শের-ই-গুল:
আবাসিক এলাকায় বানিজ্যিক ভাড়া দিয়ে অসাধু বাড়ির মালিকেরা বেশি ভাড়া পেয়ে মুখে তালা দিয়ে আছে। দেখেও দেখেনা কি হচ্ছে ভীতরে । একাধিক লোকজনের অবাধে আসা যাওয়ার সুযোগ। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের আড়ালে মাদক ব্যবসার সুবিধা। অসামাজিক কার্যকলাপে থাকেনা কোন বাধা। অবৈধ ভাবে টাকা হাতিয়ে নিয়ে রাতের আধারে অফিস নিয়ে সটকে পড়ার সুবিধা,ম্যাসেজ র্পালার,স্পা, সেলুন, সাইবার ক্যাফ, মিনি চাইনিজ, অফিসের অভ্যন্তরে চলে জুয়া ক্যাসিনো খেলা, চোখ ধাধানো আবাসিক হোটেল সহ আরো কত কি চলছে। বিভিন্ন সময় মানুষ কত কথা বলছে। আবাসিক এলাকায় বসবাসরত ছেলে মেয়েরা হাতের নাগালে সব পাচ্ছে। পরিবেশ নষ্ট হওয়ার সব উপাদান আছে।
রাজউক বলেন চউক বলেন তারা সবই জানে। চোখে তাদের কাঠের চশমা অন্যায় পড়েনা ধরা। সব অনিয়ম নিয়ম হবে তাদের ছলাকলা । কতৃপক্ষের কর্মকর্তারা টাকার বান্ডিল পায়, নিজ নামে বোউ এর নামে কত বাড়ি গাড়ি হয়। রাজউক চউক এর চেয়ারম্যান এখন মন্ত্রীর মত মনে হয়। সরকারি চাকরীও তারা রাজনীতি করে, মিছিল মিটিং করে বুক ফুলিয়ে চলে। সব নিয়ম নিয়ম না তাদের টাকা পয়সা কাছে। বিশ পচিশটা গাড়ি তাদের বাড়ির সামনে থাকে । আবাসিক এলাকায় কতজন লোক থাকে আছে কত বাড়ি, সরকারী নিয়মে থানার আছে জানা। আবাসিক এলাকায় বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের নেই কোন হিসাব, কে এলো কে গেল কেউ জানেনা, অপরাধী অপরাধ করে কেউ বোঝেনা। অনায়াসে খুন করে পালিয়ে থাকে খুনি, গুম করে ডাকাতি করে পালিয়ে থাকে ঘরে, সবাই ভাবে বিশাল বাবু বসে আছে অফিসে। দামি দামি গাড়িতে তাদের হচ্ছে ইয়াবা পাড়, ভাব-সাপ দেখে কেউ কথা বলার পায়না সাহস। জঙ্গিরা আস্তানা বানায় আবাসিক এলাকায় ব্যবসা নিয়ে বসে, কোথায় কখন বোমা মারবে করে পরিকল্পনা। এসব কাজে আবাসিক এলাকায় সুবিধাটা বেশি, অবাধে ঘোরা-ফেরায় কারো চোখে পড়েনা। গুলশানের জঙ্গি হামলা কত বড় দৃষ্টান্ত, বিশাল কোন ঘটনার পরে সবার টনক নড়ে,দু-চার জনের বিশেষ কমিটি লম্বা ঝারি ছাড়ে । রাজউক -চউক এর বিশেষ টিম বুল্ডোজার নিয়ে মেজিস্ট্রেট আইন শৃংখলা বাহিনি দিয়ে গরিব যত বস্তি আছে আবাসিক এলাকার পাশে, নিমিশেই গুড়িয়ে দেয় তাদের ক্ষমতার জোড়ে ।
এদিক সেদিক নোটিশ দিয়া পকেট ভাড়ি করে, কিছুদিন যেতে না যেতে আগের মত চলে। আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি মুখে বলে কথা, অন্তরে দরদ নাই বিষে আছে ভড়া। রাজউক বলছে ঢাকার বিভিন্ন আবাসিক এলাকায় তারা ৭০০০ অনাবসিক ও ঝুকিপূর্ণ স্থাপনা চিহ্নিত করেছেন। আদর্শ শহর হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষে পঞ্চাশের দশকে রাজধানীর যেসব এলাকা আবাসিক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল ধানমন্ডি তার অন্যতম। পরবর্তীতে গুলশান, বনানী, বাড়িধারা, উত্তরা, বনশ্রী চট্টগ্রামের খুলশি, আগ্রাবাদ আবাসিক এলাকা, হালিশহর হাউজিং ষ্টেট সহ আরো বেশ কিছু এলাকায় আবাসিক হিসেবে গড়ে তোলা হয়। কিন্তু দূর্ভাগ্য জনক হল এসব এলাকা এখন আবাসিক হিসেবে চিহ্নিত করার সুযোগ নেই। প্রতিটি আবাসিক এলাকায় গড়ে উঠেছে বানিজ্যিক ভবন। কোথাও কোথাও গড়ে উঠেছে শিল্প কারখানাও ।
ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহর জুড়েই এখন বানিজ্যিক ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের দৌড়াত্ম চলছে। যে কারনে আবাসিক এলাকা গুলো তাদের নিজস্ব চরিত্র ও বৈশিষ্ট হারিয়ে ফেলেছে। গত কয়েক বছর এ নিয়ে লেখালেখি ও প্রতিবাদ করা সত্যেও আবাসিক এলাকায় বানিজ্যিক ভবন নির্মান থেমে নেই। আর এসব ক্ষেত্রে রাজউক -চউক এর অনুমোদন পেতেও কোন অসুবিধা হয় না । বাধ্য হয়ে মাঝে মাঝে আদালতকেও হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে। যারা আইন ভঙ্গ করে আবাসিক এলাকায় বানিজ্যিক ভবন গড়ে তুলেছেন তাদের বিরুদ্ধে কঠিন আইনী ব্যবস্থা নিতে হবে ।
একই ভাবে রাজউক -চউক এর যেসকল কর্মকর্তা বেআইনি ভাবে এসব প্রতিষ্ঠান গড়ার অনুমোতি দিয়েছেন, যে সকল আবাসিক এলাকার বাড়িওয়ালারা নিজেদের আবাসিক বাড়িতে বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ভাড়া দেয় বেশি ভাড়া পাওয়ার লোভে তাদের সবাইকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করা প্রয়োজন। ঢাকা চট্টগ্রাম সহ বড় বড় শহরের আবাসিক এলাকার নিজস্ব বৈশিষ্ট ও চরিত্র অক্ষুন্ন রাখতে চাই আইনের যথাযথ প্রয়োগ, এ ক্ষেত্রে নাগরিক সচেতনতাও জরুরী ।
এই সাইটের কোন লেখা কপি পেস্ট করা আইনত দন্ডনীয়
Leave a Reply