শরীয়তপুর প্রতিনিধি :
পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তে ২৬ ও ২৭নম্বর পিলারের ওপর বসানো হলো ৩০তম স্প্যান। এই স্প্যানটি বসানোর মধ্য দিয়ে পদ্মা সেতুর ৪হাজার ৫০০মিটার দৃশ্যমান হলো। শনিবার ১০টার দিকে স্প্যানটি পুরোপুরি খুঁটিতে বসানোর কাজ সম্পূর্ণ হয়।
পুরো পদ্মা সেতুতে মোট পিলারের সংখ্যা ৪২টি। প্রতিটি পিলারে রাখা হয়েছে ছয়টি পাইল। একটি থেকে আরেকটি পিলারের দূরত্ব ১৫০ মিটার। এই দূরত্বের লম্বা ইস্পাতের কাঠামো বা স্প্যান জোড়া দিয়েই পদ্মা সেতু নির্মিত হচ্ছে। ৪২টি পিলারের ওপর বসবে ৪১টি স্প্যান। স্প্যানগুলো চীন থেকে তৈরি করে বাংলাদেশে আনা হয়। সেতুটির দৈর্ঘ্য হবে সোয়া ছয় কিলোমিটার। এর মধ্যে সেতুটি নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করেছে সাড়ে চার কিলোমিটার। আরো স্প্যান বসবে ১১টি। এর পরে শেষ হবে পদ্মা সেতুর স্পেন বসানোর কাজ। এর আগে ৪মে তারিখে ২৯ নং স্প্যান বসানো হয়েছিল। আর (১১ এপ্রিল )) শনিবার পদ্মা সেতুতে বসানো হয় ২৮তম স্প্যান। ১৯ দিনের মাথায় বসলো যাচ্ছে ২৬তম স্প্যান। স্প্যানটি বসানোর খবরটি নিশ্চিত করেন পদ্মা সেতু প্রকল্পের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. আব্দুল কাদের মুরাদ।
পদ্মা সেতু প্রকল্পের উপ-সহকারী প্রকৌশলী হুমায়ন কবির জানান, ৩০তম স্প্যানটি বসানোর পর ৩১তম স্প্যান বর্ষা মৌসুমের আগেই খুঁটির ওপর বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে। আর ৩১তম স্প্যানটি বসে গেলে জাজিরা প্রান্তের সব কয়টি স্প্যান বসানো হয়ে যাবে। শুধু মাওয়া প্রান্তে বাকি থাকবে ১০টি স্প্যান বসানোর কাজ। খুব শিগগিরই সেটাও সম্পন্ন করা হবে।
তিনি বলেন, করোনার কারণে পদ্মা সেতুর কাজের তেমন কোনো অসুবিধা হয়নি। স্বাস্থ্য বিধি মেনে করোনার মধ্যেও পদ্মা সেতুর কাজ এগিয়ে চলছে। করোনার কারণে পুরো প্রকল্পটিই আইসোলেট রাখা হয়েছে। তাই এখানকার দেশি বিদেশি কর্মীরা অনেকটাই নিরাপদ। এখানে নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান করে কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে না। বাইরের কাউকেই এখানে এখন প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না।
এর আগে গত ৪ মে ২৯তম স্প্যানটি সেতুর মাওয়া প্রান্তে ১৯ ও ২০ নং পিলারের ওপর বসানো হয়। গত ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত মূল সেতুর কাজের অগ্রগতি হয়েছে ৮৭ ভাগ। নদী শাসনের কাজের অগ্রগতি হয়েছে ৭১ ভাগ। আর সেতুর সার্বিক কাজের অগ্রগতি হয়েছে ৭৯ ভাগ। স্প্যানগুলোর মধ্যে মাওয়া প্রান্তে ২০টির মধ্যে ১০টি, জাজিরা প্রান্তের ২০টির মধ্যে ১৮টি আর মাঝের চরে বা দু’জেলার মধ্যে বসেছে ১টি।
এদিকে পদ্মা সেতুর স্প্যান বহনকারী সর্বশেষ চালানটি চীন থেকে রওনা দিয়ে সমুদ্র পথে রয়েছে। যার মধ্যে ২টি স্প্যানের কম অংশ রয়েছে। যা আগামী ১৫ জুনের মধ্যে মাওয়ায় এসে পৌঁছানোর কথা রয়েছে। এটি এসে গেলে আর কোনো স্প্যান আসা বাকি থাকবে না।
তিনি জানান, শুক্রবার ৯টার দিকে মাওয়ার কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে স্প্যানটি ক্রেনে করে জাজিরা প্রান্তের দিকে রওনা দেয়। দুপুর ২টার দিকে জাজিরা প্রান্তের ২৬ ও ২৭ নম্বর পিলারের কাছে পৌঁছে স্প্যানটি। শনিবার স্প্যানটি খুঁটির ওপর উঠানোর কাজ শুরু করে সেতু প্রকল্পের প্রকৌশলী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। সকাল ১০টার দিকে স্প্যানটি পুরোপুরি খুঁটিতে বসানোর কাজ সম্পূর্ণ হয়।
এই সাইটের কোন লেখা কপি পেস্ট করা আইনত দন্ডনীয়
Leave a Reply