সোমবার, ২০ মার্চ ২০২৩, ০৩:৫০ অপরাহ্ন

টাঙ্গাইলে ইটভাটার বিষাক্ত ধোঁয়ায় পুড়ল কৃষকের স্বপ্ন

Reporter Name
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ৭ মে, ২০২০
  • ২৩ Time View

 

আ: রশিদ তালুকদার, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি:

‘ধারদেনা কইরা তিন বিঘা জমিতে ধান বুনছিলাম, ভাটার গ্যাসে ধান পুইড়া আমার সব শেষ অইয়া গেছে।’ আক্ষেপ করে কথাগুলো বলেন টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার চানতারা গ্রামের ওয়াহেদ আলী। তার মতো অনেক কৃষকের স্বপ্ন পুড়েছে ভাটা থেকে নির্গত বিষাক্ত গ্যাসে। পুড়ে গেছে এই এলাকার ১০০ বিঘা জমির বোরো ধান। এ ছাড়া বিষাক্ত এ গ্যাসের প্রভাব পড়েছে এলাকার সব ধরনের গাছের ওপরও। তাই এলাকার শতাধিক কৃষক স্বাক্ষর করে ক্ষতিপূরণ চেয়ে গতকাল মঙ্গলবার ইউএনও এবং উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন।

চানতারা গ্রামে গড়ে উঠেছে ৯টি ইটভাটা। সবগুলোই দুই বা তিন ফসলি জমির ওপর। যে ধানগুলো পুড়ে গেছে, তার পাশেই নূপুর বিকস নামে একটি ইটভাটা। গত শনিবার সকালে ইট পোড়ানোর কাজে সংশ্নিষ্ট ব্যক্তিরা ওই ভাটায় জমে থাকা বিষাক্ত গ্যাস ছেড়ে দেন। গ্যাস ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এলাকার বাতাস উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ওই বাতাসে ধানসহ অন্যান্য গাছের পাতা পুড়ে যাচ্ছে।

কৃষকরা জানান, তাদের প্রায় ১০০ বিঘা জমির ধান পুড়ে গেছে। বিষয়টি তারা ভাটামালিকদের জানালে তারা কোনো ক্ষতিপূরণ দিতে পারবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে। কৃষক জয়নাল আবেদিন জানান, ব্রি-২৯ জাতের ওই ধান কিছুদিন পরই কাটা যেত। ধান তো পুড়েছেই, সঙ্গে অন্যান্য গাছের কাঁচা পাতাও ঝরে পড়ছে। এ নিয়ে এলাকায় কৃষকদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ইটভাটা শ্রমিক জানান, কয়লা দিয়ে ইট পোড়ালে কিলিনে গ্যাসের সৃষ্টি হয়। সব ইট পোড়ানো যখন শেষ হয়, তখন ওই গ্যাস তিন-চার দিন পর ধীরে ধীরে ছেড়ে দিতে হয়। মনে হচ্ছে ভাটা মালিকরা একসঙ্গে সব গ্যাস ছেড়ে দিয়েছে। তাই ফসলের ক্ষতি হয়েছে।

নূপুর ব্রিক্সের মালিক জানান, দু-একজন মালিক ক্ষতিপূরণ দিতে রাজি থাকলেও বেশিরভাগই এর পক্ষে নন।

উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা দিলশাদ জাহান বলেন, ভাটার গ্যাসে ধান পুড়ে যাওয়ার বিষয়টি উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তার মাধ্যমে জেনেছি। বিষয়টি নিয়ে ইউএনওর সঙ্গে কথা বলব।

উপজেলা চেয়ারম্যান মো. শহিদুল ইসলাম লেবু বলেন, কৃষকের শেষ সম্বল এই ধান। করোনার কারণে এমনিতেই তারা অসহায়। তাই আমি আশা করি, মালিকপক্ষ ক্ষতিপূরণ দিয়ে দেবে।

এ বিষয়ে ঘাটাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অঞ্জন কুমার সরকার বলেন, অভিযোগ তদন্ত করা হবে। অভিযোগ সত্য হলে অবশ্যই কৃষককে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

 

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

এই সাইটের কোন লেখা কপি পেস্ট করা আইনত দন্ডনীয়