(বালুর বলি কাপাসিয়া-শ্রীপুর সড়ক, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বানার নদী থেকে! অন্যের ড্রেজার সহ বেশ কয়েকজনকে অপহরণ করে বাঘ বাদলের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে নির্বাক প্রশাসন। বাঘ বাদল সহ তার সন্ত্রাসী চক্রের হুমকি আমার বিরুদ্ধে মামলা কর, ব্যবস্থা নে, কেউ আমার কিছু করতে পারবি না, সব আমার টাকা দিয়ে কেনা! তোদেরকে মোয়ার মতো বানিয়ে আমি খেয়ে ফেলব। কাপাসিয়া থেকে নারায়ণপুর, বরমী-ত্রিমহনী ৩০ এর অধিক বালুর গদি বাঘ বাদলের সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজের কাছে জিম্মি।)
মাহবুব আলম :
শীতলক্ষার বর্ধিতাংশ বানার নদীর কোলঘেষে কাপাসিয়া ও শ্রীপুর উপজেলার বিশাল এলাকা জুড়ে কয়েক বছর ধরে চলছে বালু সন্ত্রাস। আদালতে মিথ্যা তথ্য দিয়ে কখনো বৈধ আবার কখনো অবৈধ উপায়ে উত্তোলন করা হচ্ছে শত শত কোটি টাকার বালু।
নিয়ন্ত্রণহীন ভাবে এ বালু পরিবহনে নষ্ট হচ্ছে রাস্তা ঘাট। সরকারি খাতায় জমা হয়নি কোনো রাজস্ব। স্থানিয় প্রশাসনের উদাসীনতায় বালু সন্ত্রাসীরা হারুন অর রশিদ ওরফে বাঘ বাদলের নেতৃত্বে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এলাকাবাসির অভিযোগ, কাপাসিয়া-শ্রীপুর সড়ক চলাচলের অনুপযোগী হয়ে যায় শুধুমাত্র অতিরিক্ত বালু বোঝাই করা ট্রাক চলাচলের কারণে।
সড়কের লোড ধারণের চেয়ে অনেক বেশী ওজনের বালু ভর্তি ট্রাক ও অন্যান্য পরিবহনের ফলে বড় বড় গর্ত হয়ে জনসাধারণের চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে রাস্তাটি। যদিও সম্প্রতি ব্যাপক ভাবে বর্তমান সরকারের যোগ্য স্থানিয় সংসদ সদস্য সিমিন হোসেন রিমি রাস্তার উন্নয়ন করে আধুনিকতার ছোয়া দিয়েছে।
এ দিকে মিথ্যা তথ্যদিয়ে ড্রেজিং এর নামে উচ্চ আদালত থেকে সময় বাড়িয়ে নেয়া হচ্ছে ইজারার। এই সুযোগে দীর্ঘদিন যাবৎ হাতিয়ে নিচ্ছে বিপুল পরিমান টাকা। সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব। কাপাসিয়ার বিশিষ্ট্য সমাজসেবক ব্যবসায়ী ও গণমাধ্যমকর্মী গোলাম সারোয়ার দৈনিক আমার প্রাণের বাংলাদেশকে জানান, হারুন অর রশিদ (বাঘ বাদল) (৪৯), পিতা-মৃত আঃ হাকিম, কারুজ্জামান (৩৫), পিতা- আঃ মান্নান, মোঃ শরীফ মৃধা (৩৫), পিতা-আঃ মান্নান, জাকির হোসেন (৪৮), পিতা-রব মাষ্টার, সর্ব সাং-বরমী, থানা-শ্রীপুর, জেলা-গাজীপুর, ইব্রাহিম মোল্লা (৫৫), পিতা-অজ্ঞাত, সাং-চাপাত, বাবুল (৩২), পিতা-অজ্ঞাত, সাং-রায়েদ, উভয় থানা-কাপাসিয়া, জেলা-গাজীপুর সহ অজ্ঞাতনামা ৭/৮ জনের বিরুদ্ধে আমি সম্প্রতি সংশ্লিষ্ট থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি যে, আমার পরিচিত জনৈক কোরবান আলী (৫০), পিতা- মোহাম্মদ আলী, সাং-ইসমানিরচর, থানা-গজারিয়া, জেলা-মুন্সিগঞ্জ এর একটি ড্রেজার মেশিন (যাহার নাম বাবার স্মৃতি) জনৈক আমির হোসেন ভাড়ায় নেয়।
পরবর্তীতে কোরবান আলী জানতে পারে যে, জনৈক আমির হোসেন সহ উক্ত তার সাঙ্গপাঙ্গরা ড্রেজার মেশিন এর মাধ্যমে অবৈধ ভাবে বানার নদী থেকে বালু উত্তোলন করছে। বিষয়টি কোরবান আলী জানতে পারিয়া আমার সাথে পরামর্শ করে তাহার ড্রেজারে নিয়োজিত ড্রাইভার মোঃ সৈকত (২২)কে ড্রেজার মেশিনটি আমার বাড়ীর পাশে নদীর ঘাটে রাখার জন্য বলে। সেই মতে গত ০২/০১/২০২১ ইং তারিখ দুপুর অনুমান ০২.০০ ঘটিকার সময় ড্রাইভার মোঃ সৈকত (২২) সহ ড্রেজার এর স্টাফ মোঃ লিটন (২৮)দ্বয় কোরবান আলীর ড্রেজারটি আমার বাড়ীর উত্তর পাশে বানার নদীর ঘাটে রাখে।
