শুক্রবার, ০২ জুন ২০২৩, ০৮:০৭ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
নীলফামারীতে ট্রেন আটকিয়ে মানববন্ধন ঢাকাসহ তাপপ্রবাহ বইছে ৬০ জেলায় সোনারগাঁয়ে ৭টি রেষ্টুরেন্টসহ দুই হাজার অবৈধ গ্যাস বিচ্ছিন্ন ১ জনকে আটক স্বাস্থ্যে বরাদ্দ বাড়ছে ১১৮৯ কোটি টাকা দাম কমবে ইন্টারনেটের ১৬১ টাকা কমলো ১২ কেজি এলপিজির দাম মেলান্দহের আদ্রা ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে কুচক্রিমহলের ষড়যন্ত্র! উত্তরা আব্দুল্লাহপুর বেড়িবাঁধ রেললাইন বস্তি অপরাধ মাদকের অভয়ারণ্য গুলশান-বনানীর বিস্তৃত এলাকার একচ্ছত্র মাদক সম্রাট হুমায়ুন কবির গাজী ক্ষমতার জোরে অন্যের জমি দখলের চেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত মেজর মোস্তফা কামালের বিরুদ্ধে; থানায় অভিযোগ

টাঙ্গাইলে ১২টি উপজেলায় নির্বাচনী প্রচারণায় চলছে ব্যাপক শব্দ দূষণ!! চরম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে শিশু-কিশোররা

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ২৬ মার্চ, ২০১৯
  • ৪৪ Time View

 

আ: রশিদ তালুকদার, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি:

 

 

