হাসান বশির, সুনামগঞ্জ: পাহাড়ী ঢল ও প্রবল বর্ষনে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় বন্যার সৃষ্টি হয়েছে।
গত শনি ও শুক্রবার টানা বর্ষণ এবং পাহাড়ি ঢলে এ বন্যার সৃষ্টি হযেছে। স্থানীয় সূত্র জানায়, বিশ্বম্ভরপুর ও সুনামগঞ্জ সদরের মানচিত্রে বয়ে চলা, ভারত সীমান্ত চুয়ে আসা ধোপাজান চলতি নদী, তারিপুর-বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার সীমানার উপর দিয়ে বয়ে চলা যাদুকাটা, পুরান যাদুকাটা নদী, ধামালিয়া, রূপসা সহ বিভিন্ন ছড়া ও নদী পথে চলে আসা পাহাড়ী ঢল ও প্রবল বর্ষণে উপজেলার পলাশ,ফতেপুর,বাদাঘাট দক্ষিণ.সলুকাবাদ.ও ধনপুর ইউনিয়নের প্রায় ৫০ হাজার পরিবার বন্যার কবলে পড়েছে। পানি বন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় শতাধিক গ্রাম।
সম্প্রতি আগাম বন্যায় বরো ফসল হারানো পর আবার নতুন করে বন্যার কবলে পড়ে এ উপজেলার কৃষকরা সর্বশান্ত হচ্ছেন।
শুক্রবার (সন্ধ্যা পর্যন্ত) সুরমা নদীর পানি বিপদ সীমার ৮.৮৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
উপজেলা কৃষি বিভাগ জানায় উপজেলায় প্রায় ৯৭৫হেক্টর রোপা আমন,৭৫ হেক্টর বীজ তলা নষ্ঠ হয়ে গেছে। এছাড়া প্রায় ১২ হেক্টর বর্ষাকালীণ সবজি ক্ষেত বিনষ্ঠ হয়েছে।
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মানিক মিয়া জানান শতাধিক গ্রাম পানি বন্দি অবস্থায় রয়েছে এবং শতাধিক কাঁচা ঘর-বাড়ি ভেঙে পড়েছে।
উপজেলা প্রকৌশলী ফজলুর রহমান জানান এলজিইডির উপজেলার শক্তিয়ারখলা পাকা সড়ক,বিশ্বম্ভরপুর-কান্টেরবাজার পাকা সড়ক,বাঘমারা-সোনাপুর পাকা সড়ক,জনতাবাজার-পলাশ পাকা সড়ক,বিশ্বম্ভরপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় সড়ক,বিশ্বম্ভরপুর সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় সড়ক,মাছিমপুর-স্বরূপগঞ্জ পাকা সড়ক মিয়ারচর পাকা সড়ক সহ বিভিন্ন কাঁচা-পাকা সড়ক পানির নিচে ডুবে যাওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এলাকার মানুষ।
এছাড়া অসংখ্য পশু প্রাণি মারা গেছে। অসংখ্য পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। পলাশ-ফতেপুর ও বাদাঘাট দক্ষিণ ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়,প্রায় প্রতিটি বাড়ির আঙ্গিনায় পানি প্রবেশ করেছে তাই পরিবারের লোকজন গাবদি পশু নিয়ে এক সঙ্গে বসবাস করছেন। অনেকে নৌকায় করে দূর থেকে বিশুদ্ধ পানি সংগ্রহ করছেন। রান্না ঘরের চুলায় পানি উঠায় রান্না কাজে বিঘœ ঘটছে। ফতেপুর ইউপি চেয়ারম্যান রনজিত চৌধুরী রাজন,পলাশ ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কাইয়ূম জানান তাদের ইউনিয়নে বেশি ক্ষতি হয়েছে। ধনপুর ইউপি চেযারম্যান রফিকুল ইসলাম জানান ধনপুর ইউপির সবজি ও বীজতলা সবচেয়ে বেশি ক্ষতি গ্রস্থ হয়েছে। বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানিয়া সুলতানা জানান উপজেলায় প্রায় ৫০ হাজার লোক পানি বন্দি অবস্থায় রয়েছে। শনিবার ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে ত্রাণ সহয়তা দেয়া হবে ।
জেলা প্রশাসক সাবিরুল ইসলাম শুক্রবার সকালে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শনে এসে বন্যার্তদের সহায়তায় উপজেলা প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহনের পরামর্শ দেন। এবং চাহিদানুযায়ী ত্রাণ সহায়তা দেয়া হবে বলে জানান।
এদিকে শুক্রবার দুপুরেরদিকে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা প্রশাসন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিস কক্ষে জরুরী সভা করে বন্যা মোকাবেলায় আগাম ব্যবস্থা গ্রহন করেছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানিয়া সুলতানা বক্তব্য দেন উপজেলা চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আয়েশা আক্তার, পলাশ ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কাইয়ূম, বাদাঘাট দক্ষিণ ইউপি চেয়ারম্যান এরশাদ আহমদ হৃদয়, ধনপুর ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম তালুকদার প্রমুখ।
এই সাইটের কোন লেখা কপি পেস্ট করা আইনত দন্ডনীয়
Leave a Reply