সামছুদ্দিন জুয়েল :
ডলারের উচ্চ দাম ও কাঁচামাল সংকটে চাপে ফেলেছে মাঝারি ও ছোট শিল্প প্রতিষ্ঠান। এতে খরচ বাড়ায় অনেক ব্যবসায়ী তাঁদের ব্যবসা সংকুচিত করে ফেলছেন। আবার চাহিদামতো আমদানি ঋণপত্রও খুলতে পারছেন না। ডলার নেই বলে অপারগতার কথা জানিয়ে দিচ্ছে ব্যাংক। ঋণপত্র খুলতে না পেরে সংকটে পড়েছেন তাঁরা। আবার এই সংকটে তাঁদের দেখারও কেউ নেই, তাঁদের পক্ষে সক্রিয় নেই কোনো ব্যবসায়ী সংগঠন এমনটাই বলেছেন “বঙ্গ সি ফুড প্রডাক্টস” লিমিটেড এর কারখানা পরিচালক মোঃ মোস্তফা মিয়া।
মোস্তফা মিয়া আরও বলেন, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা আর অনিশ্চয়তার মধ্যে দিয়ে তিনটি বছর শেষ হয়ে গেল। দুই বছরের করোনা মহামারির ধাক্কা সামলে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয় নিয়ে শুরু হয়েছিল ২০২২ সাল। কিন্তু বছরের এক মাস যেতে না যেতেই শুরু হয় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ইউক্রেনে হামলার পর পাল্টে যায় বিশ্ব পেক্ষাপট। বিশ্ব অর্থনীতিতে নেমে আসে কালোমেঘ। ওলটপালট করে দেয় সব হিসাব-নিকাশ। তছনছ হয়ে যায় সব কিছু। জ্বালানি তেল, খাদ্যপণ্য কাঁচামালসহ সব ধরনের জিনিসের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় দেশে দেশে চড়তে থাকে মূল্যস্ফীতি। পাগলা ঘোড়ার মতো ছুটতে থাকে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিধর অর্থনীতির দেশ আমেরিকান মুদ্রা ডলারের দর বন্ধ হয়ে যায় আমদানি রপ্তানি সহ অনেক কিছু।
এই অস্থিরতার ছোবল আমাদের দেশের প্রায় শিল্প প্রতিষ্ঠানেই লেগেছিল; বেশ ভালোভাবেই লেগেছিল। এখনও প্রতি মুহূর্তে তার মাশুল গুনতে হচ্ছে। মহামারির ক্ষতি কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে নতুন উদ্যমে যে বছর শুরু করেছিল সরকার, সেটা তো সম্ভব হয়নি; উল্টো সেই জঞ্জাল আর সংকট সঙ্গে নিয়েই শুরু করতে হলো নতুন বছর ২০২৩ সাল আর আমরা ভুগছি ধুঁকে ধুঁকে। মোঃ মোস্তফা মিয়া আরও বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বড় ধাক্কায় আমদানি খরচ বেড়ে যাওয়ায় দেখা দেয় ডলারের চরম সংকট। আবার আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যমূল্য বৃদ্ধির উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে দেশের বাজারেও। সরকারের নীতিনির্ধারকদের মাথাব্যথার বড় কারণ হয়ে ওঠে মূল্যস্ফীতি। আগামী বছরেও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণই সরকারের বড় চ্যালেঞ্জ।
বছরের শেষ দিকে এসে কয়েকটি ব্যাংক সহ ইসলামী ব্যাংকে আর্থিক কেলেঙ্কারির ঘটনা ব্যাংকিং খাতে চরম দুরবস্থার চিত্র ফুটে ওঠে, যা সরকারকে বেশ বেকায়দায় ফেলে। “বঙ্গ সি ফুড প্রডাক্টস” লিমিটেড গাজীপুর এর জেনারেল ম্যানেজার মোঃ মোস্তফা মিয়া আরও বলেন, নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত রোম্যাপ অনুযায়ী ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে দেশে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই নির্বাচনকে ঘিরে ২০২৩ সালে দেশে রাজনৈতিক সহিংসতার আশঙ্কা করছেন অনেকে।
তিনি বলেন, ‘২০২৩ সালে কিছু ভাল দিক আছে। আবার কিছু খারাপ দিক আছে। নতুন বছরেও আমাদের ডলার সংকট মোকাবিলা করতে হবে; এই সংকট তাড়াতাড়ি যাবে না। আমরা আশা করি সবধরনের সংকট সমাধান হয়ে যাক। সাধারণ মানুষ, ভোক্তা, লেবার, শ্রমিক, কর্মকর্তা,মালিক, কর্মচারী, বৃন্ত সহ সকল শিল্প প্রতিষ্ঠান ভালো থেকে একটি ব্যাবসা বান্ধব বাংলাদেশ উপহার দিতে পারি। (মঙ্গল কামনা করি দেশ ও দেশের মানুষের)।
এই সাইটের কোন লেখা কপি পেস্ট করা আইনত দন্ডনীয়
Leave a Reply