এসডি রুবেল, ব্যুর চিফ নড়াইল :
নড়াইলে অন্ত জেলা চোর চক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেফতারসহ চুরি যাওয়া ল্যাপটপ সহ বিভিন্ন মালামাল ও ৮১ হাজার নগদ টাকা উদ্ধার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।
২৩ মার্চ বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে পুলিশ সুপার সাদিরা খাতুন সাংবাদিকদের প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা তুলে ধরেন তিনি।
এসময় তিনি সাংবাদিক দের বলেন, গত ২৬-১১-২০১৩ থেকে ২৮-০১-২০২৩ সাল পর্যন্ত সনাতন ধর্মালম্বীদের স্বরস্বতী পূজা একদিন ও সাপ্তাহিক ছুটি দুই দিনসহ টানা তিন দিন লোহাগড়া থানাধীন নলদী ইউনিয়নের বিএসএস মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় ছাত্র- ছাত্রীদের আধুনিক প্রযুক্তিগত শিক্ষায় শিক্ষিত করার লক্ষ্যে সরকারের আইসিটি বিভাগ কর্তৃক প্রদত্ত ১৭ টি উন্নত মানের ওয়ালটন ল্যাপটপ, যার প্রতিটির মূল্য (৭৪,৫০০x১৭) = ১২,৬৬,৫০০/-সহ উক্ত ল্যাপটপের ১৫ টি চার্জার স্কুল বন্ধ থাকাকালীন সময় অজ্ঞাতনামা চোর চক্রের সদস্যরা স্কুল ভবনের শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাবের জানালার গ্রিল কেটে চুরি করে নিয়ে যায়।
পরবর্তীতে ২৯ জানুয়ারি ২০১৬ তারিখে বিদ্যালয় পাঠদান কার্যক্রম শুরু হলে উক্ত বিদ্যালয়ের আইসিটি বিভাগের ল্যাব এ্যাসিস্ট্যান্ট ল্যাবের দরজা খুলে দেখতে পান উক্ত ল্যাবে থাকা ১৭টি ল্যাপটপ চার্জারসহ নেই এবং উক্ত ল্যাবের জানালার গ্রিল কাটা।
ল্যাবঅ্যাসিস্ট্যান্ট বিষয়টি দ্রুত অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস এম রিয়াজুল ইসলামকে অবহিত করলে তিনিসহ অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ ল্যাব পরিদর্শন করেন এবং উক্ত চুবির ঘটনায় প্রধান শিক্ষক নিজে বাদি হয়ে লোহাগড়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এর সূত্র ধরে উক্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে অফিসার ইনচার্জ, লোহাগড়া থানা চুরির মামলা করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মামলার রহস্য উদঘাটন প্রকৃত চোরদের শনাক্তকরণ, গ্রেফতার ও চুরি যাওয়া মালামাল উদ্ধারে সর্বাত্বক চেষ্টা অব্যাহত রাখেন এবং নড়াইল জেলা পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল ও জেলা গোয়েন্দা শাখার সহযোগীতায় তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রাখেন।
উল্লেখিত মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, নড়াইল সদর থানাধীন তুলারামপুর ইউনিয়নের ১২৬ নং মালিডাঙ্গা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ে শিক্ষা সানের লক্ষ্যে ও ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মানে সরকার কর্তৃক প্রদত্ত ০১ টি লিনোভো ল্যাপটপ, ০১ টি হিটাসি প্রজেক্টর, এইচপি লেজার প্রিন্টার ০১ টি, সাউন্ড বক্স ০২টি, ০১টি এইচপি লেখার ফিগারপ্রিন্ট সেন্সর ও ১২ টি বিআারবি সিলিং ফ্যানসহ সর্বমোট ২,০০,০০০/- (দুই লক্ষ) টাকার মালামাল অজ্ঞাতনামা চোরেরা চুরি করে নিয়ে যায়।
এ ঘটনায়ও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুলেখা রানী বিশ্বাস বাদী হয়ে নড়াইল সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করলে উক্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে নড়াইল সদর থানার মামলা নং- ৭, তদন্ত শুরু করে।
