রফিকুল ইসলাম মোল্লা (রুবেল), ঝালকাঠী জেলা প্রতিনিধি :
মুক্তিযুুদ্ধের বীর সংগঠক ও মুজিব বাহিনীর অন্যতম আমির হোসেন আপাদমস্তক রাজনীতিবিদের চরিত্রই ধারণ ও লালন করেন। ভোগ-বিলাসহীন গণমুখী চরিত্রই তার জীবনের অলংকার। কর্মীবান্ধব চরিত্রই তাকে যেমন জনপ্রিয়তা দিয়েছে, তেমনি প্রখর চিন্তাশক্তি ও দূরদর্শীতে তাকে আলোকিত করেছে। একজন ধর্মপ্রাণ মুসলমান হলেও রাজনৈতিক জীবনে সম্পূর্ণ অসাম্প্রদায়িক।
১৯৪১ সালের ১৫ নভেম্বর ঝালকাঠির এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে তার জন্ম। আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ, সাবেক মন্ত্রী, ১৪ দলের মুখপাত্র ও সমন্বয়ক আলহাজ আমির হোসেন আমু জাতির জনকের আদর্শের উজ্জ্বল বার্তা বহন করেন। এ দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের জীবন্ত ইতিহাসের সাক্ষী ও নানা সংগ্রামে ছাত্রজীবন থেকে অনবদ্য নেতৃত্ব দিয়ে তিনি ইতিহাসের সন্তান, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের সহচর, মুজিবকন্যা শেখ হাসিনাকে দলের নেতৃত্বে আনা থেকে তার নেতৃত্বের প্রতিষ্ঠায় বিশ্বস্ত সহচর। জীবনের বাঁকে বাঁকে জেল নির্যাতন সয়ে, আন্দোলন সংগ্রাম বেগবানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। আমির হোসেন আমু ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনী প্রচারে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে কারাবরণ করেন। তিনি ১৯৫৯ সালে সর্বদলীয় ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ ভাষা দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক মনোনীত হন।
১৯৬৫ সালে বরিশাল বিএম কলেজ থেকে বিএ এবং ১৯৬৮ সালে বরিশাল আইন মহাবিদ্যালয় থেকে এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ১৯৫৯ থেকে ১৯৬৪ সাল পর্যন্ত বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৬২ সালের সর্বদলীয় ছাত্রসংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক হন। আমির হোসেন আমু ১৯৬৫ সালে ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার সম্পাদক নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৬৬ সালে ৬ দফা আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন এবং ঊনসত্তরের গণআন্দোলনের অন্যতম রূপকার হিসেবে প্রচারের দায়িত্ব পালন করেন। আমির হোসেন আমু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে স্নাতকোত্তর পাঠ শেষ করে আইন পেশার পাশাপাশি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে সম্পৃক্ত হন।
তিনি ১৯৭০ সালে প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে বরিশাল সদর আসন থেকে জয়লাভ করেন। ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে তিনি বরিশাল, খুলনা, পটুয়াখালী, যশোর ও ফরিদপুরসহ পাঁচ জেলায় মুজিব বাহিনীর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৭৩ সালে ঝালকাঠি ও রাজাপুর নির্বাচনী এলাকা থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭৮ থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত ছিলেন কেন্দ্রীয় যুবলীগের চেয়ারম্যান। এ ছাড়াও বিভিন্ন সময়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের খাদ্যমন্ত্রী ছিলেন আমির হোসেন আমু।
১৯৬৪ সালে তিনি জেলা ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৫ সালে আমু ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৭০ সালের প্রাদশিক পরিষদ নির্বাচনে তিনি বরিশাল সদর আসন থেকে জয়ী হন। ১৯৭২ সালে আমু যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডিয়াম সদস্য মনোনীত হন।১৯৭৮-১৯৮৬ সাল পর্যন্ত তিনি যুবলীগের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। পরে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় হন।
তিনি দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ছিলেন। বর্তমানে তিনি আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সিনিয়র সদস্য। ২০১৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সরকারের শিল্প মন্ত্রীর দায়িত্ব পান। পরের নির্বাচনেও তিনি ঝালকাঠি থেকে জয়ী হন।
এই সাইটের কোন লেখা কপি পেস্ট করা আইনত দন্ডনীয়
Leave a Reply