টাঙ্গাইলে ১২টি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনী প্রচারণায় চলছে ব্যাপক শব্দ দূষণ। দেশের প্রচলিত শব্দ দূষণ আইন থাকলেও তার নেই কোন প্রয়োগ। এর ফলে সাময়িক বধির বা স্থায়ী বধির রোগে আক্রান্ত হওয়ার দিকে ধাবিত হচ্ছে মানুষ। এ ক্ষেত্রে শিশু, কিশোররা রয়েছে সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে। টাঙ্গাইলের বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকা ঘুরে দেখা যায়, উপজেলা নির্বাচনকে ঘিরে চলছে ব্যাপক প্রচার প্রচারণা। এক্ষেত্রে মাইকের ব্যবহার সবচেয়ে বেশি। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে একসাথে ৮/১০টি মাইক একসাথে লাইন ধরে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছে উচ্চ শব্দে। আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল, বাজার, মসজিদ-মন্দির ও আবাসিক এলাকায় উচ্চ শব্দে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে প্রচারকারীরা। এমনকি যানজটে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থাতেও তারা থামছে না। রাস্তায় চলাচলকারীরা প্রতিবাদ করলেও তারা প্রচারণা বন্ধ করে না। তাই বাধ্য হয়ে কানে আঙ্গুল দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে নয়তো শব্দের যন্ত্রণা সহ্য করতে হচ্ছে।শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশে রয়েছে বেশ কিছু আইন ও নীতিমালা। শব্দ দূষণের গুরুত্ব বিবেচনায় রেখে ১৯৯৭ সালের পরিবেশ সংরক্ষণ আইনে শহরকে ৫ ভাগে ভাগ করা হয়েছে- নীরব এলাকা, আবাসিক এলাকা, মিশ্র এলাকা, শিল্প এলাকা, বাণিজ্যিক এলাকা। এসব এলাকায় দিন ও রাত ভেদে শব্দের মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আবাসিক এলাকায় ৫০ ডেসিবেল, বাণিজ্যিক এলাকায় ৭০ ডেসিবেল, শিল্প এলাকায় ৭৫ ডেসিবেল, নীরব এলাকায় ৪৫ ডেসিবেল, আবাসিক কাম বাণিজ্যিক এলাকায় ৬০ ডেসিবেল। এই আইন অনুযায়ী হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকার নির্ধারিত কিছু প্রতিষ্ঠান থেকে ১০০ মিটার পর্যন্ত এলাকাকে নীরব এলাকা চিহ্নিত করা হয়। আইনানুযায়ী হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং সরকার নির্ধারিত কিছু প্রতিষ্ঠান থেকে ১০০ মিটার পর্যন্ত নীরব এলাকা হিসেবে চিহ্নিত। এসব জায়গায় মাইকিং করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালায় বলা আছে, আবাসিক এলাকার সীমানা থেকে ৫০০ মিটারের মধ্যে নির্মাণ কাজের ইট বা পাথর ভাঙার যন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না। যানবাহনে অপ্রয়োজনে উচ্চ শব্দে হর্ন বাজানো যাবে না। যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং করা যবে না। এই বিধির আওতায় স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালতকে নীরব এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এসব প্রতিষ্ঠানের চতুর্দিকে ১০০ গজের ভেতরে কোনো প্রকার হর্ন বাজানো যাবে না। আরো বলা হয়েছে, কোনো উৎসব, সামাজিক বা রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে লাউড স্পিকার, এমপ্লিফায়ার বা কোনো যান্ত্রিক কৌশল ব্যবহার করতে হলে কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি লাগবে। এসব কার্যক্রম সর্বোচ্চ পাঁচ ঘণ্টার বেশি হবে না। পাশাপাশি রাত ১০টার পর কোনোভাবেই শব্দ দূষণকারী যন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না।এবিষয়ে বেশ কয়েকজন প্রচারকর্মীর সাথে কথা বললে তারা এই সম্পর্কে কোন আইন আছে বলে জানেই না। বাসাইল এলাকার প্রচারকর্মী কামাল হোসেন জানান, এত বছর ধরে মাইক মারতাছি, কেউ তো কিছু কয় না। মাইক মারার উপরেও আইন আছে নাকি? কালিহাতীর প্রচারকর্মী সুজন বলেন, কন কি? মাইক মারার আইন! আইজক্যাই শুনলাম। বীর মুক্তিযোদ্ধ আনোয়ার হোসেন তালুকদার বলেন, কি আর বলব? স্বাধীন দেশ, যার যা খুশি তাই করে। মানুষের চিন্তা কেউ করে না। এই ভাবে উচ্চ শব্দে মাইক বাজিয়ে প্রচারণা না, মানুষকে অত্যাচার করা। বটতলা এলাকার বাদাম বিক্রেতা জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ভাই কানে আঙ্গুল দিয়েও রেহাই পাই ন্যা। এই যে এতগুলা মাইক দিয়া একসাথে কি যে কইতাছে, কিছুই তো বুঝা যায় না। মধ্যে থিকা কানের কাম সারা। ইতালী প্রবাসী লিপন খান বলেন, আমি ১৪ বছর যাবৎ ইতালীতে থাকি; আজ পর্যন্ত একদিনও এই রকম উচ্চ শব্দে মাইক শুনি নাই। কোন ভাবেই সম্ভব না। ওখানে সবাই আইনকে সম্মান করে, আইন মেনে চলে।টাঙ্গাইলের নির্বাচন কমিশনার কামরুল ইসলাম বলেন, এটি নির্বাচনী আচরণ বিধির সুস্পষ্ট লংঘন। আচরণ বিধির ২১ অনুচ্ছেদ “মাইক্রোফোন ব্যবহার সংক্রান্ত বিধি-নিষেধ” এ বলা হয়েছে, (১) কোন প্রতিদ্বদ্বী প্রার্থী বা তাহার পক্ষে কোন রাজনৈতিক দল অন্য কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান একটি ইউনিয়নে অথবা পৌরসভায় পথসভা বা নির্বাচনী প্রচারণার কাজে একের অধিক মাইক্রোফোন বা শব্দের মাত্রা বর্ধনকারী অন্যবিধ যন্ত্র ব্যবহার করিতে পারিবেন না। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য একজন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়েছে।এ বিষয়ে টাঙ্গাইল পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বলেন, উচ্চ শব্দ একটি নিরব ঘাতক। যা মানুষকে বিভিন্নভাবে আক্রান্ত করে। তিনি বলেন, এলাকাভেদে (আবাসিক, বাণিজ্যিক, নিরব, শিল্প) শব্দের বিভিন্ন মাত্রা নির্ণয় করা আছে। কিন্তু টাঙ্গাইলে সেই এলাকা গুলো নির্ণয় করা নাই। তাই আমরা ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করতে পারছি না। তারপরও আমি এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

এই সাইটের কোন লেখা কপি পেস্ট করা আইনত দন্ডনীয়