একই তারিখ বিকাল অনুমান ০৩.৩০ ঘটিকার সময় আমার পরিচিত জনৈক কোরবান আলী তাহার ব্যবহৃত মোবাইল নং-০১৭১৬-৮৫৭২১১ হইতে আমার ব্যবহৃত মোবাইল নং-০১৭১৬০১০०০২ এ কল করিয়া তাহার ড্রাইভার ও স্টাফকে নিয়া ড্রেজারটি কালীগঞ্জ পৌছে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করে।
অতঃপর ইং ০২/০১/২০২১ তারিখ বিকাল অনুমান ০৪.০০ ঘটিকার সময় আমি সহ আমার পরিচিত মোঃ সোহাগ ফকির (২৩), আদনান আহমেদ আক্তার (২৪) এবং ড্রেজার ড্রাইভার সৈকত, স্টাফ লিটন-গন উক্ত ড্রেজার নিয়া কালীগঞ্জ এর উদ্দেশ্যে রওনা করিয়া গত ০২/০১/২০২১ ইং তারিখ রাত্র অনুমান ০৮.৩০ ঘটিকার সময় কাপাসিয়া থানাধীন তারাগঞ্জ বাজার সংলগ্ন বানার নদীতে পৌছামাত্র বাঘ বাদলের নেতৃত্বে ৭/৮ জনের একটি সন্ত্রাসী চক্র হাতে ধারালো অস্ত্রে শস্ত্রে সজ্জিত হইয়া উক্ত ড্রেজারে উঠিয়া ড্রেজারের দরজা বন্ধ করিয়া তালা লাগিয়ে আমাদের কিলঘুষি মারিয়া জখম করে আমাদের মৃত্যুর ভয় দেখাইয়া আমাদের নিকট থাকা ০৭টি মোবাইল ও নগদ টাকা নিয়া নেয়।
বিবাদীগন আমাদের অস্ত্রের মূখে জিম্মি করে হত্যার ভয় দেখাইয়া ড্রেজারটি চালাইয়া বরমীর দিকে নিয়ে যাইতে থাকে, আমার নিকট থাকা বিশেষ কায়দায় লুকায়িত বাটুন যুক্ত মোবাইল ফোন দিয়া ৯৯৯ কল করিলে কাপাসিয়া থানা পুলিশ ইং ০৩/০১/২০২১ ইং তারিখ রাত্র অনুমান ০১.৪০ ঘটিকার সময় কাপাসিয়া থানাধীন বাঘিয়া সাকিনে বানার নদীর পাশে পুলিশ আসিলে বিবাদীগন ড্রেজারটি নদীর পাশে রাখিয়া রাতের অন্ধকারে বিভিন্ন দিকে পালাইয়া যায়। পুলিশ ড্রেজারের তালা খুলিয়া আমাদের উদ্ধার করে কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে নিয়া চিকিৎসার ব্যবস্থা করে। থানা পুলিশ ড্রেজার মেশিনটি তাহাদের হেফাজতে নেয়।
আমি হারুন অর রশিধ ওরফে বাঘ বাদল সহ সকল সন্ত্রাসী ও অপহরণকারীদের নাম ঠিকানা সংগ্রহ করিয়া এবং ঘটনার বিষয়ে স্থানীয় লোকজনদের সাথে আলোচনা করিয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করি। কিন্তু অদ্যবধি অজানা রহস্যে এখনোও মামলাটি রুজু না হওয়াতে সন্ত্রাসীদের অপতৎপরতা সীমালঙ্ঘন করছে। কাপাসিয়া থেকে নারায়নপুর, বরমী-ত্রিমহনী পর্যন্ত ৩০টির বেশী বালুর গদি রয়েছে। প্রত্যেকটি গদিতে বছরে ২/৩ বারে অত্যন্ত ৫০ কোটি ঘনফুট বালু উত্তোলন করা হয়।
এসব বালু জেলা সদরসহ বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি হয়ে থাকে। বিপুল পরিমান বালুর বিক্রয় মূল্য শত কোটি টাকার উপরে। কাপাসিয়া থেকে বরর্মীর উজান পর্যন্ত ইজারার বাইরে বিভিন্ন স্থান থেকে বালু কাটছে বালু সন্ত্রাসীরা। আর এসব কর্মকান্ডকে অবৈধভাবে সন্ত্রাস ও ভয়ের ত্রাস কায়েম করে বাঘা বাদলরা হচ্ছে আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ। কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি সময়ের দাবী। যেভাবে পুরো বানার নদী থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে-এতে করে সরকার বিপুল পরিমান রাজস্ব হারাচ্ছে। নদীর পুরো অংশ জুরে যেভাবে বালু উত্তোলন করা হয় সেইভাবে ইজারা দিলে সরকারের রাজস্ব আরো কয়েক কোটি টাকা বাড়তো।
এই সাইটের কোন লেখা কপি পেস্ট করা আইনত দন্ডনীয়
Leave a Reply