শুক্রবার, ৩১ মার্চ ২০২৩, ০৭:২৩ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা করলে তার ক্ষতি হবে না: শাজাহান খান আগের মতোই রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আরেকটি গভীর ষড়যন্ত্র হয়েছে: হানিফ হিন্দি সিনেমায় নৈতিকতা-মূল্যবোধের অভাব রয়েছে: কাজল যার আইনি প্যাঁচে অভিযুক্ত হলেন ট্রাম্প শামসুজ্জামানের মুক্তির দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ দেশে খাদ্যের অভাব নেই: শিক্ষামন্ত্রী রাজধানীর উত্তরখানে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে চার প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা রামনা ইউনিয়ন প্রবাসী সংগঠনের ইফতার সামগ্রী বিতরণ কার্যক্রম সৌদি আরবে সাময়িকভাবে ভারত থেকে চিংড়ি আমদানি নিষিদ্ধ অন্য মামলায় শামসুজ্জামানকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

টাঙ্গাইলে উপহারের ঘরে থাকতে পারছেন না সুবিধাভোগীরা

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ২২ জুন, ২০২১
  • ২০ Time View

 

 

আ: রশিদ তালুকদার, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি :

 

টাঙ্গাইলে দ্বিতীয় পর্যায়ে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহারের ঘর বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর আগে প্রথম পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া জেলার ২০০ ঘরে বসবাসের কোনো সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হয়নি। ঘরগুলোতে এখন পর্যন্ত বিদ্যুৎ, পানি ও নিরাপত্তা বেষ্টনী গড়ে ওঠেনি। ফলে সেখানে থাকতে পারছেন না সুবিধাভোগীরা। অনেক জায়গায় ঘরগুলো খালি পড়ে আছে। আবার যে সকল সুবিধাভোগী ঘরগুলোতে বসবাস করছেন রাতে তাদের অন্ধকারে থাকতে হচ্ছে।

জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ‘মুজিববর্ষের অঙ্গীকার, গৃহহীন থাকবে না একটি পরিবার’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে হতদরিদ্র, অসহায় ও গরিব গৃহহীন মানুষের মাঝে দুই শতাংশ জমিসহ আধা পাকা ঘর উপহার দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারই ধারাবাহিকতায় জেলায় প্রথম পর্যায়ে দুই হাজার ২০০ পরিবারের মাঝে ঘর হস্তান্তর করা হয়। কিন্তু ঘর উপহার পেলেও অনেক এলাকায় সেখানে বসবাস শুরু করেননি উপকারভোগী।

জানা গেছে, প্রথম পর্যায়ের ঘরগুলো উদ্বোধনের ছয় মাস অতিবাহিত হলেও টাঙ্গাইল সদর উপজেলা ও কালিহাতী উপজেলার প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরগুলোতে মানুষজন এখনও উঠেনি।

স্থানীয়রা জানান, বসবাসের উপযোগী না হওয়ায় ঘরগুলোতে স্থানীয় মাদকসেবীরা আড্ডা ও জুয়ার আসর বসায়। এছাড়াও ধুলা, বালু, ময়লা-আবর্জনা পড়ে রয়েছে ঘরগুলোতে।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, প্রথম পর্যায়ে সদর উপজেলার চিলাবাড়িতে ৪৯টি, দাইন্যায় ৩টি, রসুলপুরে ৪৫টি, গালায় ১৭টি, মগড়ায় ৫০টি, ঘারিন্দাতে ৭টি, করটিয়ায় ১০টি, ছিলিমপুরে ১০টি, পোড়াবাড়ীতে ২৩টি, কাকুয়ায় ২টি, হুগড়ায় ২টি, কাতুলীতে ৩টি, মাহমুদনগরে ৪টি ও পৌরসভায় ৩টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে।

সরেজমিনে সদর উপজেলার রসুলপুর ও চিলাবাড়ীতে গিয়ে দেখা যায়, ঘরগুলোর নির্মাণ কাজ শেষ। কোথাও কোথাও এখনও রঙয়ের কাজ বাকি রয়েছে। ঘরগুলো নোংরা। সেখানে জুয়া খেলার তাস, মাদক সেবনের সামগ্রী পড়ে রয়েছে। টয়লেটগুলো অপরিষ্কার, সারিবদ্ধ ঘরের সামনে পানি জমে রয়েছে। কোনো কোনো সেফটিক ট্যাংকের ঢাকনাও লাগানো হয়নি। উঠানের গাছ কাটা হলেও বড় বড় শিকড় এখনো অপসারণ করা হয়নি।

