শুক্রবার, ০২ জুন ২০২৩, ০৬:৪৬ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
নীলফামারীতে ট্রেন আটকিয়ে মানববন্ধন ঢাকাসহ তাপপ্রবাহ বইছে ৬০ জেলায় সোনারগাঁয়ে ৭টি রেষ্টুরেন্টসহ দুই হাজার অবৈধ গ্যাস বিচ্ছিন্ন ১ জনকে আটক স্বাস্থ্যে বরাদ্দ বাড়ছে ১১৮৯ কোটি টাকা দাম কমবে ইন্টারনেটের ১৬১ টাকা কমলো ১২ কেজি এলপিজির দাম মেলান্দহের আদ্রা ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে কুচক্রিমহলের ষড়যন্ত্র! উত্তরা আব্দুল্লাহপুর বেড়িবাঁধ রেললাইন বস্তি অপরাধ মাদকের অভয়ারণ্য গুলশান-বনানীর বিস্তৃত এলাকার একচ্ছত্র মাদক সম্রাট হুমায়ুন কবির গাজী ক্ষমতার জোরে অন্যের জমি দখলের চেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত মেজর মোস্তফা কামালের বিরুদ্ধে; থানায় অভিযোগ

তুরাগে ট্রাফিক পুলিশের বেপরোয়া চাঁদাবাজি

Reporter Name
  • Update Time : শনিবার, ১৩ এপ্রিল, ২০১৯
  • ৭৫ Time View

মোলা তানিয়া ইসলাম তমাঃ

 

রাজধানীর তুরাগে চলছে ট্রাফিক পুলিশের বেপরোয়া চাঁদাবাজি। এ জন্য যানজট নিরসনের পরিবর্তে প্রতিদিন তা আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে । এ অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। তারা বলছেন, ট্রাফিক পুলিশ যত্রতত্র যানবাহন থামিয়ে কাগজপত্র চেক করার নামে চাঁদা আদায় করে। নগরীর বিভিন্ন রাস্তায় প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, সিএনজি অটোরিকশা এবং ব্যক্তিমালিকানাধীন নানা ব্র্যান্ডের গাড়ি কারণে- অকারণে থামিয়ে কাগজপত্র দেখার অজুহাতে হয়রানি করে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটক রাখার ফলে নগরীতে যানজট আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে। গাড়ির কাগজপত্র চেক করা নয়, সাধারণ মানুষকে হয়রানি আর টাকা আদায় তাদের ম‚ল টার্গেট বলে ভুক্তভোগীরা জানান। রাস্তায় লক্কড়-ঝক্কড় মার্কা ফিটনেসবিহীন যাত্রীবাহী বাস চলাচল করলেও সেদিকে তাদের নজর নেই।

 

ফিটনেসবিহীন যাত্রীবাহী বাস আটক করা হচ্ছে না। অভিযোগ রয়েছে এসব ফিটনেসবিহীন বাসের চালক ও মালিকদের কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা মাসোহারা নিচ্ছে ট্রাফিক পুলিশ। আর এ মাসোহারার জোরেই রাস্তায় চলাচল বন্ধ হচ্ছে না লক্কড়-ঝক্কড় ফিটনেসবিহীন যানবাহন। উত্তরায় বসবাসকারী ব্যবসায়ী খালেদ হোসেন বলেন, উত্তরা থেকে আশুলিয়া ( তার কর্মস্থল ) আসতে একটি প্রাইভেটকারকে ৪ থেকে ৫টি পয়েন্টে ট্রাফিক পুলিশের তলাশি মোকাবেলা করতে হয়। কোনো ধরনের কারণ ছাড়াই গাড়ি থামিয়ে অবান্তর প্রশ্ন করা হয়। আবার ট্রাফিক পুলিশের দাবি করা টাকা দিলে কোনো কাগজপত্র না থাকলেও অনেক গাড়ি ছেড়ে দেয়া হয়। এছাড়া রাতের বেলা চলে ট্রাক থামিয়ে বেপরোয়া চাঁদাবাজি।

 

ট্রাক ড্রাইভার মোক্তার অভিযোগ করে বলেন, শুধু দিনে নয় রাতেও চলে কামার পাড়া ও ধউর চেকপোস্টে ট্রাফিক পুলিশের চাঁদাবাজি । সিটি করপোরেশন ও বিআরটিএ রাজধানীতে ফিটনেসবিহীন যানবাহন চলাচলের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করলেও, এতেও চলছে ট্রাফিক পুলিশের বাণিজ্য । বিআরটিএর অভিযান টিম যে রাস্তায় থাকে ট্রাফিক পুলিশ তা আগেই ড্রাইভারদের জানিয়ে দেয় । এতে করে ফিটনেসবিহীন গাড়ি ওই রাস্তা এড়িয়ে অন্য রাস্তায় চলে যায়। পুলিশ ফিটনেসবিহীন বিপজ্জনক ও ঝুঁকিপ‚র্ণ যানবাহনের বিরুদ্ধে কোনো অভিযান শুরু করেনি। এ জন্য অনেকেই পুলিশের চাঁদাবাজিকেই দায়ী করছেন। কারণ হিসাবে তারা বলছেন, এসব যানবাহন চলাচল বন্ধ হলে পুলিশের অবৈধ বাণিজ্য কমে যাবে। রাজধানীর তুরাগের প্রাইভেটকারের চালক সানোয়ার বলেছেন, ট্রাফিক পুলিশের চাঁদাবাজিতে তারা অতিষ্ঠ।

