বুধবার, ২২ মার্চ ২০২৩, ০৫:৪০ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
টঙ্গীতে জমি আত্মসাৎ এর জন্য নিজের মাথায় আঘাত করে মিথ্যা মামলা সাজালেন ছোট ভাইসহ তিনজনের বিরুদ্ধে বাঞ্ছারামপুরকে ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত ঘোষনা করার লক্ষে ইউএনও এর প্রেস ব্রিফিং মিরপুরে ছিনতাইকারী চক্রের ৫ সদস্য গ্রেফতার : দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার চালের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করলে ব্যবস্থা: খাদ্যমন্ত্রী চেম্বার আদালতেও রাষ্ট্রপতি নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে রিট খারিজ ইলিয়াস-বাবুলের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদনের নতুন দিন ধার্য টাঙ্গাইল-৩ আসন আওয়ামীলীগের গৃহবিবাদের সুযোগ নিতে চায় বিএনপি হজ পালনে থাকছে না বয়সসীমা, শর্ত তুলে নিলো সৌদি আরব কুষ্টিয়ায় পরিবারের সবাইকে রুমে আটকে দুর্ধর্ষ ডাকাতি, ১৫ লাখ টাকার মালামাল লুট কোস্ট গার্ড পশ্চিম জোন কর্তৃক শরণখোলায় বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান

দিনের ১২টার আগে অফিসে আসেনা তিতাসের অনেক কর্মকর্তারা

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩
  • ২৫ Time View

 

 

(তিতাসের কাজে এসে গ্রাহকরা অপেক্ষার প্রহর গুণে মৃত্যুর যন্ত্রণার মতো। দিনের ১২টা ছাড়া অফিসে আসেনা তিতাসে কর্মরত অনেক সাহেবরা। মুনাফায় থাকা তিতাস গ্রাহকের সেবার মান নিশ্চিত করতে পারছেনা। জনমনে সৃষ্টি হচ্ছে ক্ষোভ ও মিশ্র প্রতিক্রিয়া।)

 

সোহাগ জোয়াদ্দার :

 

তিতাস গ্যাস কোম্পানি গ্রাহকের সেবা নিশ্চিত করতে পারছে না, অথচ দাম বাড়ানোর অযৌক্তিক আবেদন বাড়ছে দিনের পর দিন। গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়ে জ্বালানি খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিইআরসির শুনানিতে তোপের মুখে পড়তে হয়েছে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডকে। রাজধানী ঢাকাসহ আশপাশের এলাকায় গ্যাস সরবরাহ করে তিতাস। গ্যাস সরবরাহ করা দেশের সবচেয়ে বড় এই কোম্পানির বিরুদ্ধে অনিয়ম, অপচয় ও চুরির অভিযোগ এনেছে ভোক্তাদের অধিকার নিয়ে কাজ করা ক্যাবসহ বিভিন্ন সংগঠন।

তারা বলছে, মুনাফায় থাকা তিতাস গ্রাহকের সেবা নিশ্চিত করতে পারছে না, অথচ দাম বাড়ানোর অযৌক্তিক আবেদন করে আসছে প্রতিনিয়ত। তিতাসের কাছ থেকে রাজস্ব ও লভ্যাংশ হিসেবে শত শত কোটি টাকা নিচ্ছে সরকার। অথচ এর উন্নয়নে বিনিয়োগ করছে না। অন্যদিকে তিতাসে কর্মরত বেশকিছু কর্মকর্তারা অফিস করেন দিনের ১২টার পর। এসব অফিসারদের রুমে গেলে দেখা যায়, অপেক্ষমান মানুষের ভীড়। কিন্তু দেখা যায়, সাহেবের চেয়ারখানি খালি পড়ে আছে। পিয়নকে জিজ্ঞাসা করলে জানায়, স্যার সরকারী মিটিংয়ে আছে। আবার বলে স্যার ভিজিটে গেছে, ইত্যাদি কথা বলে ঘন্টার পর ঘন্টা সময় চলে যায় গ্রাহকদের জীবন থেকে।

