শুক্রবার, ২৪ মার্চ ২০২৩, ০৩:১৪ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
শেরপুরে জনসচেতনামূলক বিট পুলিশিং সমাবেশ অনুষ্ঠিত পুতিনকে গ্রেপ্তার প্রচেষ্টার অর্থ রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা ব্রয়লার মুরগি: খামার পর্যায়ে ১৯০-১৯৫ টাকা নির্ধারণ, খুচরায়ও কমবে কল্যাণ ও সৌভাগ্যের বার্তা মাহে রমজান নীলফামারীতে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে টি-টুয়েন্টি ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ভুয়া প্রজ্ঞাপনে সালনা নাসির উদ্দিন স্কুল এন্ড কলেজে  অবৈধভাবে নিয়োগ শিক্ষক ইফতেখারকে   উত্তরখান থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আবুল কালাম আজাদ বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর আইকন বনানীতে প্রশাসনের নিরব ভূমিকায় ফুটপাত দখল শেষ, রাস্তা দখলে মরিয়া রমজান মাস উপলক্ষে কালিয়াকৈরে ইফতার সামগ্রী বিতরণ  অফিস সহায়কের প্রতি অমানবিক আচরণে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

পিরোজপুর ভান্ডারিয়া নদী মোহনায় মন হারিয়ে যায়

Reporter Name
  • Update Time : শুক্রবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২০
  • ১০৮ Time View

 

লোকমান হোসেন, ভান্ডারিয়া প্রতিনিধি :

খাল-বিল-নদ এর নাম বরিশাল। অনিন্দ সুন্দর নদীর মোহনায় আর পাল তুলা নৌকার দৃশ্যে হারিয়ে যায় মন। পিরোজপুর জেলা ও ভান্ডারিয়া সহ কয়েকটি এলাকা নিয়ে বেশকিছু নদী চলে গেছে, তাদের ঘূর্ণিপাক যেয়ে থেমেছে বিশাল সমুদ্রে। খাবার পানি এবং গোসলাদির উৎস হিসেবে দিঘি খনন প্রাচীনকাল থেকেই জনহিতকর কাজ হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে।

জেলার বিভিন্ন এলাকায় এ ধরণের বেশ কয়েকটি দিঘি রয়েছে, যার একটি বিবরণ তুলে ধরা হলো :স্বরূপকাঠির দস্তরখাঁর দিঘি: নেছারাবাদ (স্বরূপকাঠি) উপজেলার সোহাগদল গ্রামে দস্তর খাঁ নামে একজন সম্ভ্রান্ত ব্যক্তি এলাকার মানুষের পানীয় জলের অভাব দূর করতে প্রায় দু’শো বছর আগে একটি দিঘি খনন করেছিলেন। কিংবদন্তি আছে যে, এ দিঘির ঘাটে বড় বড় সামাজিক অনুষ্ঠানাদি আয়োজনের জন্য প্রয়োজনীয় থালা বাসন থেকে শুরু করে হাড়ি-পাতিল পানি থেকে উঠে আসতো। একবার এ সকল তৈজস পত্র ফেরত দেওয়ার সময় একটি লবনের বাটি রেখে দেওয়ার ঘটনায় অলৌকিকভাবে এসব বাসন-কোসন উঠে আসা বন্ধ হয়ে যায়। এ দিঘি ভরাট হয়ে অস্তিত্ব বিলীন হয়ে বর্তমানে এখানে চাষাবাদ করা হচ্ছে এবং বসত বাড়ি উঠছে।

ভান্ডারিয়ার ভেলাই চোকদারের দিঘি: পূর্ব ভান্ডারিয়া গ্রামে একটি প্রাচীন দিঘি রয়েছে। ভেলাই চোকদার নামক একজন ধনাঢ্য ব্যক্তি আনুমানিক পাঁচ একর জমির উপর আজ থেকে প্রায় দু’শো বছর আগে এ দিঘিটি খনন করেন।

সাম্প্রতিককালে সাবেক যোগাযোগ মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর পারিবারিক উদ্যোগে এ দিঘিটি সংস্কার করে ব্যবহার উপযোগী করা হয়েছে। ভান্ডারিয়া মিয়া বাড়ির পূর্ব পাশে অবস্থিত এ দিঘির পাড়ে ভেলাই চোকদার নির্মিত একটি মসজিদসহ দু’টি দালান প্রাচীন কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। জিয়ানগরের মধুমালা-মদনকুমারের দিঘি: পিরোজপুর জেলার উপজেলা জিয়ানগরের সর্ব দক্ষিণে বালিপাড়া ইউনিয়নের কলারন গ্রামে দু’টি দিঘির অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়।

রূপকথার গল্পের মধুমালা-মদনকুমারের নামে এর নামকরন করা হয়। এ দিঘির খননকাল ও খননকারী উদ্যোক্তা হিসেবে কিছু কিংবদন্তি প্রচলিত থাকলেও সঠিকভাবে তেমনকিছু জানা যায় না। দিঘির কাছাকাছি স্থানীয় জনগন অধূনা একটি বাজার স্থাপন করে এর নাম দিয়েছে মধূমালার হাট। জোড়দিঘি: রায়েরকাঠি জমিদার বাড়িতেও কয়েকেটি দিঘি রয়েছে।

