পাখি এসেছে। আমাদের দেশের বিভিন্ন বিলে শীতের শুরুতেই বিলের পানি কমতে শুরু করে আর এসময় অল্প পানিতে খাবার সংগ্রহের জন্য অনেক দেশি বিদেশি অতিথি পাখি আসে। এইসব পাখি যেন শিকার না করে সেই দিকে কর্তপক্ষের মনিটারিং করা উচিত।
সাধুহাটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কাজি নাজীর উদ্দীন জানান পাখি নিধন কোন মতেই গ্রহন যোগ্য নয়। আমার ইউনিয়নে কেউ যদি এমন অন্যায় পাখি শিকার করে তা বাজারে বিক্রয় করে তার যেন শান্তি হয় আমি সে ব্যবস্থ করবো। আর প্রশাসনের অনুরোধ করবো হাট বাজারে কেউ পাখি বিক্রয় করতে এলে তাকে বন্য প্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইনে বিচার করার আহবান করছি।
ঝিনাইদহ মৎস্য ও প্রাণি সম্পদের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. মোঃ হাফিজুর রহমান জানান, পাখি শিকার করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। ১৯৭৪ সালে বন্য প্রানী রক্ষা আইন ও ২০১২ সালে বন্য প্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইনে পাখি শিকারে দন্ডের বিধান রয়েছে। এই আইনে উল্লেখ আছে পাখি শিকার বা নিধনের সর্বোচ্ছ শাস্তি ১বছর কারাদন্ড ও ১ লক্ষ নগত টাকা জরিমানা। কিন্তু এই আইন যথাযথ প্রয়োগ না হওয়ায় পাখি শিকার বন্ধ হচ্ছে না। তবে আমাদের কাছে সঠিক তথ্য দিয়ে সহযোগীতা করলে আমরা সাথে সাথে তার ব্যবস্থা নিব। সেই সাথে এলাকার সাধারণ ব্যাক্তিরা যদি সচেতন হয় তাহলে এই পাখি শিকার অনেকটাই বন্ধ হয়ে যাবে।
এই সাইটের কোন লেখা কপি পেস্ট করা আইনত দন্ডনীয়
Leave a Reply