ডাঃ এম,এ মান্নান, কুষ্টিয়া:
অব্যাহত দখলদারী গ্রাসের কারণে দক্ষিনÑপশ্চিমাঞ্চলের একমাত্র মুদু পানির উৎস গড়াই নদী যথাযথ সংস্কার ও দেখভাল না করার কারণে সংশি¬ষ্ট কর্তৃপক্ষের নাকের ডগাই একদিকে এ নদীর নাব্যতা হারিয়ে জেগে উঠছে চর, অন্যদিকে দখল হয়ে যাওয়ায় বিলুপ্তপ্রায় নদীর অস্তিত্ব।
কুষ্টিয়া জেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত পদ্মা ও গড়াই নদীর পাড় ঘেষে জেগে উঠা অধিকাংশ জায়গা স্থানীয় প্রভাবশালী ও সন্ত্রাসী মাস্তানদের দ্বারা নানা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এসকল দখলীকরন চলছে। কোথাও কোথাও এসব অপকমের্র সাথে জনপ্রতিনিধিত্বের মুখোশধারীদের জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সরেজমিনে দেখা গেছে সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন অংকের অর্থের বিনিময়ে দরিদ্র ও হতদরিদ্র পরিবারের লোকদের এনে প্রথমে বাড়িঘর করে দিয়ে অথবা মসজিদ মাদ্রাসা করে এসকল দখলবাজি চালাচ্ছে। কুষ্টিয়া সদরথানাধীন গড়াই নদীর দক্ষিণ পাড় ঘেষে বারখাদা হইতে পূর্বপ্রান্তের মহাশ্মশান পর্যন্ত বিস্তীর্ন এলাকা জুড়ে ইতোমধ্যে শত শত একর সরকারী জমি এভাবে বেদখল হওয়ায় একদিকে যেমন গড়াই নদীর মূল প্রবাহস্থল সংকুলান হয়ে গেছে অন্যদিকে সরকারী সম্মত্তি দখলবাজরা মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বিক্রয় করে ভূক্তভোগীদের ঠকাচ্ছে। এসকল এলাকায় বসতি গড়া মানুষদের সাথে কথা বলে জানা যায় তারা সর্বশেষ বিক্রয় করে এবং ধার দেনা করে যে জায়গাটুকু নিয়েছে তা যদি উচ্ছেদ করে দেয়া হয় তাহলে তাদের পথে বসা ছাড়া আর কোন পথ থাকবে না।
যে সময়ে সারা পৃথিবীর ন্যায় আমাদের দেশেও পরিবেশ ও প্রাকুতিক সম্পদ রক্ষার সংগ্রামে সোচ্চার সকল বিবেকবান নাগরিক, বর্তমান সরকারও এবিষয়ে অত্যন্ত আন্তরিক তবুও প্রতিনিয়তই দখলবাজদের কবলে দেশের বিস্তীর্ন এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা প্রাকৃতিক সম্পদের উৎসগুলি যেভাবে হারিয়ে যাচ্ছে ঠিক একই ভাবে দখলীগ্রাসে বিলুপ্ত প্রায় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের একমাত্র মৃদু পানির উৎস গড়াই নদী। এযেন এক মহা উৎসবে মেতে উঠেছে দখলবাজরা দখলবাজিতে। সংশি¬ষ্ট প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের চোখের সামনেই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে এই সর্বূনাশা খেলা। ফলে গড়াই নদীর মূলপ্রবাহ ধারা আজ দারুন ভাবে হুমকির মুখে। এবিষয় ইতোপুর্বে একাধিকবার স্থানীয়া ও জাতীয় দৈনিকে তুলে ধরা হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। এভাবে চলতে থাকলে বর্তমান সরকার যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে গড়াই নদী পুনরুদ্ধার প্রকল্প হাতে নিয়েছে তা ব্যর্থ হতে বাধ্য বলে মনে করেন অনেকে। একদিকে এই অমূল্য প্রাকৃতিক সম্পদ হারাবে তার অস্তিত্ব অন্যদিকে এঞ্চলের পরিবেশ বিপর্যয় অবসম্ভাবী হবে। সুন্দর বনাঞ্চলের দিকে পবাহিত একমাত্র মৃদুপানির উৎসও হারিয়ে যাবে।
এবিষয়ে সদর উপজেলার কয়েকজন ভূমিকর্মকর্তার সাথে কথা বলে জানা যায় যে অব্যহতভাবে সরকারী জমি দখলবাজির সাথে যারা জড়িত তারা কোন না কোনভাবে ক্ষমতাশীল প্রভাবশালীদের মদদেই করে যাচ্ছে। এই অবৈধ দখলমুক্ত করার জন্য ইতোপূর্বেই সংশি¬ষ্ট দপ্তরে তালিকা প্রেরন করা হয়েছে। কিন্তু কোন অদৃশ্য কারনে উচ্ছেদ কার্য বাস্তবায়ন হয়নি তা বলতে পারব না। তবে কখনও কখনও একাজে উদ্যেগ নেয়া হলেও জনপ্রতিনিধিরা তাদের ভোটের স্বার্থে যথাযথ সহযোগিতা করেন না। এবিষয়ে কুষ্টিয়া সদর উপজেলা সহকারী ভূমি কমিশনার ইয়াছমিন আক্তার জানান, মজমপুর ইউনিয়ন সহ বেশকিছু এলাকার সরকারি জমি দখলমুক্ত ও উচ্ছেদ করার জন্য কেস ফাইল সংশি¬ষ্ট দপ্তরে প্রেরন করা হয়েছে। কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, উপজেলাধীন সরকারী জলাশয়, খালবিল, নদীসহ সকল প্রকার সরকারী ভূসম্পত্তি
দখলমুক্ত ও উচ্ছেদের নির্দেশনাসহ কর্মপরিকল্পনা রয়েছে। খুব শিঘ্রই উচ্ছেদ অভিযানের মাধ্যমে তা বাস্তবায়িত হবে।
এই সাইটের কোন লেখা কপি পেস্ট করা আইনত দন্ডনীয়
Leave a Reply