 

আব্দুলাপুর থেকে আশুলিয়া বাজার পর্যন্ত যেতে আব্দুলাপুর, সুইচগেট, কামার পাড়া, প্রত্যাশা ব্রিজ, ধউর, আশুলিয়া ব্রিজসংলগ্ন সহ কমপক্ষে ৪-৫টি স্থানে ট্রাফিক পুলিশের মুখোমুখি হতে হয় । কারণে-অকারণে গাড়ি থামিয়ে মামলা দেয়ার ভয় দেখায় । টাকা দিলে সব ঝামেলা চুকে যায়। সরেজমিন দেখা গেছে, শুক্রবার ১২ই এপ্রিল ১০১৯ইং, বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে রাজধানীর প্রবেশপথ ধউর ট্রাফিক পুলিশ বক্সের সামনে ট্রাফিক পুলিশ কনস্টেবল জামাল ট্রাক থামিয়ে চাঁদা আদায় করছে, আর তাকে চাঁদাবাজিতে সাহায্য করছে সার্জেন্ট রাসেদ । এর একটি স্বচিত্র ভিডিও ফুটেজ রয়েছে এই প্রতিবেদকের কাছে । প্রায় এক ঘণ্টা পর ওই এলাকায় প্রচÐ যানজটের সৃষ্টি হয় । ঢাকার প্রবেশপথের ওই স্থানটিতে ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন আটক করে চাঁদা আদায়ের কারণে এক সময় ওই যানজট দীর্ঘ হতে থাকে।

 

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, পুলিশের এ চাঁদাবাজি নিত্যদিনের । যানজটের তোয়াক্কা না করে শুধু দিনে নয়, রাতভর চাঁদা নিতে তৎপর এসব ট্রাফিক সদস্য। প্রতিটি ট্রাক থেকে ন্য‚নতম ১০০ থেকে শুরু করে ১০০০ টাকা বা তারও বেশি টাকা চাঁদা আদায় করা হয়। বাংলাদেশ ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান মালিকরা জানান, সাংবাদিকদের এ বিষয়ে জানালে আরো অধিক হয়রানির শিকার হতে হয় । এর প্রতিবাদ করলে চাঁদার হার পুলিশ আরো বাড়িয়ে দেয়। দেশে প্রতিদিন ৯০ হাজার পণ্যবাহী ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান চলাচল করে। এর কোনোটিই পুলিশকে চাঁদা না দিয়ে চলতে পারে না।

 

বাংলাদেশ ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতির কর্মকর্তারা জানান, সড়ক বা মহাসড়কে এই ট্রাক চলাচল করতে গিয়ে একেকটি স্পটে ৫০ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা দিতে হয়। এই চাঁদা যেমন হাইওয়ে পুলিশ নেয়, তেমনি ট্রাফিক পুলিশও আদায় করছে।রাজধানীর শতাধিক পয়েন্টে চলছে ট্রাফিক পুলিশের চাঁদাবাজি। একশ্রেণির পরিবহন শ্রমিক, চিহ্নিত সন্ত্রাসী, পুলিশ ও ক্ষমতাসীন মহলের আশীর্বাদপুষ্টদের সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে সম্মিলিত চাঁদাবাজ চক্র। তাদের কাছেই জিম্মি হয়ে পড়েছে যানবাহন চালক, মালিকসহ সংশ্লিষ্ট সবাই। ফলে বন্ধ হচ্ছে না ফিটনেসবিহীন যান চলাচল। ফিটনেসবিহীন যানবাহন থেকে ট্রাফিক সার্জেন্টরা টাকা তুলে মাসোহারা হিসেবে। তাই এগুলোর বিরুদ্ধে কোনো ধরনের ব্যবস্থাও নেয়া হচ্ছে না।

 

ট্রাফিক পুলিশ রাজধানীর প্রবেশমুখগুলোতে বর্তমানে সবচেয়ে অধিক হারে চাঁদাবাজি করছে। এসব স্থানে গাড়ি ঢুকতেও টাকা লাগে, বেরোতেও লাগে টাকা। সবচেয়ে ভয়ঙ্কর রূপ নিয়েছে পুলিশের চাঁদাবাজি। মাসোহারা আদায়ের প্রতিযোগিতা বন্ধের সাধ্য যেন কারো নেই। রাজধানীর এক পাশ দিয়ে ঢুকে অন্য পাশ দিয়ে বেরিয়ে যেতে ট্রাকপ্রতি ৫০০-৬০০ টাকা গুনতে হয়। ট্রাফিক পুলিশের টোকেন বাণিজ্যও থেমে নেই। তবে প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস এবং নামী-দামি ব্র্যান্ডের জন্য পুলিশের মাসিক টোকেন সংগ্রহ না করায় প্রতিদিনই তাদের নানা হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। কাগজপত্র দেখার নাম করে এসব গাড়ি ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটক করে রাখে, তারপর টাকার বিনিময়ে রফাদফা হলেই পুলিশ তা ছেড়ে দেয়। এ বিষয়ে জানতে ধউর ট্রাফিক বক্সের টি আই মোঃ কেরামত মিয়ার ব্যবহারিত মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও সে ফোন রিসিভ করেন নি ।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

এই সাইটের কোন লেখা কপি পেস্ট করা আইনত দন্ডনীয়