স্থানীয়রা জানান, উপকারভোগীরা বসবাস না করায় ঘরগুলোর এই অবস্থা। গত বুধবার (১৬ জুন) বিদ্যুতের খুঁটি লাগানো হলেও বিদ্যুতের তার ও সংযোগ দেওয়া হয়নি। কোনো ঘরেই বিদ্যুতের তার, বাল্ব ও সুইচ লাগানো হয়নি।

এছাড়া কালিহাতী উপজেলার রসুলপুরেও একই চিত্র দেখা গেছে। সেখানেও এখন পর্যন্ত কেউ ঘরে ওঠেনি। আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরগুলো সারি সারিভাবে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে থাকলেও মানুষ শূন্য গুচ্ছগ্রামটি। সেখানে বিদ্যুতের খুঁটি লাগানো হলেও টাঙানো হয়নি তার। এছাড়া বিশুদ্ধ খাবার পানির জন্য টিউবওয়েল বসানো হয়নি। ফলে এক রকম পরিত্যক্ত হিসেবেই পড়ে রয়েছে ঘরগুলো।

প্রথম পর্যায়ে দেওয়া ঘরগুলোতে থাকার সুফল না পেলেও জেলায় দ্বিতীয় পর্যায়ে নতুন করে ঘর ও জমি পাচ্ছে আরও ১১৩০টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার। ঘর নির্মাণের সকল কাজ প্রায় সম্পন্ন। এখন শুধুই প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের অপেক্ষা।

রূপচাঁন শেখ নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, চিলাবাড়ী গ্রামের ঘরগুলোতে কেউ না থাকায় রাতে আড্ডা ও জুয়ার আসর বসে। ছয় মাস আগে শুনছিলাম ঘরে থাকা শুরু করবে গৃহহীনরা। তবে এখনও কেউ থাকছে না।

সদর উপজেলার দাইন্যা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লাভলু মিয়া লাভু বলেন, ইউনিয়নে কতজন উপকারভোগীর মাঝে ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে তার সঠিক তালিকা আমার কাছে নাই। ঘরের তালিকা তৈরিতেও আমাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা করা হয়নি। কবে ঘর দিবে, কাকে দিবে, কোথায় দিবে তাও জানি না। আমাদের কাছ থেকে কোনো নামও নেয়নি, তালিকাও দেয়নি।

গালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাজ কুমার বলেন, প্রথমে ইউপি মেম্বার, ভূমি অফিসের কর্মকর্তাসহ স্থানীয়দের সহযোগিতায় যে তালিকা করেছিলাম পরবর্তীতে সেই তালিকা রাখা হয়নি। যারা স্লুইচ গেট ও খাস জমিতে বসবাস করে এবং যাদের অগ্রাধিকার থাকার কথা তাদের নাম তালিকায় রাখা হয়নি। ছয় মাস অতিবাহিত হলেও আমার ইউনিয়নে উপকারভোগীরা এখনও ঘরে থাকতে পারছে না।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রানুয়ারা খাতুন জানান, যে সময় প্রথম পর্যায়ের ঘরগুলো উদ্বোধন করা হয় ওই সময় আমি এখানে ছিলাম না। শুনেছি সদরের বরাদ্দগুলো সবার শেষে এসেছে। সদর উপজেলায় প্রথম পর্যায়ে ২২৮টি ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। কাজ কিছুটা বাকি থাকায় এখন উপকারভোগীদের ওঠানো হয়নি।

টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক ড. মো. আতাউল গনি জানান, বিদ্যুৎ সংযোগ ও টিউবওয়েল নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় উপকারভোগীরা ঘরে থাকতে পারেননি। তবে বিদ্যুতের কাজ চলছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে উপকারভোগীরা ঘরে থাকতে পারবেন। জেলায় একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না। পর্যায়ক্রমে জেলার সকল অসহায় গৃহহীনকে ঘর দেওয়া হবে।

 

 

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

এই সাইটের কোন লেখা কপি পেস্ট করা আইনত দন্ডনীয়