উভয় মামলার চুরির ধরণ ও প্রকৃতি একই রূপ হওয়ায় জেলা পুলিশ সুপার সাদিরা খাতুনের নির্দেশে সিসি আই সি ও জেলা গোয়েন্দা শাখা মামলা দুইটির ছায়া তদন্ত শুরু করেন। ছায়া তদন্তকালীন গত ১৭ মার্চ ২০২৩ তারিখে রাত ৩ টা হতে ২০ মার্চ ২০২৩ তারিখ সকাল ৯ টার মধ্যে যেকোন সময়ে নড়াইল সদর থানায় ১২৭ নং চাকই পশ্চিমপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ০১ টি ওয়ালটন ল্যাপটপ, যার মূল্য ৩৫,০০০ হাজার টাকা, ০১ টি লিনোতো ল্যাপটপ, মূলা ৫২,০০০ হাজার টাকা, ০১ টি হিটাসি প্রজেক্টর মেশিন, যার মূল্য ২২,০০০ হাজার টাকা সহ নগদ ১০,০০০/- টাকা চুরি হয়।
এবং একই দিনে রাত ০২.৩০ মি: হতে সকাল ১০ টার মধ্যে যেকোন সময়ে নড়াইল সদর থানাধীন হবখালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের লাইব্রেরীসহ দুইটি শ্রেণীকক্ষের দরজার তালার কড়া ভেগে মোট ১২ টি বিআরবি ফ অজ্ঞাতনামা চোরেরা চুরি করে নিয়ে যায়। পরবর্তী দুইটি ঘটনায় স্কুল কর্তৃপক্ষ অভিযোগ দায়ের না করে খোজাখুজি অব্যাহত রাখে।
এরই ধারাবাহিকতায় জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল মোহাম্মাদ দোলন মিয়ার নিবিড় তত্ত্বাবধানে তথ্য প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার ও প্রয়োগ এবং বিরামহীন পরিশ্রমের মাধ্যমে সিসিআইসি শাখার এসআই (নিঃ) মো: আলী হোসেন ও তার সহযোগীসহ জেলা গোয়েন্দা সংস্থার একটি চৌকস দল মোঃ সাজেদুল ইসলাম, অফিসার ইনচার্জ, জেলা গোয়েন্দা শাখার নেতৃত্বে ০৪ (চার) টি টিম ঘটনাস্থলে একই মোবাইল সিম ব্যবহারের তথ্য পায়।
যার সূত্র ধরে গত ২১ মার্চ ২০২৩ সন্ধ্যা ৭টায় সিম ব্যবহারকারী মোঃ শহিদুল ইসলাম (৩০), পিং- তৈয়েব শেখ, সাং- বাটিকাবাড়ি ও তার সহযোগী রিজু সরদার (১৯), পিং- মোঃ সোহাগ সরদার, সাং- টেংরাখোলা, উভয় থানা- মুকসেদপুর, জেলা- গোপালগঞ্জ কে সনাক্ত পূর্বক তদন্তকারী কর্মকর্তাকে নিয়ে ভায়াখালী এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে ২১ মার্চে সন্ধ্যা ৬টার দিকে গ্রেফতার পূর্বক জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা উল্লেখিত চুরির সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।
উল্লেখিত স্কুলের মালামাল চুবির ঘটনায় তাদের সহযোগী হিসেবে যথাক্রমে মতিউর রহমান রাসেল (৩৫), পিং- মল্লিলুর রহমান মোল্যা, সাং- গোপীনাথপুর ও মোঃ সোবহান মোল্যা (৩৮), পিং- মৃত মতি মোল্যা, সাং- ধোপাকান্দি, উভয় থানা মুকসেদপুর, গোপালগঞ্জ।
সর্বমোট ল্যাপটপ-১৬ টি এবং ল্যাপটপের চার্জার ১৬টি সিলিং ফ্যান-৭২টি, প্রিন্টার ০৬টি, তিনি সাউণ্ড বক্স১৬টি
৭ কম্পিউটার,মাউস ০২টি, মাইন্ড -০২টি। ১০৭০১টি,
৩টি ড্র ড্রাইভার, ১০টি সেলাই রেন্জসহ আসামী মোঃ শহিদুল ইসলাম (৩০) পিং- তৈরণ আনা শেখ, সাং- বাটিকাবাডি, মোঃ সোবহান মোল্যা (৩৮) পিং- মৃত মহি মোল্যা, সাং- ধোপাকান্দা, মোঃ রিজু সরদার (১৮) পিং- মোঃ সোহাগ সরদার, সাং- টেংরাখোলা, মোঃ আরমান মোল্যা (২০) পিং- মোঃ কুদ্দুস মোল্যা, সাং- উজানিয়া, সর্ব থানা- মুকসেদপুর, মতিউর রহমান রাস্লে (৩৫) পিং- মজিবর রহমান মোল্যা, সাং- গোপীনাথপুর, নেপাল দাস (৩০) পিং- মৃত শিবপদ দাস সাং- বাটাজোড়, থানা ও জেলা- মাগুরা। ৬জন কে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।
এই সাইটের কোন লেখা কপি পেস্ট করা আইনত দন্ডনীয়
Leave a Reply