রবিবার, ০৪ জুন ২০২৩, ০৬:৩২ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
বহুল প্রচারিত দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার স্বনামধন্য সম্পাদক তাসমিমা হোসেনের সাথে দৈনিক আমার প্রাণের বাংলাদেশ পত্রিকার সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুনের সৌজন্য সাক্ষাৎকার। ফুল ও ছবির অ্যালবাম উপহার পেয়ে তাসমিমা হোসেন অত্যন্ত খুশি হোন। এসময় উভয় পত্রিকার অনেক সাংবাদিক ও কলাকৌশলীরা উপস্থিত ছিলেন। সমসাময়িক দেশের রাজনীতি এবং দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। ছবি- প্রাণের বাংলাদেশ। পূবাইল প্রেসক্লাবের কমিটি গঠন গাজীপুরে অবৈধ গ্যাস সংযোগকারীদের কারনে গ্যাস সংকটে বৈধ গ্রাহকরা নারায়ণগঞ্জ রূপগঞ্জ এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী মোশারফ বাহিনীর প্রধান মোশারফ অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার গার্মেন্টস শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরী ২৪ হাজার টাকা ঘোষনার দাবিতে র‍্যালি ও সমাবেশ গাজীপুরে বিদেশ পাঠানোর কথা বলে গৃহবধূকে ধর্ষণ  গুলশান-বনানীতে স্পা সিন্ডিকেটের পক্ষ নিয়ে প্রকৃত সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন সংবাদ প্রকাশে কারা আইন শৃঙ্খলা রক্ষার্থে নজরদারির লক্ষ্যে নব উদ্যোগ তজুমদ্দিন থানার চৌকস পুলিশ অফিসার ওসি মুরাদের তাহিদুল ইসলাম ঝন্টু জনগণের সমর্থন নিয়ে খালিশপুর ১২ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হতে চায় অবশেষে সাংবাদিক লোকমান হোসেন ও রুহুল আমীন হাওলাদারের সৃষ্ট মামলা নিষ্পত্তি হলো রোয়েদাদ নামায়

দ্রব্যমূল্য আকাশ চুম্বি নাগালের বাহিরে

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ, ২০২৩
  • ৩৬ Time View

 

(একটি সিন্ডিকেট যারা সরকারের পা চেটে প্রশাসনের অনেককেই ম্যাসেজ করে যেই পণ্য বাংলাদেশে প্রতিনিয়ত উৎপন্ন হচ্ছে সেরকম পণ্যেরও দাম বাড়িয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে টাকা। সরকার মূল্য নির্ধারণ করে দিলেও বিক্রি হচ্ছে চওড়া দামে। এটাই হলো সিন্ডিকেট, কালোবাজারি, দুর্নীতিবাজ আর মজুমদারদের কারচুপি।)

 

শের ই গুল :

 

আজকাল দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধির ঘটনা যেন কোনো অস্বাভাবিক বিষয় নয়। সংবাদপত্রের পাতা খুললেই দেখা যায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামের ঊধ্বর্গতির খবর। ভঙ্গুর অর্থনীতি আর অনিয়ন্ত্রিত বাজার ব্যবস্থা সাধারণ মানুষকে ঠেলে দিচ্ছে দারিদ্রতার মুখে। বাজারে এমন কোনো দ্রব্য নেই যার মূল্য অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পায়নি। চাল, ডাল, তেল, চিনি, আটা, ময়দা, ডিম, শাক-সবজি, মাছ, মুরগী ও গরুর মাংস ইত্যাদিসহ বস্ত্র, অন্যান্য যন্ত্রপাতি এবং কাঁচামাল সবকিছুর মূল্য এখন লাগামহীন। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব তেল, গ্যাসের উপর পড়তে পারে। কিন্তু ডিম, শাক-সবজি, মুরগি ও গরুর মাংসের উপর প্রভাব বিস্তার করল কে?