এর মধ্যে জোড়দিঘি নামের দিঘির একটিতে পুরুষ ও অন্যটিতে মেয়েরা গোছল করতো। দু’টো পুকুরের মাঝের সংযোগ দিয়ে উভয় দিঘির পানির ভারসাম্য রক্ষা করা হতো। সংযোগস্থলে একটি মনোরম ঘাট ছিল। আজ জোড়দিঘি থাকলেও সংযোগ ঘাটটির বিলুপ্তি ঘটেছে। রায়েরকাঠি জমিদার বাড়ির সামনে অন্য একটি বৃহৎ পুকুর এখনও বিদ্যমান। পিরোজপুরে রয়েছে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নদী। এখানে প্রধান নদী বলেশ্বর।

এছাড়াও দামোদর, কচা, সন্ধ্যা, কালিগংগা, পোনা, গাবখান ইত্যাদি নদী রয়েছে।বলেশ্বর:এই নদীটি পিরোজপুরের অন্যতম প্রধান নদী। এই নদী পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার মাটিভাংগা থেকে শুরু হয়েছে। নদীটি তুষখালীর কাছে কচানদীর সংগে মিলিত হয়ে মঠবাড়িয়া উপজেলার খেতাচিড়াকে পূর্বে রেখে বঙ্গোপসাগরে পড়েছে। বলেশ্বর নদী তীরবর্তী উল্লেখ যোগ্য শহর জনপদ হচ্ছে পিরোজপুর, মাটিভাংগা , বাগেরহাট জেলার কচুয়া রকেট ষ্টিমারস্টেশন এবং করতো। এখনও নদী অন্যতম নৌপথ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।কচা: এই নদীটি প্রশস্ততা ও গভীরতায় দিক দিয়ে জেলায় অন্যতম প্রধান নদী। পিরোজপুরের গুলারহাট বন্দরের কাছে সন্ধ্যা ও কালীগঙ্গার ধারা কচা নাম নয়ে মঠবাড়িয়ার তুষখালীর কাছে বলেশ্বর নদীতে মিলিত হয়েছে। এটিও আন্তর্জাতিক নদীপথ। এ নদীর উভয় পাড়ের উল্লেখযোগ্য জনপথ ও স্থাপনাগুলো হলো পাড়েরহাট বন্দর ও মৎস্য বন্দর, চরখালী, টগরা ফেরিঘাট, বেকুটিয়া ফেরিঘাট,তেলীখালী, পাঙ্গাশিয়া বাজার।

নদীটি স্বল্পদৈর্ঘ্যের হলেও অত্যান্ত খরস্রোতা। সন্ধ্যা: জেলার আরেকটি প্রধান নদী এটি। নদীটি আড়িয়াল খাঁ’র একটি শাখা নদী। নেছারবাদ (স্বরম্নপকাঠি) উপজেলার উত্তরদিক দিয়ে সন্ধ্যা নদী পিরোজপুর জেলায় প্রবেশ করেছে। নেছারবাদ সদর উপজেলা, শর্ষিণা,শরিফ, কাউখালী উপজেলা সদর ও বন্দর এই নদীর পাড়ের উলেস্নখযোগ্য স্থান।কালীগঙ্গা: পিরোজপুর জেলা শহরের্ াপ্রবেশপথ গুলারহাট লঞ্চঘাট সবা বন্দর কালীগঙা নদী তীরে অবস্থিত।

নাজিরপুর উপজেলা সদর, শ্রীরামকাঠী বাজারও এ নদীর পাড়ে। নদীটি বলেশ্বর থেকে সূচিত। তালতলা: এই নদী নাজিরপুর উপজেলার মাটিভাংগা ও সাঁচিয়া বাজারের কাছে মধুমতির স্রোতধারা ধারণ করে নাজিরপুরের দীর্ঘা গ্রামের কাছে কালিগঙ্গাতে মিশেছে। মধুমতি: মধুমতি নদীটি এ জেলার মধ্যে আট কিলোমিটার স্থান দিয়ে প্রবাহিত।

নাজিরপুর উপজেলার ঝনঝনিয়া থেকে এ নদী পিরোজপুরে প্রবেশ করেছে।দেশ প্রসিদ্ধ এ নদীটি বলেশ্বর ও তালতলা নদীতে মিশে তার সুদীর্ঘ যাত্রা শেষ হয়েছে। বেলুয়া:নেছারাবাদ ও নাজিরপুর উপজেলাকে বিভক্ত করে প্রবাহিত হচ্ছে বলুয়া নদীটি। নদীটির দৈর্ঘ্য প্রায় চল্লিশ কিলোমিটার। পোনা: ভান্ডারিয়া উপজেলা সদর পোনা নদীর তীরে অবস্থিত। পনের কিলোমিটার দীর্ঘ এ নদী কচা নদীতে মিশেছে।

 

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

এই সাইটের কোন লেখা কপি পেস্ট করা আইনত দন্ডনীয়