বি এম রাকিব হাসান, খুলনা ব্যুরো: খুলনা জেলা আইন-শৃঙ্খলা এবং সন্ত্রাস ও নাশকতা প্রতিরোধ কমিটির সভায় মহানগরীতে থ্রি হুইলার গাড়ির চালকদের লাইসেন্স, গাড়ির রেজিস্ট্রশনসহ অন্যান্য কাগজপত্র কঠোরভাবে পরীক্ষা ও যাচাই-বাছাইয়ের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। একই সাথে থ্রি হুইলার ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রীবহনকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ এবং অতিরিক্ত যাত্রীবহন করা যাবেনা মর্মে সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। অপরদিকে মহানগরী ও জেলার মোট ১৭টি থানায় গত ফেব্রুয়ারি মাসে ধর্ষণ ৭টি, ডাকাতি ১টি, নারী ও শিশু নির্যাতন ২২টিসহ নানা ঘটনা আইন-শৃঙ্খলার প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
গতকাল খুলনা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা আইন-শৃঙ্খলা এবং সন্ত্রাস ও নাশকতা প্রতিরোধ কমিটির সভায় প্রধান উপদেষ্টার বক্তৃতায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ বলেছেন, যে কোন মূল্যে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে হবে। দেশের অন্যান্য স্থানের তুলনায় এ অঞ্চলের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেক ভাল অবস্থানে রয়েছে। তিনি বলেন, মাদকসেবী, মাদক ক্রয় ও বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান জিরো টলারেন্স। মাদকের বিরুদ্ধে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরো তৎপর হতে হবে। চিংড়ি মাছে কেউ যেন অপদ্রব্য পুশ করতে না পারে সে দিকে সংশ্লিষ্টদের নজর দিতে হবে।
খুলনা জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আমিন উল আহসানের সভাপতিত্বে সভায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বিস্তারিত আলোচনা হয়। সভাপতি বলেন, মাদকের পাশাপাশি ইয়াবা ও গাঁজাসহ বিভিন্ন ধরনের মাদকে অনেকে আসক্ত হয়ে পড়ছে। মাদকদ্রব্য অপব্যবহার ও অবৈধ পাচার মানবসৃষ্ট একটি বহুমাত্রিক সমস্যা। আমরা মাদকের ভয়াবহ থাবা থেকে দেশ ও জাতিকে রক্ষা করতে এ সংক্রান্ত আইনের কঠোর প্রয়োগ করতে হবে। মাদকবিরোধী প্রচার-প্রচারণাকে আরো জোরদার করতে হবে। সভাপতি মাদক, ইয়াবা ও গাজার উৎস কোথায় তা খুঁজে বের করতে সংশ্লিদের অনুরোধ করেন।
সভাপতি জানান, মোবাইল কোর্ট পরিচালনা ও পুলিশ টহল বৃদ্ধির কারণে জেলা ও মহানগরীর বিভিন্ন বালিকা বিদ্যালয় ও মহিলা কলেজের সামনে বখাটেদের দৌরাত্ম্য অনেকাংশে কমে এসেছে। এ ব্যাপারে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা অব্যাহত রাখতে সংশ্লিষ্টকে অনুরোধ করেন। পুলিশ সুপার সভাকে জানান, মোটরসাইকেলে তিনজন আরোহী নিয়ে চলাচল করতে পারবে না। প্রতিদিন মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে।
মাদকদব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সভাকে জানান, ফেব্রুয়ারি মাসে মাদকের বিরুদ্ধে ২৪টি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে এবং মামলা রুজু করা হয়েছে চারটি এবং চারজনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়েছে। সভাপতি নগরীতে ব্যানার ও প্যানা অপসারণের জন্য সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ করেন।
সভায় জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশিদ, সিভিল সার্জন, পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, উপজেলা চেয়ারম্যান, কেএমপি, বিজিবি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ কমিটির অন্যান্য সদস্যরা অংশগ্রহণ করেন।
সভায় আইন-শৃঙ্খলা প্রতিবেদনে জানানো হয়, মহানগরীর আটটি থানায় গত ফেব্রুয়ারি মাসে ডাকাতি ১টি, চুরি ৮টি, অস্ত্র আইনে ৩টি, দ্রুত বিচার ২টি, ধর্ষণ ৫টি, নারী ও শিশু নির্যাতন ১১টি, নারী ও শিশু পাচার ১টি, মাদকদ্রব্য ১১৭টি এবং অন্যান্য ২৬টিসহ মোট ১৭৪টি মামলা দায়ের হয়েছে। গত জানুয়ারি মাসে এ সংখ্যা ছিল ১৬১টি।
জেলার নয়টি থানায় ফেব্রুয়ারি মাসে রাহাজানি ১টি, চুরি ৪টি, অস্ত্র আইনে ৩টি, ধর্ষণ ২টি, নারী ও শিশু নির্যাতন ১১টি, নারী ও শিশু পাচার ১টি ও মাদকদ্রব্য ৫৬টি এবং অন্যান্য আইনে ৮২টি সহ মোট ১৬০টি মামলা দায়ের হয়েছে। গত জানুয়ারি মাসে এ সংখ্যা ছিল ১৪২টি।
এই সাইটের কোন লেখা কপি পেস্ট করা আইনত দন্ডনীয়
Leave a Reply