কচুর আঠি কোন দেশ থেকে আমদানি হয়? তার কেজি দুইশত টাকা হবে কেন? একটি সিন্ডিকেট যারা সরকারের পা চেটে প্রশাসনের অনেককেই ম্যাসেজ করে যেই পণ্য বাংলাদেশে প্রতিনিয়ত উৎপন্ন হচ্ছে সেরকম পণ্যেরও দাম বাড়িয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে টাকা। সরকার মূল্য নির্ধারণ করে দিলেও বিক্রি হচ্ছে চওড়া দামে। এটাই হলো সিন্ডিকেট, কালোবাজারি, দুর্নীতিবাজ আর মজুমদারদের কারচুপি। এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষ। স্বল্প আয়ের মানুষ ও মধ্যবিত্তদের বাজারে গেলে মাথায় হাত। হিমশিম খেতে হয় নিজেদের পরিবারের প্রয়োজনটুকু মেটাতে।

এগুলো দেখার যেন কেউ নেই? ভোক্তা অধিকার কর্তৃপক্ষ কতটুকু সোচ্চার? তাই অনতিবিলম্বে সরকারকে বাজার স্বাভাবিক রাখার জন্য অনুরোধ করছে সর্বস্তরের জনগণ। মাঝে মাঝে অনেক ক্রেতাকে বাজারে যেয়ে কান্না করতেও দেখা গেছে। এরকম হৃদয় বিতাড়ক ঘটনা অনেক কিছুই ইতিমধ্যে বিভিন্ন গণমাধ্যমে দেখানো হচ্ছে এবং সংবাদ প্রকাশ হচ্ছে। কিন্তু এসব কিছু যেন বিবেকহীন, অনুভুতিহীন, অন্ধ কোন বিশাল ক্ষমতাকে বুঝানোর ব্যর্থ চেষ্টা। এ যেন উলোবনে মুক্তা ছড়ানোর মতো অবস্থা। বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ। এদেশের মানুষের প্রধান খাদ্য হলো ভাত।

বর্তমানে চালের দাম চড়াও, দাম একশত টাকা ছুইছুই করছে। অর্থাৎ সাধারণ শ্রমজীবী মানুষের চাল কেনাই দায় হয়ে পড়ছে! নিত্যদিনের রান্না করার প্রয়োজনীয় উপকরণ তেল, পেঁয়াজ, সবজি, চাল, ডাল, চিনি, আটা, ময়দা ও নানা ধরনের শাক-সবজি কিনতেও মানুষকে টাকা বিহীন পকেটের দিকে তাকাতে হচ্ছে। শাক-সবজির দাম লাগামহীনভাবে তো বেড়ে চলেছেই, এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে জ্বালানির দাম। বেড়েছে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য উপকরণের দামও। দিনদিন পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে, তাতে মনে হচ্ছে, দুবেলা দুমুঠো উদরপূর্তি করাই চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে, বিশেষ করে খেঁটে খাওয়া মানুষের জন্য। আমাদের দেশে দ্বিতীয় প্রধান খাদ্য হলো আটা। মানুষের খাদ্যতালিকায় ভাতের পরই রুটির অবস্থান, যা প্রধাণত আটা বা গম দিয়ে তৈরি।

সম্প্রতি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আটা ও গমের দাম লাগামহীনভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত এক বছরে আটার দাম বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ৪৫ শতাংশ। এর ফলে খাদ্য হিসেবে আটা ব্যবহারের পরিমাণ বহুলাংশে কমাতে বাধ্য হচ্ছেন শ্রমজীবী মানুষ। মাছেভাতে বাঙালি হিসেবে বিশ্বে আমাদের খ্যাতি রয়েছে। কিন্তু আজ মাছের অত্যধিক দামের কারণে দেশের অধিকাংশ সাধারণ জনগণের মাছ কেনার সামর্থ্য নেই।

গরীবের মাছ পাঙ্গাস, তাও এখন তিনশত টাকা কেজি ছুইছুই। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অভিঘাতে জ্বালানির দাম আকাশচুম্বী হয়ে পড়ার কাহিনী দিয়ে যেটুকু বাড়ানোর উচিৎ ছিল এই সুযোগে যানবাহনের ভাড়া প্রায় দ্বিগুণ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। সব শ্রেণির জ্বালানির দাম বাড়ার অযুহাতে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দামও বেড়ে যাচ্ছে হু হু করে। এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ওপর। বিদ্যুৎ উৎপাদনের অন্যতম উপাদান হচ্ছে জ্বালানি তেল ও গ্যাস। অর্থাৎ জ্বালানির অতিরিক্ত দামের কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদনও ব্যাহত হচ্ছে। সম্প্রতি বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ঘোষণা এসেছে।