নাম না জানাতে ইচ্ছুক একজন গ্রাহক বলেন অপেক্ষা একটি কষ্টের বিষয়। আমি যে সমস্যা নিয়ে এসেছে তা সমাধান করার জন্য মাত্র ৫ মিনিটের ব্যাপার। অথচ আমি সকাল ১০ টা থেকে ১২ টা পর্যন্ত এখানে বসে আছি। যার কাছে এসেছি সে এখন পর্যন্ত বাসায় আছে, তার বাসায় খোঁজ নিয়ে জানতে পারি সে নাকি এখনো ঘুমাচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বর্তমান তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী হারুনুর রশিদ মোল্লাহ প্রতিদিন সময় মতো ৯ ঘটিকার মধ্যে অফিসে আসেন। কিন্তু তার অধিনস্থ অনেক কর্মকর্তারা বাহিরে ভিজিটে আছি ইত্যাদি অজুহাত দেখিয়ে তাকে প্রতিনিয়ত ফাঁকি দিয়ে আসছে। গ্রাহকদের দাবী এমডি স্যার বিষয়টি নজরদারীতে আনলে সময় মতো সবাই অফিসে আসতে বাধ্য হবে। সিরামিক সামগ্রী রপ্তানিকারক সমিতির প্রতিনিধি গোলাম সারোয়ার প্রাণের বাংলাদেশকে জানান, দেশে গ্যাসের চাপ কম থাকায় শত শত কোটি টাকার যন্ত্র নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, উৎপাদনও ব্যাহত হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, আগে সেবা নিশ্চিত করতে হবে তিতাসকে। তারপর বাড়তি দাম চাইতে হবে। তা না হলে শিল্প ধসে যাবে। মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাব নিয়ে তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হারুনুর রশীদ মোল্লাহ প্রাণের বাংলাদেশকে বলেন, লাখ লাখ অবৈধ সংযোগ আছে। সেগুলো কাটার পর আবার লাগানো হচ্ছে। লোকবল কম থাকায় তাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পারা যাচ্ছে না। বকেয়া বিল আদায় করতে হিমশিম খেতে হয়। অন্যদিকে অভিযোগ উঠেছে অবৈধ সংযোগের নামে শত শত কোটি টাকার গ্যাস চুরি হচ্ছে। সিস্টেম লসের নামে কয়েক হাজার কোটি টাকার গ্যাসের অপচয় হচ্ছে। অথচ এসব বিষয়ে তিতাস কিছুই করতে পারছে না। তিতাসের কর্মকর্তাদের যোগসাজশ আছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।

একজন গ্রাহক জানতে চান, প্রিপ্রেইড মিটারের গ্রাহকেরা মাসে গড়ে কত টাকা বিল দেন। এর উত্তরে তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা। ঐ ভোক্তা তখন বলেন, মিটার আছে মাত্র তিন লাখ গ্রাহকের। এর বাইরে থাকা লাখ লাখ গ্রাহকের কাছ থেকে মাসে প্রায় ৪০০ টাকা করে বাড়তি নিচ্ছে তিতাস। বিইআরসির চেয়ারম্যান আবদুল জলিল প্রাণের বাংলাদেশকে বলেন, উন্নয়নের জন্য প্রকল্প নেওয়া দরকার। কিন্তু সেটি ঋণ করে নাকি সরকারের তহবিল থেকে টাকা আসবে, তা দেখার বিষয় আছে। সাধারণত মানুষ দুর্যোগে পড়লে শেষ সঞ্চয় ব্যবহার করে। গ্যাস খাতের সব সংস্থার কাছে ১২ হাজার কোটি টাকা জমা আছে।

বর্তমানে সুপারিশ কার্যকর হওয়ার পর তিতাসের আবাসিক গ্রাহকদের দুই চুলায় গ্যাসের বিল বেড়েছে ১০৫ টাকা। মাসে ৯৭৫ টাকা থেকে নতুন বিল হবে ১ হাজার ৮০ টাকা। আর এক চুলায় গ্যাসের বিল বেড়েছে ৬৫ টাকা। ৯২৫ থেকে বেড়ে এক চুলার বিল এখন ৯৯০ টাকা। তাহলে সেবার মান নিয়ে এতো অভিযোগ কেন? এ বিষয় নিয়ে খতিয়ে দেখলে জানা যায়, তিতাসের বেশ কিছু কর্মকর্তারা দূর্নীতির সঙ্গে আতাত করে গ্রাহকদেরকে হয়রানি করছে প্রতিনিয়ত এবং হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা।

 

 

 

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

এই সাইটের কোন লেখা কপি পেস্ট করা আইনত দন্ডনীয়