সবমিলিয়ে ‘সংকট’ ঘিরে ধরছে মানুষকে! এমতাবস্থায় সরকারকে নিত্যপণ্যের দাম জনগণের আওতার মধ্যে রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। মানুষের আয়ের ধারাবাহিক বৃদ্ধির পরিমাণ নিশ্চিত করার পাশাপাশি দ্রব্যমূল্যের পরিমাণ স্থিতিশীল ও সাধারণ মানুষের সামর্থ্যের মধ্যে রাখতে হবে। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অধিক মুনাফার আশায় পণ্যসামগ্রী অবৈধভাবে মজুত করেন বলে অভিযোগ আছে। এ ব্যাপারে নজরদারি বাড়াতে হবে। বিশেষ করে, সর্বোপরি সংকট মোকাবিলায় সরকারকে সচেতনভাবে কাজ করতে হবে। পাশাপাশি জনগণকেও হতে হবে সচেতন। জনগণকে কৃচ্ছ্রসাধনের পথে হাঁটতে তো হবেই, অসাধু সিন্ডিকেট যেন শিকড় গেড়ে বসতে না পারে, সে ব্যাপারেও সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।

এ কথা সবার জানা, বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ নিম্ন-মধ্যবিত্ত। এদেশের সিংহভাগ মানুষ দিন আনে দিন খায়। এই যখন অবস্থা, তখন নিত্যপণ্যের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধির ফলে মানুষের জীবন ধারণ দিনকে দিন কঠিনতর হয়ে উঠছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীর দাম যে হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে, সে তুলনায় মানুষের আয় বৃদ্ধি পাচ্ছে না। ফলে লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধির কারণে চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে মানুষ। বলাবাহুল্য, এখন মৌলিক চাহিদাগুলো মেটাতেও মানুষের কপালের ঘাম ছুটে যাচ্ছে!

বিশেষ করে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির জাঁতাকলে পিষ্ট দিনমজুর-শ্রমজীবী মানুষের অবস্থা খুবই শোচনীয় হয়ে পড়েছে। অনেকে তিন বেলার খাবারও ভালোভাবে জোটাতে পারছেন না! এক সময় বাংলার সমৃদ্ধির কথা শোনা যেত। গোলাভরা ধান, গোয়ালভরা গরুর কথা পূর্বপুরুষদের মুখে শোনা যেত। বিখ্যাত শাসক শায়েস্তা খানের আমলে টাকায় ৮ মণ চাল পাওয়ার কথাও আমরা শুনেছি। সে সময় নাকি বাংলার মানুষের ছিল না খাদ্যের অভাব। সুখে-স্বাচ্ছন্দ্যে বসবাস করত সবাই। কিন্তু আজকের অবস্থা বড়ই করুণ! সাম্প্রতিক সময়ে নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি মানুষের জন্য প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এতো বৃদ্ধির পরেও এক শ্রেণির আমলা-মন্ত্রীরা অকপটে সকলের সামনে বড় গলায় বলে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি পায়নি।

এ বিষয় নিয়ে হিউম্যান রাইটস অর্গানাইজেশনের পরিচালক জিয়াউল হকের সাথে প্রাণের বাংলাদেশের কথা হলে তিনি জানান, যে মন্ত্রী বলেছেন নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি পায়নি, এই বিষয়টি তার এবং তার মতো অন্যান্য ধনাঢ্য ব্যক্তিদের জন্য প্রযোজ্য।

প্রকৃত পক্ষে মধ্যবিত্ত-নিম্ন মধ্যবিত্ত এবং দিন আনে দিন খায় মানুষদের সংসার চালাতে ঘর ভাড়া দিতে বিশাল রকম কষ্ট হচ্ছে। এখান থেকে দ্রুত উত্তোরণ না হলে এক সময় ভুক্তভোগী মানুষেরা রাজপথে নেমে আসবে এবং কড়ায় গন্ডায় নীতি নির্ধারকদের কাছ থেকে হিসাব বুঝে নিবে। কেন নিত্যপণ্যের বাজার আপনারা কন্ট্রোল করতে পারছেন না। এরকমটাই পরিস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আমি মনে করি সরকারের উচিৎ সবার আগে নিত্যপণ্যের বাজারকে স্থিতিশীল রাখার জন্য কাজ করা।

 

 

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

এই সাইটের কোন লেখা কপি পেস্ট করা আইনত দন্ডনীয়